সুরাট আদালতের রায়ের পরের দিনই লোকসভা থেকে বহিষ্কার করা হলো রাহুল গান্ধীকে। শুক্রবার লোকসভার সচিবালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে কেরালার কংগ্রেস সাংসদের সাংসদ পদ খারিজ করেছেন লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লা। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের সময় রাহুলের মন্তব্যের জেরে তাঁকে দু’বছরের কারাবাসের সাজা দিয়েছে সুরাট আদালত।
শুক্রবার সকাল থেকেই রাহুল গান্ধীর বিষয় নিয়ে দফায় দফায় উত্তাল হয়েছে সংসদ। রাহুল গান্ধীর সাথে অবিচার হচ্ছে এই দাবি তুলে লোকসভার ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখায় কংগ্রেস সহ বিরোধী দলের সাংসদরা।
লোকসভার সচিবালয় থেকে যেই বিঞ্জপ্তি জারি করা হয়েছে তাতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ভারতীয় সংবিধানের ১০২(১) ই অনুচ্ছেদ এবং জনপ্রতিনিধিত্ব আইন (১৯৫১)-র ৮ নম্বর ধারা অনুযায়ী রাহুলের সাংসদ পদ খারিজ করা হয়েছে।
১৯৫১ সালের জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের দুটি ধারার ভিত্তিতেই যদিও রাহুলের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ওই আইনের ৮(৩) ধারায় বলা রয়েছে, ফৌজদারি অপরাধে দু’বছরের বেশি কারাদণ্ডপ্রাপ্ত কোনও ব্যক্তি সাজা ঘোষণার দিন থেকেই তিনি আর জনপ্রতিনিধি থাকতে পারেন না। কিন্তু ওই আইনেরই ৮(৪) ধারায় আবার বলা হয়েছে, সাজা ঘোষণার সময় যদি কেউ জনপ্রতিনিধি থাকেন, তা হলে পরবর্তী তিন মাস বা উচ্চতর আদালতে সাজা পুনর্বিবেচনার আবেদনের নিষ্পত্তি না-হওয়া পর্যন্ত তাঁর সদস্যপদ খারিজ হবে না।
২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে কর্নাটকে প্রচারে গিয়ে রাহুল প্রশ্ন তুলেছিলেন, ‘‘সব চোরেদের পদবি ‘মোদী’ হয় কেন?’’ আইপিএল কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত ললিত মোদী, ব্যাঙ্ক-ঋণ মামলায় ‘পলাতক’ নীরব মোদীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর তুলনা টেনেছিলেন তিনি। ওই ঘটনায় রাহুলের বিরুদ্ধে ‘পদবি অবমাননার’ অভিযোগে অপরাধমূলক মানহানির মামলা করেছিলেন গুজরাটের বিজেপি নেতা পূর্ণেশ মোদী।
লোকসভার বিজ্ঞপ্তির পর সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেছেন, ‘‘সত্যি বলার জন্য শাস্তি পেলেন রাহুল গান্ধী।’’ তিনি আরও জানিয়েছেন যে, এদিন বিকেল পাঁচটায় দলের বৈঠক ডাকা হয়েছে।
কংগ্রেস সূত্রে খবর তারা আইনি লড়াই লড়বে। এরছাড়া সংসদে আদানি ইসুতে লড়াই চালিয়ে যাবে কংগ্রেস।
সিপিআই(এম)’র সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি টুইটারে লিখেছেন, ‘‘ইডি এবং সিবিআইকে বিরোধীদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা চলছেই। এবার নতুন আক্রমণ মানহানির মামলার রাস্তায়।
অপরাধমূলক মানহানির মামলা দায়ের করে বিরোধী জনপ্রতিনিধিদের সদস্য পদ খারিজ করার কৌশল নেওয়া হয়েছে। রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে সেই কৌশল প্রয়োগ করা হলো। বিজেপি’র এই ভূমিকা অত্যন্ত নিন্দনীয়।’’
Comments :0