বুধবার সরাসরি গাজার সব থেকে বড় হাসপাতাল আল শিফায় হামলা চালালো ইজরায়েলের ঘাতক বাহিনী। ইজরায়েল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উভয়ই দাবি করছে যে হামাস গাজার হাসপাতালগুলিকে আন্ডারগ্রাউন্ড টানেল ব্যবহার করে কমান্ড পোস্ট এবং জিম্মিদের লুকানোর জন্য ব্যবহার করছে। তবে এই কথার সপক্ষে কোন প্রমান তারা এখনও সমানে আনতে পারেনি।
প্রধান ফটকে ইজরায়েলি ট্যাঙ্ক। চারদিক বন্ধ করে রেখেছে ইজরায়েলের সেনা। নেই বিদ্যুৎ, নেই জ্বালানি। চলছে না ভেন্টিলেটর, ইনকিউবেটর কাজ করছে না গাজার আল শিফা হাসপাতালে। মারা যাচ্ছেন রোগীরা, শিশুরা
হামাস এবং শিফা কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে একাধিকবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তোলা অভিযোগকে মান্যতা না দিয়ে দাবি করা হয়েছে কোন আন্তর্জাতিক সংস্থার দ্বারা বিষয়টির তদন্ত করার।
আল শিফা হাসপাতালে বহু প্যালিস্তিনিও স্মরনার্থী এবং শিশু আশ্রয় নিয়েছে। দীর্ঘ কয়েকদিন দরে এই হাসপাতালে নেই কোন পর্যাপ্ত ওষুধ, খাবার এবং অক্সিজেন। বিদ্যুৎ নেই। ফয়েলে রাখা হচ্ছে সদ্যজাত শিশুদের।
মঙ্গলবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে জানানো হয়েছে যে তারা এখনও পর্যন্ত ৩৬ জন শিশুর দেখভাল করছে। গাজার সবচেয়ে বড় হাসপাতালে ইতিমধ্যে পরিকাঠামোর অভাবে তিনজন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। সোমবারই প্যালেস্তাইনের স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানায় যে আল শিফা হাসপাতালে অক্সিজেন না পেয়ে মৃত্যু হয়েছে ৩৯ শিশুর। বুধবার আরও ৩৯ শিশুকে ইনকিউবেটর এবং ভেন্টিলেটর থেকে সরিয়ে রাখতে হয়েছে সাধারণ বেডে। একের পর এক শিশু মারা যাচ্ছে।
আল শিফা কবে নির্মিত হয়?
১৯৪৬ সালে ব্রিটিশ শাসনের সময় তৈরি হব এই হাসপাতাল। ১৯৬৭ সালে ইজরায়েল গাজা উপত্যকা দখল করে তখনও সেই সময় এই হাসপাতালে অস্রয় নিয়েছিলেন বহু মানুষ।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী ১৯৮৭ সালে, ইসরায়েলি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে প্রথম ইন্তিফাদার শুরুর সপ্তাহে শিফার বাইরে কয়েকশ প্যালেস্তিনিও ইজরায়েলি সৈন্যদের দিকে চিৎকার করে বলেছিল, ‘‘এসো এবং আমাদের সবাইকে মেরে ফেল বা বের হয়ে যাও।’’
হামাস কখন আল-শিফা নিয়ন্ত্রণ করে?
১৯৯৪ সালে, প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন (পিএলও) নেতা ইয়াসির আরাফাতের ফাতাহ-অধ্যুষিত নিরাপত্তা বাহিনী যখন অসলো শান্তি প্রক্রিয়া চলাকালীন গাজায় প্যালিস্তিনিওদের সীমিত স্ব-স্বায়ত্তশাসন মঞ্জুর করার পরে হাসপাতালের উপরে প্যালেস্তাইনের পতাকা তোলা হয়।
২০০৬ সালের নির্বাচনে ইসলামপন্থী গোষ্ঠীর চমকপ্রদ বিজয় এবং ২০০৭ সালে গাজা সামরিক দখলের পর ফাতাহ-অধ্যুষিত প্যালেস্তিনিও কর্তৃপক্ষ থেকে হামাসের হাতে কার্যকর নিয়ন্ত্রণ চলে যায়।
একটাই অজুহাত। হাসপাতাল গুলোয় আশ্রয় নিয়েছে হামাস বাহিনী। এই অজুহাতকে সামনে রেখে গাজার একের পর এক হাসপাতালের বাইরে দাঁড়িয়ে রয়েছে সাঁজোয়া গাড়ি, ট্যাঙ্ক। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান নিজে এক্সহ্যান্ডেলে লিখেছেন যে ইজরায়েলের হামলার কারণে গাজার হাসপাতাল গুলো নরকে পরিনত হয়েছে।
Comments :0