সিকিমে হড়পা বানে নিখোঁজ একশোর বেশি। অন্তত ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, জানিয়েছে সরকারি তথ্য। কেবল সিংটাম নয়, দিকচু, রঙপোর মতো ছোটো ছোটো শহুরে জনপদ ভেসে গিয়েছে। বিপদ বেড়েছে পানীয় জল সরবরাহের লাইন পুরপুরি ভেঙে পড়ায়।
সিকিমের বন্যায় আটকে পড়া পর্যটকের সংখ্যাই ৩ হাজারের কাছাকাছি। বিপন্ন বাসিন্দাদের সংখ্যা এর কয়েকগুন। সিকিম সরকারের প্রাথমিক হিসেব অনুযায়ী অন্তত ২০ হাজার মানুষ ঘরবাড়ি হারিয়েছেন বন্যায়। চুঙথাঙে তিস্তা স্টেজ থ্রি বাঁধের টানেলে ১৪ জন শ্রমিক আটকে পড়েছেন বলে খবর দিয়েছে সংবাদসংস্থা।
মঙ্গলবার রাতে তিস্তার চুঙথাম বাঁধ থেকে জল ছাড়ায় পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়েছে। সিকিম সরকার জানিয়েছে চুঙথাম বাঁধ আসলে ভেসে গিয়েছে। ভেসে গিয়েছে একের পর এক সেতু। মিনশিথাঙে দু’টি, জেমায় একটি এবং রিৎচু সেতু ভেঙে পড়েছে জলের ধাক্কায়।
সিকিমের সঙ্গে সংযোগের রাস্তা ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক ভেঙে পড়ায় ত্রাণ এবং উদ্ডধারের কাজে সমস্যা হচ্ছে। বিপর্যয় মোকাবিলা বিজনীর জওয়ানদের শিলিগুড়ি থেকে পাঠানো কঠিন হয়ে পড়েছে। তার মধ্যেই বাহিনীর জওয়ানরা ২৫ জনকে উদ্ধার করেছে বলে জানিয়েছে সিকিম সরকার।
সিকিম সরকার জানিয়েছে যে পানীয় জল সরবরাহের পাইপলাইন পুরোপুরি বিপর্যস্ত। বন্যার পর পানীয় জলের সঙ্কটের কারণে দ্রুত রোগ ছড়াতে থাকে। বিকল্প ব্যবস্থার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। গ্যাঙটকে চারটি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। সিঙটাম স্কুল, বিহারী ভবন, নেপালী ভবন এবং সিকিম সুপ্রিম ভবনে ত্রাণ শিবির চলছে। সব মিলিয়ে ১৮টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী প্রেম সিং তামাঙ জরুরি বার্তায় বাইরে থেকে এখন সিকিমে না আসার আবেদন জানিয়েছেন। রাজ্যের মুখ্যসচিব ভিবি পথা সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, ‘‘মেঘভাঙা বৃষ্টির কারণে লোনাক হ্রদের জল চারদিক ভাসিয়ে তিস্তায় পড়ে। তিস্তা অববাহিকার দু’ধারে জলস্তর দ্রুত বাড়তে থাকে। চুঙথাঙে পরিস্থিতি সবচেয়ে ভয়াবহ হয়েছে। এখানে তিস্তা স্টেজ থ্রি বাঁধে ভাঙন ধরেছে।’’
মুখ্যসচিবই জানিয়েছেন নিখোঁজের সংখ্যা অন্তত ১০৪, তার মধ্যে রয়েছে ২২ সেনাও।
সিকিমে আকস্মিক বন্যার পরিপ্রেক্ষিতে ভারতীয় সেনাবাহিনী কিছু হেল্পলাইন নম্বরও জারি করেছে।
পূর্ব সিকিমের জন্য আর্মি হেল্পলাইন - 8756991895
উত্তর সিকিমের জন্য সেনা হেল্পলাইন নম্বর - 8750887741
নিখোঁজ ব্যক্তিদের জন্য সেনাবাহিনীর হেল্পলাইন - 7588302011
Comments :0