Panchayat Election Nomination

প্রস্তুতির অভাব প্রশাসনের, তৈরি বামপন্থীরা

রাজ্য জেলা

Panchayat Election Nomination


কোথাও বলা হলো শনিবার থেকে দেওয়া হবে মনোনয়নের ফর্ম। কোথাও জানানো হলো সোমবারের আগে দেওয়াই যাবে না। আরও বহু জায়গায় বেলা এগারোটার বহু পরে শুরু হলো মনোনয়ন ফর্ম দেওয়ার কাজ। 
আশঙ্কা মিলিয়েই নির্বাচনের সূচিত ঘোষণার চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে মনোনয়নের ফর্ম দেওয়ার কাজ শুরু হলো না রাজ্যের বহু জায়গায়। মনোনয়ন তোলা এবং জমার মাঝে সাত দিন, তার মধ্যে দু’দিন ছুটি। ফলে পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী হতে গিয়ে নাজেহাল হওয়ার দৃশ্য মিলেছে রাজ্যের প্রায় সর্বত্র। 


প্রথম দিনেই যদিও দেখা গিয়েছে বামপন্থীরা লড়াইয়ে তৈরি। সিপিআই (এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেছিলেন প্রার্থী তালিকা তৈরি রাখবে বামপন্থীরা। যাতে নির্বাচন ঘোষণার পর থেকেই মনোনয়ন শুরু হয়। সেভাবেই রাজ্যের সর্বত্র প্রার্থীদের নিয়ে মনোনয়ন তুলতে যান বামপন্থীরা।  
মনোনয়ন জমার জন্য যথেষ্ট সময় দেওয়া হয়নি বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করছে হাইকোর্টও। শুক্রবার এ সংক্রান্ত এক মামলায় এই অভিমত জানিয়েছে প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ। রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে ১২ জুনের মধ্যে হলফনামা দিয়ে বক্তব্য জানানোর নির্দেশ দিয়েছে। ৮ জুন, বৃহস্পতিবার সাংবাদিক সম্মেলন করে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। ৯ জুন থেকে ১৫ জুন মনোনয়ন জমা নেওয়ার সময়সীমা ঘোষণা করা হয়। মাঝে রবিবার, আরেকদিন ছুটি। ৮ জুলাই হবে পঞ্চায়েত নির্বাচন। কলকাতা থেকে ঘোষণা করার চব্বিশ ঘন্টারও কম সময়ের মধ্যে মনোনয়ন জমা নেওয়ার ব্যবস্থা হয়নি রাজ্যের বহু এলাকায়। বহু জায়গায় দেরি হয়ে মনোনয়ন ফর্ম দিতে। 


আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহারের প্রায় সর্বত্র ধরা পড়েছে অব্যবস্থা। এদিন কোচবিহার জেলার ৫টি ব্লকে সিপিআই(এম) প্রার্থীরা মনোনয়ন পত্রের ফর্ম তুলতেই পারেননি। ব্লকের রিটার্নিং অফিসারের অফিস তৈরি ছিল না। বাকি ৭টি ব্লকে ফর্ম দেওয়ার কাজ শুরু হল বেলা ১ টার পর। দেরিতে ফর্ম দেওয়া হলেও বিকেল ৩টের পর মনোনয়ন পত্রের ফর্ম দেওয়া বন্ধ করে দেন নির্বাচনের সঙ্গে যুক্ত কর্মীরা! জেলার হলদিবাড়ি ব্লকে সিপিআই(এম) প্রার্থীরা মনোনয়ন পত্রের ফর্ম তুলতে গেলে সেখানকার রিটার্নিং অফিসার বলেন, সোমবার থেকে মনোনয়ন পত্র দেওয়া হবে। 


কোচবিহারের মাথাভাঙা-১ ব্লকের বিডিও অফিসে সিপিআই(এম) প্রার্থীদের নিয়ে মনোনয়ন পত্রের ফর্ম তুলতে গিয়েছিলেন পার্টির জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য প্রসেনজিত সরকার। তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয় কাগজপত্র তৈরি নেই। শনিবার দেওয়া হবে মনোনয়ন পত্রের ফর্ম! ওই অফিসের এক কর্মী বলেন, ‘‘২৬ বছরের চাকরি জীবনে ভোট নিয়ে এত ছেলেখেলা আগে দেখিনি।"
এদিন গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট ৭টি আসনে মনোনয়ন পত্র জমা পড়েছে। ৭টি মনোনয়ন পত্রই মেখলিগঞ্জ ব্লকের। এর মধ্যে সিপিআই(এম) ৫ টি আসনে, তৃণমূল একটি আসনে ও নির্দল একটি আসনে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছে।


জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়িতে মনোনয়ন পত্র জমা দিলেন সিপিআই(এম)’র পাঁচ প্রার্থী। বিজেপি এবং তৃণমূল কংগ্রেস এখনো মনোনয়ন দাখিল করতে পারেনি ধূপগুড়িতে। ধূপগুড়ি বিডিও অফিসে গাদং ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত ও একটি পঞ্চায়েত সমিতি এবং মাগুরমারি ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতে একটি পঞ্চায়েতে প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিল সিপিআই(এম)। কড়া নিরাপত্তার মধ্যেই এই মনোনয়ন প্রক্রিয়া অনুষ্ঠিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ধূপগুড়ির বিডিও তথা নির্বাচনী আধিকারিক শঙ্খদীপ দাস।

জলপাইগুড়ির বিভিন্ন ব্লকে নমিনেশন পেপার তুলতে গিয়ে ফিরে এলেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মীরা। ফর্ম ছাপা না হওয়ায় দেওয়া হয়নি মনোনয়ন পত্র। জেলাস্তরে আদর্শ নির্বাচনী আচরণবিধি এসে পৌঁছয়নি। নির্বাচন সংক্রান্ত ফর্ম দেওয়া সরকারি নির্দেশিকা পৌঁছয়নি।
জলপাইগুড়ি পঞ্চায়েত যৌথ কর্মী ইউনিয়নের জেলা সম্পাদক অরিন্দম চক্রবর্তী ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, নির্বাচন প্রক্রিয়ার শুরুতেই চরম অব্যবস্থার মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়েছে কর্মচারীদের। কোনরকম প্রশিক্ষণ, কর্ম বিভাজন ছাড়াই হঠাৎ করে নির্বাচন ঘোষণা করা হয়েছে।


দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুর ব্লকেও মনোনয়ন জমা দিয়েছেন বামফ্রন্ট প্রার্থীরা। লাল ঝান্ডা নিয়ে  বামপন্থী কর্মীদের উৎসাহ ছিল চোখের পড়ার মতো।


 

Comments :0

Login to leave a comment