ভারতীয় রেলে ৩.১২ লক্ষ নন-গেজেটেড পদ শূন্য হয়ে পড়ে আছে। গত বছরের মার্চে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব বলেছিলেন যে সকল পদের জন্য বিরাট কর্মী ঘাটতি রয়েছে। বর্তমানেও যা দেখা যাচ্ছে তাতে পরিস্থিতির কোনো রদবদল হয়নি।
রাজ্যসভায় একটি প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী জানান, ভারতীয় রেলওয়েতে ১ ডিসেম্বর, ২০২২ পর্যন্ত ১৮ টি জোন জুড়ে সারা দেশে ৩.১২ লক্ষ নন-গেজেটেড পদ খালি রয়েছে।
সর্বোচ্চ পদ খালি রয়েছে উত্তরাঞ্চলে (৩৮,৭৫৪)। পশ্চিমাঞ্চলে (৩০,৪৭৬), পূর্বাঞ্চলে (৩০,১৪১) এবং মধ্যাঞ্চলে (২৮,৬৫০) বিপুল সংখ্যাক পদ খালি।
ভারতীয় রেলওয়েতে কর্মীর ঘাটতির কারণে অনেক কর্মচারী ওভারটাইম কাজ করতে বাধ্য হচ্ছে এবং অসংখ্য টিকিট বুকিং কাউন্টার অকার্যকর হয়ে পড়েছে, যার ফলে দীর্ঘ লাইনের সৃষ্টি হচ্ছে।
রেলে পদ খালি রেখে যাত্রী নিরাপত্তার সঙ্গে আপসের গুরুতর বিষয়টিতে সরব হয়েছেন সিপিআই(এম) সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিও। তিনি মনে করিয়েছেন যাত্রী সুরক্ষার মতো রেলের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন খাতে মোট ১৪ শতাংশ বরাদ্দ ছাঁটাই হয়েছে কেন্দ্রীয় বাজেটে।
সেন্ট্রাল রেলওয়েতে, শুধুমাত্র নিরাপত্তা বিভাগেই ২৮,৬৫০টি পদের মধ্যে ১৪,২০৩টি শূন্যপদ রয়েছে, যা প্রায় ৫০ শতাংশ । এই বিভাগের চাকরির মধ্যে অপারেটিং এবং রক্ষণাবেক্ষণ কর্মী, যেমন বিভিন্ন ধরণের পরিদর্শক, ড্রাইভার, ট্রেন পরীক্ষক, শান্টার, অন্যান্যরা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
সরকার কর্তৃক শূন্যপদ পূরণ না হওয়ায়, বেশিরভাগকে ওভারটাইম কাজ করতে হচ্ছে, আবার কেউ কেউ পদোন্নতি নিতে চাইছে না কারণ সেখানে কোনো বদলির ব্যবস্থা নেই। এই সমস্যাগুলি ট্রেনের কার্যকারিতা এবং ট্র্যাকের রক্ষণাবেক্ষণকে প্রভাবিত করছে, তাই যাত্রীদের নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে বলে বারবার বিভিন্ন অংশ অভিযোগ জানিয়েছে।
এই বিষয় শনিবার কেন্দ্রকে নিশানা করে টুইট করেন সিপিআই(এম) সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। চলতি অর্থ বর্ষে রেলওয়ে খাতে ১৪ শতাংশ অর্থ বরাদ্দ ছাঁটাই করে রেলের রক্ষণাবেক্ষণকে সংকটের দিকে ঠেলে দেওয়া নিয়ে কেন্দ্রকে আক্রমণ করেন তিনি। ‘‘একদিকে রেলের নিরাপত্তার সাথে আপস করা হচ্ছে, অন্যদিকে একের পর এক ‘বন্দে ভারত’ ট্রেন চালু করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী,’’ কটাক্ষ ইয়েচুরির।
ইয়েচুরি বলেছেন, ‘‘২০১৭ থেকে রেলের ট্র্যাক রক্ষণাবেক্ষণ, প্রযুক্তি পরিবর্তনের মতো বিষয়গুলি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। ’’ তিনি বলেছেন, ‘‘অতীতে এত বড় মাপের দুর্ঘটনার দায় নিয়ে অন্তত পদত্যাগ করতেন রেলমন্ত্রীরা। মোদী সরকারের সময় এমন দায়বদ্ধতাও তুলে দেওয়া হয়েছে।’’
Comments :0