বৃহস্পতিবার গ্রুপ সি'র শেষ দুটি ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে পোল্যান্ড- আর্জেন্টিনা এবং সৌদি আরব- মেক্সিকো। প্রথম ম্যাচটিতে ২-০ গোলে জয় পেল আর্জেন্টিনা এবং ২-১ ব্যাবধানে সৌদি আরবকে পরাজিত করল মেক্সিকো।
এদিন দুটি ম্যাচের প্রথমার্ধ গোলশূন্য অবস্থায় শেষ হয়। আর্জেন্টিনাকে ৪৬ মিনিটের মাথায় এগিয়ে দেন অ্যালিস্টার। ৬৭ মিনিটের মাথায় নীল সাদা জার্সির হয়ে ব্যাবধান বাড়ান আলভারেজ।
অপরদিকে মেক্সিকোকে ৪৭ মিনিটের মাথায় এগিয়ে দেন হেনরি মার্টিন। এর ঠিক পাঁচ মিনিট পরে মেক্সিকোকে ২-০ গোলে এগিয়ে যেতে সাহায্য করেন মাঝমাঠের খেলোয়াড় লুই চ্যাভেজ। অতিরিক্ত সময়ের পাঁচ মিনিটে সৌদি আরবের হয়ে একমাত্র গোলটি করেন সালেম আল-দওসারি।
এদিন আর্জেন্টিনার কোচ লিওনেল স্কালোনি ৪-২-৩-১ ছকে দল সাজান। তিনকাঠির নীচে ছিলেন মার্টিনেজ। রক্ষণভাগের দায়িত্বে ছিলেন মোলিনা, রোমেরো, ওটামেন্ডি এবং অ্যাকুইউনা। মাঝমাঠ সামলাচ্ছিলেন ডি পল এবং ফারনান্দেজ। ফরোয়ার্ড লাইনে ছিলেন ডি মারিয়া, মেসি, অ্যালিস্টার এবং আলভারেজ। অন্যদিকে পোল্যান্ড কোচ মিকনিউকিচ ৪-৪-২ ফর্মেশনে দল সাজান। রক্ষণভাগের দায়িত্বে ছিলেন বেরেজিয়ানস্কি, কিউইয়র, গ্লিক এবগ ক্যাস। মাঝমাঠে ছিলেন ফ্র্যাঙ্কোওস্কি, কিউচোইয়াক, বাইলিক, জেইলনস্কি এবং ফরোয়ার্ড লাইনে ছিলেন লেভানোদোস্কি ও সুইদারস্কি।
ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণের গতি বাড়াতে থাকেন মেসিরা। ম্যাচের ১০ মিনিটের মাথায়, মেসির জোরালো শট পোলিশ ডিফেন্ডারদের দ্বারা প্রতিহত হয় এবং স্কালোনি ব্রিগেড একটি কর্নার পায়। যদিও এই কর্নার থেকে ফসল তুলতে পারেনি আর্জেন্টিনা। তবে পোল্যান্ড সুযোগ পেলেই পাল্টা আক্রমণে উঠে আসছিল। এমনকি বল পজিশন বাড়িয়ে মাঝমাঠের দখল নেওয়ারও চেষ্টা জারি ছিল।
ম্যাচের ২৮ মিনিটে প্রায় গোল করার মতো জায়গায় পৌঁছে গেছিল আর্জেন্টিনা। আলভারেজের শট টপ বক্স থেকে ক্লিয়ার করেন জেইলনস্কি। ম্যাচের ৩৩ মিনিটে ডি মারিয়ার কর্নার সেভ করেন পোল্যান্ড গোলরক্ষক শেকজেসনি। পরপর কর্নার পেয়েও গোল করতে পারেননি ডি মারিয়ারা। তবে ম্যাচের ৩৬ মিনিটে পোল্যান্ড গোলরক্ষক ফাউল করে বসেন পেনাল্টি বক্সের মধ্যে এবং ভিএআর-এর সাহায্য নিয়ে রেফারি ড্যানি দেসমণ্ড পেনাল্টির নির্দেশ দেন। কিন্তু পেনাল্টি থেকে মেসির জোরালো শট অসাধারণ সেভ করেন পোলিশ গোলরক্ষক শেকজেসনি। বলা যেতে পারে আউটস্ট্যান্ডিং গোলকিপিং। প্রথমার্ধ গোলশূন্যভাবেই শেষ হয়।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই চমক। ম্যাচের ৪৬ মিনিটে আর্জেন্টিনিয়ান ডিফেন্ডার এন মোলিনার চোরাগতির দৌড় এবং অসাধারণ ক্রস। সেই ক্রস থেকেই গোল করেন অ্যালিস্টার এবং আর্জেন্টিনা এগিয়ে যায় ১-০ ব্যাবধানে। কিন্তু এরপরই ৫১ মিনিটের মাথায় সুযোগ পায় পোল্যান্ড। গ্লিকের শট ব্লক হয়, ফলে বিপদ কিছু ঘটেনি। এরপর আর্জেন্টিনার কোচ লিওনেল স্কালোনি দুটি পরিবর্তন করেন। ডি মারিয়াকে তুলে মাঠে নামান পারেডেসকে এবং অ্যাকুইনার বদলে মাঠে আসেন ট্যাগলিয়াফিকো। অন্যদিকে পোল্যান্ড কোচ মিকনিউকিচ, বাইলিককে তুলে মাঠে নামান জাইমানস্কিকে। তবে লাগাতার কর্নার আদায় করে যাচ্ছিল আর্জেন্টিনা দল। ঠিক ম্যাচের ৬৭ মিনিটে ফারনান্দেজের অ্যাসিষ্ট থেকে অনবদ্য গোল আলভারেজের। আর্জেন্টিনা এগিয়ে যায় ২-০ ব্যাবধানে।
এই ম্যাচের শুরু থেকেই গোটা আর্জেন্টিনা দলকে ভীষণ পজিটিভ লাগছিল। টিম কম্বিনেশন এবং একটি সঙ্গবদ্ধ ইউনিট হিসেবে খেলার ফলেই বল পজিশনও ধরে রাখতে পেরেছিল তারা। অন্যদিকে ফাউল করার অপরাধে হলুদ কার্ড দেখেন পোল্যান্ডের ক্রাইচউইয়াক। ম্যাচের ৭৯ মিনিটে ফের পরিবর্তন আর্জেন্টিনার। আলভারেজের বদলে মাঠে আসেন পেজেলা। তবে পুরো ম্যাচ জুড়ে বিশেষত দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই মুহুর্মুহু আক্রমণ তুলে আনে আর্জেন্টিনা। সবুজ গালিচায় যেন নিপুণ ফুটবলশৈলী, মেসির একেকটা মুভমেন্ট ছিল বাঁধিয়ে রাখার মতো। অধিনায়ক মেসি গোটা দলকে তাতিয়ে গেছেন পুরো ম্যাচে এবং মারাত্মক ওয়ার্কলোড নিয়েছেন। সর্বমোট ৭২% বল পজিশন এবং ২-০ ব্যাবধানে জিতে রাউণ্ড অফ সিক্সটিনে পৌঁছে গেল আর্জেন্টিনা।
Comments :0