কয়েকদিনের মধ্যেই মোহনবাগান কোচের আত্মবিশ্বাস বদলে গেল অসহায়তায়। দল ক্রমশ হাসপাতালে পরিণত হয়েছে। একের পর এক ফুটবলার চোট পেয়ে ছিটকে যাচ্ছেন। এরকম পরিস্থিতিতে একজন কোচের কী করার থাকতে পারে? চোট-আঘাত তো আর কোচের নিয়ন্ত্রণে নেই। মোহনবাগান কোচ জুয়ান ফেরান্ডোর চেহারায় হতাশা ধরা পড়লেও ইতিবাচক থাকার চেষ্টা করছেন। বুধবার ঘরের মাঠে মোহনবাগানের প্রতিপক্ষ এফসি গোয়া। আগের ম্যাচে হেরেছিল লিগ তালিকায় তলানিতে থাকা নর্থ ইস্ট ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে। এফসি গোয়ার বিরুদ্ধে পয়েন্ট চান ফেরান্ডো। একমাসে আগে এই গোয়ার কাছে তিন গোল খেয়েছিল মোহনবাগান। তাই, হিসাব বরাবর করার ম্যাচ সবুজ মেরুনের কাছে।
জনি কাউকো আগেই ছিটকে গিয়েছেন। ফ্লোরেন্তিন পোগবাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। হুগো বুমো চোটের জন্য খেলতে পারছেন না। তার উপর নর্থ ইস্ট ম্যাচে চোট পেয়েছেন আশিস রাই ও দীপক টাংরি। আঘাত এতটাই গুরুতর দু’জনেই খেলার মতো অবস্থাতে নেই। কাদের নিয়ে প্রথম একাদশ সাজাবেন? এটাই এখন বড় পরীক্ষা জুয়ানের কাছে। তারপর তো জয়ের কথা চিন্তা করা যাবে। জুয়ান বলছেন, ‘খেলার দিন সকালে কাদের পাওয়া যাবে তা দেখে একাদশ তৈরি করব। চোট আঘাত আমার দলে বড় সমস্যা। যা সামলানোর রাস্তা আমাদের খুঁজে বের করতে হবে।’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘দলের ওপর আমার বিশ্বাস আছে। প্রত্যেকেই নিজেদের সেরাটা দিতে তৈরি। বছরের শেষ দিনে প্রথম চারে থাকার ব্যাপারে অবশ্যই আশাবাদী। চোট আঘাত সমস্যাটা এতটাই বড় যে প্র্যাকটিস করানোর মতো কুড়িটা ফুটবলার আমার হাতে থাকছে না। তবে এই সমস্যা ফুটবলে স্বাভাবিক ঘটনা। এই নিয়েই চলতে হয়। আমি ফুটবলারদের ভুলগুলো দেখিয়েছি। শুধরে দেওয়ার পথও বলেছি। আমাদের প্রতিপক্ষ আইএসএল’র অন্যতম সেরা। তাদের বিরুদ্ধে সাফল্য পাওয়ার ব্যাপারে আমি অবশ্যই আশাবাদী এবং বছরটা প্রথম চারে থাকার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী।’
ছন্দে রয়েছে মোহনবাগান রক্ষণ। শেষ পাঁচ ম্যাচে গোল হজম করেছে মাত্র একটা। প্রীতম, হ্যামিল, শুভাশিস সমৃদ্ধ ডিফেন্স ভাঙতে হিমশিম খাচ্ছে বিপক্ষ। তবে গোয়ার বিরুদ্ধে সতর্কতা নিয়ে নামতে হবে প্রীতম, শুভাশিসদের। গোয়া শেষ তিন ম্যাচে সাত গোল করেছে। তাঁদের দলে এমন অনেক ফুটবলার রয়েছে, যারা তেকাঠিটা ভালো চেনে। মোহন ডিফেন্সকে সমস্যায় ফেলতে পারেন ইকের গুয়ারোতজেনা, নোওহা সাদাউরা। এই ফুটবলারই দুরন্ত ছন্দে আছেন। জামশেদপুরের বিরুদ্ধে জোড়া গোল করেছিলেন ইকের। ডিফেন্স যতটা জমাট দেখাচ্ছে, আক্রমণভাগ কিছুটা হলেও ভোঁতা। বুমো, কাউকোদের মতো ফুটবলার না থাকায় মোহনবাগানের সাপ্লাই লাইন নেই। দিমিত্রি পেত্রাটোসের উপর বাড়তি চাপ পড়ে যাচ্ছে। তিনি নিচে নেমে এসে খেলছেন। লিস্টন থাকলেও, তিনি ছন্দে নেই আগেরমতো। গোলের সুযোগ নষ্ট করছেন। গোয়ার বিরুদ্ধে কোচ জুয়ান মাঝমাঠে বল ধরে খেলার জন্য প্রণয় হালদারকে ব্যবহার করার পরিকল্পনা করছেন। মরশুমে প্রথমবার হয়তো শুরু থেকে খেলবেন বাঙালি মিডফিল্ডার। ৭৯টি ম্যাচের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন প্রণয় বলছেন, ‘কোচের দেখানো পথেই ফের জয়ের পথে ফিরবে দল।’
অন্যদিকে, শেষ তিন ম্যাচে অপরাজিত গোয়া। দু’টি জয়। একটি ড্র। মোহনবাগানের বিরুদ্ধে জয়ই পাখির চোখ কার্লোস পেনার দলের। জিততে পারলেই মোহনবাগানকে টপকে চারে ওঠার সুযোগ। চোট জর্জরিত সবুজ মেরুন দলকে মরশুমে দ্বিতীয়বার হারানোর ভালো সুযোগ গোয়ার সামনে। কিন্তু পেনা ধারণা করছেন, ‘ম্যাচটা কঠিন হতে চলেছে। সমানে সমানে লড়াই হবে। আমি জিততে চাই।’
(ম্যাচ শুরু সন্ধ্যে ৭.৩০)
ছবি : অচ্যুৎ রায়
Comments :0