MANIPUR VIOLENCE

মণিপুরে মহিলা সমিতির প্রতিনিধিদল

জাতীয়

MANIPUR COMMUNAL VIOLENCE CPIM LEFT FRONT BENGALI NEWS INDIA ALLIANCE CONGRESS BJP DELHI RSS NARENDRA MODI

 গোষ্ঠী সংঘর্ষে আক্রান্তদের পাশে দাঁড়াতে মণিপুরে গিয়েছে সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির একটি প্রতিনিধি দল। বৃহস্পতিবার ছিল তাঁদের সফরের দ্বিতীয় দিন। এই প্রতিনিধি দলে রয়েছেন বৃন্দা কারাত, মারিয়ম ধাওয়ালে এবং পিকে শ্রীমতি। বৃহস্পতিবার তাঁরা গোষ্ঠী সংঘর্ষের অন্যতম ভরকেন্দ্র চূড়াচাঁদপুর বা লামকায় যান। 

সেখানকার একাধিক ত্রাণ শিবিরে দীর্ঘক্ষণ সময় কাটান তাঁরা। গোষ্ঠী সংঘর্ষের আগুনে সর্বস্ব খোয়ানো মানুষের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করেন তাঁরা। প্রতিনিধি দলকে কাছে পেয়ে কেন্দ্র এবং রাজ্যের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেন মণিপুরের সাধারণ মানুষ। 

চূড়াচাঁদপুরের একটি ত্রাণ শিবিরেই আশ্রয় নিয়েছেন মণিপুর ভাইরাল ভিডিও কান্ডের এক নির্যাতিতা। তাঁকে রক্ষা করতে গিয়ে উন্মত্ত জনতার হাতে খুন হন তাঁর ১৫ বছরের ভাই। পুলিশের সামনেই তাঁর বাবাকেও কুপিয়ে খুন করে দুষ্কৃতিরা। এদিন নির্যাতিতার মা মহিলা নেতৃত্বকে সামনে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি কাতর অনুরোধ করে জানান, ‘‘আমার স্বামী এবং সন্তানের মৃতদেহটুকু অন্তত আমাকে দেখতে দেওয়া হোক।’’

চূড়াচাঁদপুরে যাওয়ার আগে কাংপোকি জেলার ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নেওয়া সাধারণ মানুষের সঙ্গেও কথা বলেন মহিলা নেতৃবৃন্দ। এই ত্রাণ শিবিরেই রয়েছেন যোশুয়া। তাঁর চোখের সামনেই তাঁর স্ত্রী, ৭ বছরের সন্তান এবং এক বন্ধুকে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা করে উন্মত্ত জনতা। এছাড়াও গাড়ি পরিষ্কার করার সময় ২ মহিলা শ্রমিক উন্মত্ত জনতার হাতে নিগৃহীত হয়। পরে তাঁদের খুন করা হয়। সেই দুই মহিলার পরিবারের সঙ্গেও দেখা করেন মহিলা নেতৃবৃন্দ। 

এর পাশাপাশি কাংপোকি’র ত্রাণ শিবিরে এক ১৫ বছর বয়সী নাবালিকা আশ্রয় নিয়েছে। ধর্ষণের পরে তাঁকে একটি পাহাড় থেকে ঠেলে ফেলে দেওয়া হয়। যদিও প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন তিনি। তাঁর সঙ্গেও দেখা করেন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। এছাড়া সংঘর্ষে নিজের একমাত্র ছেলেকে হারানো এক অন্ধ পিতার সঙ্গেও কথা বলেন মহিলা নেতৃবৃন্দ।

প্রসঙ্গত, মে মাসের ঘটনার ভিডিওটি জুলাই মাসে ভাইরাল হয়। সেই ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, নগ্ন করে দুই মহিলাকে হাঁটাচ্ছে উত্তেজিত জনতা। তারপর থেকে মণিপুর হিংসার নিন্দায় সরব হয়েছে গোটা দেশ। এই নারকীয় ঘটনাকে সামনে রেখে বিরোধী রাজনৈতিক বিন্যাস ‘ইন্ডিয়া’র প্রতিনিধিরা সংসদে অনাস্থা প্রস্তাব আনেন। তাঁরা এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করেন।  ৩ দিনের অনাস্থা প্রস্তাবের মধ্যে ২দিন সংসদে গরহাজির ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তৃতীয় দিনে সংসদে ভাষণ দিলেও সেখানে মণিপুর নিয়ে বিশেষ কোনও কথা ছিল না। 

এখনও অবধি মণিপুর সংঘর্ষে সরকারি ভাবে প্রাণ হারিয়েছেন ২০০’র কাছে মানুষ। বেসরকারি মতে সংখ্যাটা অনেকটাই বেশি। ১০ হাজারের কাছে বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। ঘরছাড়া হয়ে ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন ৬০ হাজারের বেশি মানুষ। বিরোধীদের তরফে মণিপুরের বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের পদত্যাগের দাবি জানানো হলেও এখনও অবধি পদ আঁকড়ে বসে রয়েছেন তিনি। 

Comments :0

Login to leave a comment