বিশ্বকাপে পর্তুগালের ম্যাচ আগামী বৃহস্পতিবার। এখনও দু’দিন দেরি আছে। গত রবিবারই পেটের অসুস্থতা কাটিয়ে দলের অনুশীলনে যোগ দিয়েছিলেন। প্র্যাক্টিসে বেশ চনমনে দেখাচ্ছিল তাঁকে। শেষ বিশ্বকাপ খেলতে নামবেন বলে আলাদাই তাগিদ দেখা গিয়েছে তাঁর শরীরী ভাষায়। এদিন, পর্তুগীজ সুপারস্টারের সাংবাদিক সম্মেলনে থাকার কথাই ছিল না। অথচ তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলেন। বেশ কিছু বিষয় নিয়ে কথাও বললেন।
অনেকেই চিন্তিত, পর্তুগালের ক্যাম্পের অবস্থা কেমন তা নিয়ে? সতীর্থদের সঙ্গে কোনও ঝামেলা নেই তো! কাতার বিশ্বকাপে অন্যতম ফেভারিট দল হিসাবে খেলতে নামবে আ সেলেকাও’রা। তাই, ড্রেসিংরুমে সুস্থ পরিবেশ থাকাটা জরুরি। কেন না, বিশ্বকাপের আগে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড নিয়ে একটি বিস্ফোরক সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন রোনাল্ডো। তার প্রভাব পর্তুগালের সাজঘরে পড়বে না তো!
রোনাল্ডোর মতোই পর্তুগাল দলে গুরুত্বপূর্ণ তারকা ব্রুনো ফার্নান্ডেজ। একই সঙ্গে সিআর সেভেনের ক্লাব সতীর্থ। কাতারে দু’জনে আলাদা আলাদাভাবে পৌঁছেছিলেন। তাতে প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল, তবে কি ব্রুনো ও রোনাল্ডোর মধ্যে কোনও সমস্যা রয়েছে। যাবতীয় বিতর্ক, সমস্ত দ্বিধা-দন্দ্ব নিজেই উড়িয়ে দিলেন রোনাল্ডো। সিআর’কে সর্বদাই আত্মবিশ্বাসী দেখায়। যখন কোনও বিষয় নিয়ে কথা বলেন তখনও।
সাজিয়ে গুছিয়ে মার্জিত ভাষায় রোনাল্ডো বলেন, ‘আমাদের ড্রেসিংরুমের পরিবেশ অতি উত্তম। কোনও সমস্যাই দেখছি না। সবাই আমরা সংঘবদ্ধভাবেই রয়েছি। টিম হোটেলে ব্রুনো(ফার্নান্ডেজ) যখন এল। ওঁর প্লেন যেহেতু লেট ছিল। আমিই পাশেই খেলছিলাম। ব্রুনো ঢুকতেই আমি ওকে মজা করে জিজ্ঞেস করি, তুমি নৌকায় চড়ে এলে। আমার আর ব্রুনোর সম্পর্ক অনবদ্য।’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘বহু বছর ধরে দেশের ফুটবলাররা আমায় চেনে, কেমন মানুষ আমি ওরা খুব ভালোভাবে জানে। দলের ফুটবলাররা ক্ষুধার্ত। আমি নিশ্চিত, আমার ওই সাক্ষাৎকারে দলের মধ্যে কোনও প্রভাব ফেলবে না। সবাই নিজেদের লক্ষ্যে স্থির।’
তাঁর নেতৃত্বে পর্তুগাল ২০১৬ ইউরো চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর তিন বছর বাদে নেশন্স লিগ জিতেছিল। কিন্তু রাশিয়া বিশ্বকাপে পর্তুগালের অভিযান থেমে যায় শেষ ষোলোতেই। কিন্তু এবারের দলটা চার বছর আগের দলের চেয়ে শক্তিশালী। বিশেষজ্ঞদের কথায়, পর্তুগাল বিশ্বকাপ জয়ের অন্যতম দাবিদার। মানছেন অধিনায়ক।
রোনাল্ডোর কথায়, ‘আমি বিশ্বাস করি এই বিশ্বকাপের সেরা দল পর্তুগাল। কিন্তু আমাদের সেটা মাঠে নেমে বোঝাতে হবে।’ কাতারে উড়ে আসার আগে রোনাল্ডোকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, বিশ্বকাপ জিতলে কি অবসর নিয়ে নেবেন? উত্তরে তিনি বলেছিলেন, ‘হ্যাঁ।’ এখন বলছেন, ‘বিশ্বকাপ জেতার স্বপ্ন দেখছি। যদি আমরা বিশ্বকাপ নাও জিতি, তবুও গর্ব বোধ করব নিজেদের নিয়ে। ধীরে ধীরে এগোতে চাই আমরা। ঘানা ম্যাচ নিয়ে আপাতত ভাবছি। সুস্থ আছি। দারুণভাবেই বিশ্বকাপ শুরু করার ব্যাপারে প্রত্যয়ী।’
রোনাল্ডো মিডিয়ার মুখোমুখি হওয়া মানে, লিওনেল মেসি প্রসঙ্গ উঠবেই। সোমবারও উঠল। পর্তুগালের হয়ে বিশ্বকাপ জিতলে কি মেসির সঙ্গে আপনার তুলনা টানা বন্ধ হতে পারে? অকপটে রোনাল্ডোর জবাব, ‘না’।
Comments :0