সন্ধ্যা হলেই কলেজের ইউনিয়ন রুমে বসতো মদের আসর, নেতৃত্বে মনোজিৎ মিশ্র। ওই কলেজের এক পড়ুয়া সংবাদমাধ্যমের কাছে জানিয়েছেন মদের আসরের পাশাপাশি সেখানে চলতো রাজনৈতিক কাজ কর্ম। এদিন সকালে মনোজিৎ সহ তিনজন অভিযুক্তকে কলেজে নিয়ে যায় তদন্তকারিরা গোটা ঘটনার পুননির্মান করা হয়। এর আগে নির্যাতীতাকে ঘটনাস্থলে নিয়ে গিয়ে তৈরি করা হয় ক্রাইম সিন।
মনোজিৎ মিশ্রের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে একাধিক অভিযোগ সামনে এসেছে। একাধিক মামলাও ছিল তার নামে কিন্তু শাসক দলের নেতা মন্ত্রীদের হাত তার মাথায় থাকায় বার বার ছাড়া পেয়েছে ‘ম্যাঙ্গ’। জানা যাচ্ছে ২০০৭ সালে কসবা ল’কলেজে ভর্তি হয় মনোজিৎ। তারপর তার কোর্স শেষ হওয়ার আগেই সে কলেজ ছেড়ে দেয়। তারপর ফের ২০১৭ সালে কলেজে ভর্তি হয়, ২০২২ সালে পাশ হওয়ার পর কলেজ পরিচালন সমিতির অনুমোদনে কলেজে চাকরি পায় মনোজিৎ।
গত ২৫ জুন বুধবার রাতে বিজন সেতুর সামনে সাউথ কলকাতা ল’কলেজে গণধর্ষণের শিকার হয় এক পড়ুয়া। তার অভিযোগের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তার করা হয় তিনজনকে। মূল অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্র ওই কলেজের টিএমসিপি ইউনিটের প্রাক্তন সভাপতি, বর্তমানে কলেজের অস্থায়ী কর্মী। অভিযোগ সে এবং দুজন ছাত্র এই ঘটনা ঘটিয়েছে। আলিপুর আদালতে তিনজনকে পেশ করা হলে মঙ্গলবার পর্যন্ত পুলিশি হেপাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। কলেজে যায় জাতীয় মহিলা কমিশনের একটি প্রতিনিধি দল। অভিযোগ তাদের সাথে সহযোগীতা করেনি কলকাতা পুলিশের আধিকারিকরা। উল্লেখ্য শনিবার নির্যাতীতাকে কলেজে নিয়ে গিয়ে গোটা ঘটনার পুননির্মান করেন তদন্তকারি আধিকারিকরা।
অন্যদিকে এই ঘটনার তদন্তের জন্য সিট গঠন করা হয়েছিল কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে। নেতৃত্বে কলকাতা পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ শহরতলি) প্রদীপকুমার ঘোষাল। প্রথমে পাঁচজনের সিট গঠন করা হলেও রবিবার তার সদস্য সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে আরও চারজন পুলিশ আধিকারিককে সিটে যুক্ত করা হয়েছে।
নির্যাতীতার বয়ান অনুযায়ী গত বুধবার রাতে তাকে মনোজিৎ এবং বাকি দুই অভিযুক্ত ইউনিয়ন রুমে যৌন হেনস্তা করে। তারপর তাকে গার্ড রুমে নিয়ে গিয়ে কুপ্রস্তাব দেয়। নির্যাতীতাতে তাতে রাজি না হলে তখন তিনজন তাকে গণধর্ষণ করে এবং গোটা বিষয়টা ভিডিও করে। হুমকি দেয় কোথাও জানালে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া হবে। ঘটনার পর নির্যাতীতা কসবা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে তিনজনকে বৃহস্পতিবার রাতেই আটক করে কসবা থানা। হয়েছে নির্যাতীতার শারিরীক পরীক্ষাও।
শুক্রবার আদালতে অভিযুক্তদের আইনজীবী দাবি করেন যে তাদের ফাঁসানো হচ্ছে কলেজের রাজনীতির কারণে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সেই ভাবে কোন প্রমান নেই।
Kasba Rape Case
কসবা কান্ডের অভিযুক্তদের ঘটনাস্থলে নিয়ে গিয়ে করা হলো ঘটনার পুননির্মান

×
Comments :0