বিশ্বজিৎ দাস: ইম্ফল
আশ্রয় শিবিরগুলির দুর্বিষহ অবস্থা। স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকার ন্যূনতম বন্দোবস্ত পর্যন্ত নেই। পর্যাপ্ত খাবারদাবার সরবরাহ হচ্ছে না, শিশুদের জন্য বেবিফুড তো দূর অস্ত! প্রশাসনের উপস্থিতি সামান্যই। সামাজিক সংগঠনগুলি পাশে না থাকলে ঘরছাড়া মানুষগুলির অবস্থা আরও কঠিন, খারাপ হতো। শুক্রবার বিষ্ণুপুর জেলার একটি এবং চুরাচাঁদপুর জেলার দুটি আশ্রয় শিবির ঘুরে এমন ভয়াবহ অভিজ্ঞতাই হয়েছে সিপিআই(এম) প্রতিনিধিদলের।
এদিন সকালে সিপিআই(এম)-র সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির নেতৃত্বে চার সদস্যের প্রতিনিধিদল এসে পৌঁছায় ইম্ফলে। দলে রয়েছেন পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির তিন সদস্য; জীতেন চৌধুরী, সুপ্রকাশ তালুকদার এবং দেবলীনা হেমব্রম। বৃহস্পতিবারই ইয়েচুরি দিল্লিতে জানিয়েছিলেন যে, ‘‘আমরা ওখানে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের প্রতি সংহতি জানাবো। তাঁদেরকে বলবো যে, গোটা দেশ তাঁদের পাশে আছে। আমরা একই পরিবারভুক্ত।’’ এদিন ইম্ফলে নেমে তিনি সেকথাই স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, ‘‘তিন মাসেরও বেশি সময় জাতি সংঘর্ষ চলছে মণিপুরে। বহু প্রাণহানি হয়েছে, ঘরছাড়াও এখনও অনেক। তাঁরা রয়েছেন আশ্রয় শিবিরে।’’
ইয়েচুরি বলেন, ‘‘ডবল ইঞ্জিন সরকারের ব্যর্থতা প্রতি পদে স্পষ্ট মণিপুরে।’’ এদিন তাঁরা প্রথমে যান বিষ্ণুপুরের মইরাঙের এক আশ্রয় শিবিরে। শিবিরের পরিস্থিতি অন্তত মানুষের বসবাসের যোগ্য নয়। বর্ষাকাল, চারিদিকে জল জমে রয়েছে। একটা স্কুল বাড়ি, ভেতরে স্যাঁতস্যাঁতে অবস্থা। সেখানেই বাচ্চা-বুড়ো সবাই গাদাগাদি করে বাস করছেন। জন্ম হচ্ছে নবপ্রাণেরও। তাদের জন্য ন্যূনতম পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ব্যবস্থা নেই। রাতে শোওয়ার মতো পর্যাপ্ত বালিশ-বিছানা-মশারি নেই। এই শিবিরে রয়েছে বহু ছেলেমেয়ে। তাদের পড়াশোনা শিকেয় উঠেছে। এই শিবিরে বাস করছেন মূলত ঘরছাড়া মেইতেই সম্প্রদায়ের মানুষজন। ওখান থেকে চুরাচাঁদপুরের দুটি শিবিরে যান প্রতিনিধিরা।
Comments :0