বোমাবাজির ঘটনায় আবারও উত্তপ্ত জগদ্দল। তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে এই বোমাবাজির ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় চারজন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এই ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পরেই পুলিশি অভিযান চলাকালীন একটি বিয়ে বাড়ির সামনে বোমা বিস্ফোরণ হয়। পুলিশ এলাকায় মজুত রাখা বোমা উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছিল দ্বিতীয় বিস্ফোরণটির সময়। বিস্ফোরণ স্থলের পাশেই একটি ব্যাগ থেকে তিনটি তাজা বোমা উদ্ধার হয়। এছাড়াও কাউগাছি ১ নং গ্ৰাম পঞ্চায়েতের চন্ডিতলা ব্রাক্ষণপাড়া এলাকায় একটি পরিত্যক্ত বাড়ির ছাদে কয়েকটি বাচ্চা খেলার সময় একটি প্লাষ্টিক ভর্তি ড্রাম দেখতে পায়। বাচ্চারা সেই প্লাষ্টিক ভর্তি ড্রাম বাইরে নিয়ে আসে। সেখানে সুতলির মত কিছু দেখতে পেয়ে এলাকার মানুষ পুলিশের কাছে খবর দেয়। পুলিশ এসে সেই ড্রাম থেকে ছয়টি তাজা বোমা উদ্ধার করে।
খেলাচ্ছলে বাচ্চারা বোমায় হাত দিলে বোমাগুলো ফেটে গিয়ে শিশুগদেরর প্রাণ সংশয় হতে পারত বলে আশঙ্কা এলাকাবাসীর।
পঞ্চায়েত ভোটের আগে ভাটপাড়া পৌরসভা এলাকা সহ সংলগ্ন এলাকায় এই বোমা উদ্ধারের ঘটনায় আতঙ্কিত এলাকার মানুষ। ভাটপাড়া পৌরসভার ১৭ নং ওয়ার্ডের জগদ্দলের মোমিনপাড়া এলাকায় একটি বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল। সেই বিয়েবাড়িতে খুব জোরে জোরে ডিজে বাজছিল। রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ পাড়ার কয়েকজন মিলে এই ডিজে আসতে বাজাতে বলে। এরপর ওয়াসিম আক্রাম নামে এক যুবককে ধরে গলায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। এরপর বোমা ছোড়া হয়। চারটে বোমা ছোড়া হয় বলে এলাকার মানুষের অভিযোগ। তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যেই দ্বন্দ্ব বলে অভিযোগ। বোমার আঘাতে ওয়াসিম আক্রাম সহ চারজন গুরুতর আহত হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওয়াসিম আক্রাম কে প্রথমে জগদ্দল গোলঘর হাসপাতালে পরে সেখান থেকে আর জি কর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। এর মধ্যে মহঃ আসিফ নামে আরেক যুবকের পায়ে বোমার আঘাত লাগে।
এই ঘটনায় যদিও মূল অভিযুক্তকে এখনও পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারেনি। এলাকায় ব্যাপক আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে উপস্থিত হয় ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডি সি নর্থ শ্রীহরি পান্ডে। তিনি বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা স্বীকার করে বলেন এখানে বেশ কিছু বোম উদ্ধার হয়েছে।
ভাটপাড়ায় বোমাবাজির এই ঘটনা প্রসঙ্গে সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন " কোথায় যাচ্ছে তৃণমূলের এই গোষ্ঠী বনাম ওই গোষ্ঠীর ক্ষমতা দখলের লড়াই। আসলে পশ্চিমবঙ্গেটা বোমা, বন্দুক, গুলির মজুতখানায় পরিণত হয়েছে। এবং যত বড় দুষ্কৃতী তত বড় তৃণমূলের নেতা।" তিনি আরও বলেন বোমা বন্দুকের কারবার না করলে যেমন তৃণমূলের নেতা হওয়া যাবে না তেমনি লুঠ না চালালেও বেআইনি সম্পদ করা যাবে না।
ভাটপাড়া- জগদ্দল এলাকায় বোমাবাজি নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিছুদিন আগেই বোমা বিস্ফোরণে একটি শিশুর প্রান অকালে চলে যায়। সেখানেও উদ্ধার হয় প্রচুর বোমা। তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর লড়াইয়ের জেরেই বোমাবাজির ঘটনা ঘটছে বলে এলাকার মানুষের অভিযোগ। একদিকে বিজেপি ছেড়ে আসা তৃণমূল সাংসদ অর্জুন সিং। অন্যদিকে জগদ্দলের বিধায়ক সোমনাথ শ্যাম।এই দুই গোষ্ঠীর লড়াই এখানে চরম আকার নিয়েছে। মজুত রাখা অস্ত্র উদ্ধারে পুলিশের কোনো উদ্যোগই নেই।
Comments :0