স্বাধীন প্যালেস্তাইনের পক্ষে অন্যতম সরব কণ্ঠ আহেদ তামিমিকে গ্রেপ্তার করল ইজরায়েলের সেনা। সন্ত্রাসবাদে সমর্থনের অভিযোগ তুলে রামাল্লার কাছে নাবি সালিহতে তাঁকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় সোমবার। তামিমির গ্রেপ্তূারের প্রতিবাদ ছড়িয়েছে বিশ্বময়।
ইজরায়েল সেনা অধিকৃত প্যালেস্তাইনের ওয়েস্ট ব্যাঙ্কের বাসিন্দা তামিমি বিশ্বের নজর কেড়েছিলেন মাত্র ১৪ বছরে। তখন তিনি কিশোরী। তাঁর দাদাকে ধরে নিয়ে যাওয়ার মুখে ইজরায়েলি সেনাকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ করেছিলেন আঙুল তুলে। ২০১৭’তে আরেকবার ইজরায়েলী সেনার এমন হানাদারির সময় মেরেছিলেন চড়। তাঁকে আট মাস কারারুদ্ধ করে রেখেছিল ইজরায়েল।
প্যালেস্তাইনের মুক্তির দাবিতে আন্দোলনের মুখ তামিমি। বেথেলহেমের কাছে জেরুজালেমে ওয়েস্ট ব্যাঙ্ককে রুদ্ধ করার বিশাল দেওয়াল তুলেছে ইজরায়েল। সেই দেওয়ালে আঁকা রয়েছে আহেদ তামিমির পোর্ট্রেট।
সোমবার ইজরায়েলের সেনা জানিয়েছে, ‘‘হিংসা ছড়ানো এবং সন্ত্রাসবাদে সমর্থন দেওয়ার সন্দেহে আহেদ তামিমিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সেনার টহরদারির সময় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঠানো হয়েছে সুরক্ষা বাহিনীর কাছে।’’
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নে ইজরায়েলের সুরক্ষা বাহিনী একটি ইনস্টাগ্রাম পোস্ট হাতে ধরিয়েছে। তাতে হিব্রু এবং আরবিতে ইজরায়েলে হত্যাকাণ্ডের ডাক দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই পোস্ট তামিমির কিনা, সে প্রশ্নে নিশ্চিত নয় এমনকি মার্কিন-ইজরায়েল আগ্রাসনের সমর্থক পশ্চিমী সংবাদমাধ্যমও।
তামিমির মা নরিমান আল তামিমি সরাসরি এই পোস্টের সঙ্গে মেয়ের সম্পর্ক অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘আহেদের নামে এমন গুচ্ছ গুচ্ছ অ্যাকাউন্ট বা পেজ সোশাল মিডিয়ায় রয়েছে। যেগুলির সঙ্গে আহেদের কোনও যোগাযোগ নেই।’’
আহেদ তামিমির বাবা বাসেম আল তামিমিকে ২০ অক্টোবর ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক থেকেই তুলে নিয়ে গিয়েছিল ইজরায়েলের সেনা। আজও তাঁর কোনও খোঁজ নেই বলে জানিয়েছেন নরিমান আল তামিমি।
ইজরায়েলের সেনা প্যালেস্তাইনের যে কোনও অঞ্চলেই নিজেদের খুশিমতো এমন টহলদারি করে, তুলে নিয়ে যায় বাসিন্দাদের। আন্তর্জাতিক বিধি বা রাষ্ট্রসঙ্ঘের কোনও বোঝাপড়া না মেনে চলে এই দখলদারি। তার বিরুদ্ধে সরব সক্রিয় যে কোনও অংশকে সন্ত্রাসবাদী বলে দেগেও দেওয়া হয়। ৭ অক্টোবর গাজা ভূখণ্ড থেকে হামাসের রকেট এবং প্যারাসুটে হানার ঘটনাকে ব্যবহার করা হচ্ছে মাত্র। ৭৫ বছর ধরেই ইজরায়েল এমন দখলদারি চালিয়ে ৯ লক্ষের বেশি প্যালেস্তানীয়কে উচ্ছেদ করেছে। প্রতিবাদীদের তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, হত্যা করা হয়েছে।
বিশ্বময় এই দখলদারি আর প্যালেস্তাইনের জনগণের নিজস্ব রাষ্ট্রের স্বীকৃতির দাবিতে জনমত জোরালো হয়েছে।
Comments :0