করমণ্ডল এক্সপ্রেসকে এগনোর সঙ্কেত দেওয়া হয়েছিল। তারপর বন্ধ করা হয় সিগন্যাল। ততক্ষণে লুপ লাইনে ঢুকে গিয়েছে দ্রুতগামী ট্রেন। কিছু পরেই সংঘর্ষ হয় ওই লাইনে থাকা মালগাড়ির সঙ্গে।
রেলের অভ্যন্তরীণ অনুসন্ধান কমিটির প্রাথমিক রিপোর্টে সিগন্যালিং ব্যবস্থার এই গলদকেই দায়ী করা হয়েছে। একটি ইংরেজি সংবাদমাধ্যম সেই রিপোর্টের উল্লেখ করে জানাচ্ছে যে কেন সিগন্যাল দেওয়া হলো, দ্রুত তুলে নেওয়ার সময় সুরক্ষার কোনও ব্যবস্থা হলো না, প্রাথমিক অনুসন্ধানে তা স্পষ্ট নয়।
শনিবার সকাল থেকেই সিগন্যালিং ব্যবস্থার গোলযোগের অনুমান বিশেষজ্ঞ মহলে ছিল। ‘গণশক্তি ডিজিটাল’ তা উল্লেখও করে। এবার প্রাথমিক অনুসন্ধানে সেই অনুমান জোরালো হয়েছে।
কুড়ি বছরের সবচেয়ে ভঙয়ঙ্কর এই দুর্ঘটনায় ফের জোরালো হয়েছে যাত্রী সুরক্ষা সংক্রান্ত প্রশ্নও। রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে দেখা যাচ্ছে ‘বন্দে ভারত’ এক্সপ্রেসের প্রতিটি রুটের উদ্বোধন অনুষ্ঠানের নজরকাড়া প্রচারে ব্যস্ত থাকতে। কিন্তু ভারতীয় রেলে অন্যতম বড় বিষয় যাত্রী সুরক্ষা এবং যাত্রী পরিষেবা নিয়ে প্রশ্ন বেড়েছে গত কয়েক বছরে।
গত ডিসেম্বরেই সংসদের পরিবহণ, পর্যটন এবং সংস্কৃতি বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটি রেল বোর্ডের মনোভাবে সরাসরি খেদ জানায়। বলা হয়, কমিশন অব রেলওয়ে সেফটির যাত্রী সুরক্ষা সংক্রান্ত রিপোর্টকে গুরুত্বই দিচ্ছে না রেল বোর্ড। আরও বলা হয়, ‘‘ পণ্য পরিবহণে নির্দিষ্ট ‘ডেডিকেটেড ফ্রেট করিডোর’ এবং মালগাড়ির চলাচল সম্পর্কে সুরক্ষা বিধি তৈরি করেনি রেল।’’
স্ট্যান্ডিং কমিটি উদ্বেগের সঙ্গে জানিয়েছিল যে পণ্য পরিবহণের বিধির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে যাত্রী সরক্ষার প্রশ্নও। কারণ, যাত্রীবাহী ট্রেন আর পণ্যবাহী মাশুল করিডোরের লাইনের প্রায় আশি ভাগ সমান্তরালে রয়েছে। একটি লাইনে গোলমাল হলে প্রভাব পড়বে পাশের লাইনে।
করমণ্ডল দুর্ঘটনার প্রাথমিক অনুসন্ধান রিপোর্টে বলা হয়েছে যে মালগাড়ির সঙ্গে সংঘর্ষের পর পাশে লাইনে ছিটকে পড়ে কামরা। সেই লাইন দিয়েই আসছিল বেঙ্গালুরু থেকে কলকাতাগামী যশোবন্তপুর-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। পরের সংঘাতে উলটে পড়ে কামরা।
রেল জানাচ্ছে শুক্রবার রাতের ঘটনায় নিহত অন্তত ২৬১, আহত ৯০০ ছাড়িয়েছে।
Comments :0