BIDYUT INTERROGATION

ফের পুলিসের জেরা বিশ্বভারতীর সদ্য প্রাক্তন উপাচার্যকে

জেলা

বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বাসভবনের সামনে ফের পুলিশ।

ফের বাসভবনে গিয়ে বিশ্বভারতীর প্রাক্তন উপাচার্য বিদ্যুৎ  চক্রবর্তীকে জিজ্ঞাসাবাদ করল শান্তিনিকেতন থানার পুলিশ। পুলিশ  সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সকাল থেকে বিশ্বভারতীর উপাচার্যর বাসভবন 'পূর্বিতা'য় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। 

এদিন দুটি মামলায় এই জিজ্ঞাসাবাদ হয়েছে। এর আগে গত ২০ ডিসেম্বর এমনই আরো তিনটি মামলায় তিন ঘন্টা জেরা করা হয়েছিল বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে। 

গত ৮ নভেম্বর বিশ্বভারতীর উপাচার্য হিসেবে মেয়াদকাল শেষ হয়েছে বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর। উপাচার্য থাকাকালীন তাঁর নেওয়া একাধিক সিদ্ধান্ত, মন্তব্য ও কার্যকলাপের জন্য বহু অভিযোগ দায়ের হয়েছিল শান্তিনিকেতন থানায়। সেই সব অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই রুজু হয়েছে ৬টি মামলা। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতেই গত সোমবার প্রাক্তন উপাচার্যর পূর্বপল্লীর সরকারি বাসভবনে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল শান্তিনিকেতন থানার তরফে। 

রুজু এই সব মামলার প্রেক্ষিতে সুরক্ষা চেয়ে কলকাতা উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। আদালত এখনই তাঁকে গ্রেপ্তার না করারই নির্দেশ দিয়েছিল। পাশাপাশি উচ্চ আদালতও এমনটাও জানিয়েছিল যে উপাচার্যর বাসভবনে গিয়ে তাঁকে এক ঘন্টা করে জিজ্ঞসাবাদ করা যেতে পারে। উচ্চ আদালতের সেই নির্দেশ মতো তিনটি মামলায় সোমবার প্রায় ৩ ঘন্টা জেরা হয়। বুধবার আরও ২টি মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে।

ঐতিহ্যবাহী উপাসনা গৃহে বসে ‘বাঙালি কাঁকড়ার জাত’ এমন মন্তব্য করেছিলেন বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। এছাড়া, দুর্গাপুজো নিয়েও তাঁর গলা থেকে বেরিয়েছিল বিতর্কিত মন্তব্য। এমনকি, শান্তিনিকেতনে টোটো চালকদের হেনস্তার অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। এছাড়াও ইউনেসকোর বিশ্ব হেরিটেজ স্বীকৃতি প্রাপ্তির ফলকে রবীন্দ্রনাথকে ব্রাত্য রেখে বসানো ফলক নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে উঠেছিল। এই বিতর্কিত ফলক মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতিষ্ঠিত শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের জায়গায় বসানো নিয়ে অভিযোগ দায়ের হয়েছিল শান্তিনিকেতন থানায়। এই সব নানা অভিযোগের প্রেক্ষিতে মোট ৬টি মামলায় রুজু হয়েছে।  

অপরদিকে মেয়াদ শেষ হওয়ার পর দায়িত্ব ছাড়লেও বিদ্যুৎ চক্রবর্তী এখনও রয়েছেন বিশ্বভারতীর ‘পূর্বিতা’ বাংলোয়। মেয়াদ শেষ হওয়ার পর কি করে তিনি থাকতে পারেন সরকারি বাংলোয় তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে জোরালোভাবেই। যে বিতর্ক গড়িয়েছে কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক পর্যন্তও। সেই বিতর্কে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ তাদের অবস্থান ইতিমধ্যেই এক প্রেস বিবৃতি প্রকাশ করে স্পষ্ট করেছে। তাতে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ‘মন্ত্রকের জিজ্ঞাসার উত্তরে জানানো হয়েছে যে প্রাক্তন উপাচার্যের পক্ষ থেকে, তাঁর আইনি উপদেষ্টা গত ১৫ নভেম্বর একটি ইমেলের মাধ্যমে জানিয়েছেন যে তিনি ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত উপাচার্যের বাংলোতে থাকতে চান। বিশ্ববিদ্যালয় এই আবেদনকে নিয়মানুসারেই বিবেচনা করছে। প্রাক্তন উপাচার্যর প্রস্থান যেন মর্যাদাপূর্ণ এবং শালীন পদ্ধতিতে হয় তা সুনিশ্চিত করার জন্য বর্তমান ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যকে পরামর্শ দিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রক।’ 

পাশাপাশি ইউনেসকোর স্বীকৃতি প্রাপ্তির বিতর্কিত ফলকের পরিবর্তে কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের পরামর্শ মতো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম সহ নতুন ফলক বসানোর জন্য বিশ্বভারতী তৎপর রয়েছে বলেও জানানো হয়েছে এদিনের প্রেস বিবৃতিতে।

Comments :0

Login to leave a comment