আদানির প্রকল্পে বিপুল বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত জানালো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আমেরিকার আন্তর্জাতিক উন্নয়ন লগ্নি নিগম বা ডিএফসি ৫৫৩ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে শ্রীলঙ্কায় আদানির এই যৌথ অংশীদারিত্বের প্রকল্পে।
টাকার অঙ্কে ৬ হাজার ৪৭৫ কোটি টাকারও বেশি এই প্রকল্পে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত ঘিরে মোদী-বাইডেন সম্পর্ক আলোচনায় এসেছে পুরোমাত্রায়। কলম্বো বন্দরে ‘ডিপওয়াটার শিপিং কন্টেনার টার্মিনাল’ প্রকল্পে আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে যৌথ অংশীদারিত্ব রয়েছে কলম্বো ওয়েস্ট ইন্টারন্যাশনাল টার্মিনাল প্রাইভেট লিমিটেড। আদানি পোর্টস কনসর্টিয়ামের অংশ হয়ে বিনিয়োগ করেছে গভীর সমুদ্র বন্দর প্রকল্পে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে, শ্রীলঙ্কায় চীন বিভিন্ন প্রকল্পে সহায়তা করছে। শ্রীলঙ্কায় অর্থনৈতিক টালমাটালের সময় চীনের সংযোগকে দায়ী করতে চেষ্টা করেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তবে এই দ্বীপরাষ্ট্রে চীনের প্রভাব কমানো যায়নি। আমেরিকা শ্রীলঙ্কায় বিনিয়োগে নামার চেষ্টা করছিল বেশ কিছুদিন ধরে।
আদানির প্রকল্পে সরাসরি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোনও সরকারি সংস্থা বিনিয়োগ করল এই প্রথম। হিন্ডেনবার্গ রিপোর্ট প্রকাশের পর থেকে বাজারে আদানির অবস্থা ভরসাজনক নয়। নরেন্দ্র মোদীর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ এই ব্যবসায়ীকে সরকারি প্রকল্প হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে ভারতে। কিন্তু তারপরও হিন্ডেনবার্গ রিপোর্ট প্রকাশের পর দ্রুত নামতে থাকে আদানির শেয়ারের দর।
ডিএফসি’র সিদ্ধান্ত সামনে আসার পরই আদানি গোষ্ঠীর প্রধান গৌতম আদানি সংবাদমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। আদানি বলেছেন, ‘‘অর্থনৈতিক বৃদ্ধি, কর্মসংস্থানে উল্লেখযোগ্য সাফল্য আনবে এই প্রকল্প।’’
আদানি গোষ্ঠী বিদেশে বিভিন্ন প্রকল্পের বরাত পেয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর একাধিক বিদেশ সফরের পরপরই। শ্রীলঙ্কা, অস্ট্রেলিয়া, বাংলাদেশে এমন একাধিক প্রকল্পের নজির তুলে লোকসভায় সরব হয়েছিলেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। তার কিছু পরই মানহহানি মামলার রায়ের জেরে তাঁর সাংসদ পদ চলে যাব। সুপ্রিম কোর্ট নিম্ন আদালতের রায়কে স্থগিত করায় যদিও তিনি আপাতত সাংসদ পদ ফিরে পেয়েছেন। তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মিত্র কেন আদানিকে নিয়ে প্রশ্ন করেছেন সরাসরি সেই অভিযোগের ভিত্তিতে বিচার বিবেচনা চলছে লোকসভার এথিক্স কমিটিতে।
রাষ্ট্রসঙ্ঘে মার্কিন অনুগামী ভূমিকা নিয়ে গাজায় যুদ্ধবিরতির পক্ষে ভোট দেয়নি ভারত। একাংশের অভিমত, ভারতের এই অনুচরবৃত্তির নীতিতে আসলে লাভবান হচ্ছে আদানি গোষ্ঠী।
কলম্বো ভারত মহাসাগরে ব্যস্ততম বন্দর। কিন্তু তার আয়তন এবং কর্মক্ষমতা বাড়ানো প্রয়োজন। নতুন টার্মিনাল করার উদ্যোগ সেই লক্ষ্যেই। ডিএফসি’র সিইও স্কট নাথান বলেছেন, ‘‘বেসরকারি ক্ষেত্রে বিনিয়োগে সহায়তা করার লক্ষ্য থেকেই এই সিদ্ধান্ত। সহযোগীদের কৌশলগত অবস্থানকে জোরদার করাও আমাদের লক্ষ্য।’’
নিজস্ব স্ট্র্যাটেজিক কৌশল অনুযায়ী ভারত মহাসাগরে নৌসেনার নজরদারিও বাড়াতে তৎপর আমেরিকা।
Comments :0