SSC protest

চাকরিহারা শিক্ষকদের নবান্ন অভিযান

রাজ্য

চারকি ফেরতের দাবিকে সমানে রেখে হাওড়া স্টেশন থেকে নবান্ন অভিযানে এসএসসি ২০১৬ প্যানেলের চাকরিহারা শিক্ষকরা। মিছিলে যারা অংশ নিয়েছেন তাদের দাবি তারা চিহ্নিত অযোগ্য নন সরকারকে তাদের চাকরি ফিরিয়ে দিতে হবে। আদালতে অযোগ্যদের হয়ে রাজ্য যে ভাবে আইনি লড়াই লড়ছেন তা নিয়েও সরব হয়েছেন তারা।
চাকরিহারা শিক্ষকদের মিছিল আটকানোর জন্য বিশাল পরিমানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে নবান্ন মুখি একাধিক রাস্তায়। ব্যারিকেড করা হয়েছে, রয়েছে র্যােফ এবং জলকামান। পুলিশ সূত্রে খবর বঙ্কিম সেতু থেকে নামলে মিছিল আটকাবেন তারা। ১০ ফুটের ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে যাতে আন্দোলনকারিরা নবান্নের কাছে যেতে না পারে।
গত ৩ এপ্রিম সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বাতিল হয়েছে ২৫,৫৭২ জন শিক্ষক শিক্ষিকা এবং শিক্ষাকর্মীরা। বহু যোগ্য চাকরি হারিয়েছে রাজ্য সরকারের প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতির কারণে।
এসএসসিকে বার বার আদালতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যোগ্য অযোগ্যদের তালিকা আদালতের কাছে জমা দিতে। কিন্তু সেই তালিকা সরকার জমা দিতে পারেনি। 
পরবর্তী সময় রাজ্যের পক্ষ থেকে রিভিউ পিটিশন করা হলে শীর্ষ আদালতের পক্ষ থেকে বলা হয় যারা এসএসসি তালিকায় ‘টেইন্টেড’ নন তাঁরা ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত শিক্ষকতার কাজে বহাল থাকতে পারবেন। কিন্তু ২০১৬ সালের এসএসসি তালিকায় ‘গ্রুপ সি’ এবং ‘গ্রুপ ডি’ কর্মীরা এর মধ্যে পড়ছেন না। কারণ স্কুলগুলিতে পড়াশোনা চালু রাখার স্বার্থ জানিয়ে এই নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সেই সঙ্গে স্পষ্ট করে বলেছে, এই সব পদে নতুন করে নিয়োগ করতেই হবে। যাঁরা ডিসেম্বর পর্যন্ত কাজ করবেন তাঁরা কোনও বাড়তি সুবিধা পাবেন না। নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু করতে হবে মে’র মধ্যে। শীর্ষ আদালতে হলফনামা দাখিল করে তা জানাতেও হবে। 
ফলে, ৩ এপ্রিল চাকরি বাতিলের রায়ে কোনও বদল হলো না। কেউ মোটেই চাকরি ফিরে পেলেন না। যোগ্যরা কাজ হারালেন এসএসসি, পর্ষদ এবং রাজ্য সরকারের জন্য। এই তিন পক্ষই কলকাতা হাইকোর্ট থেকে সুপ্রিম কোর্টে চাকরি জালিয়াতিকে আড়াল করে গিয়েছে। 
এসএসসির পক্ষ থেকে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সেই নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন অভিযোগ শীর্ষ আদালতের রায়কে মান্যতা না দিয়ে চিহ্নিত অযোগ্যদের পরীক্ষার বসার সুযোগ দিচ্ছে সরকার। এই নিয়ে মামলাও হয় হাইকোর্টে। সেখানে চিহ্নিত অযোগ্যদের হয় লড়াই করে রাজ্য এবং এসএসসি। কিন্তু কলকাতা হাইকোর্টের পক্ষ থেকে  স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে যে চিহ্নিত অযোগ্যরা পরীক্ষায় বসতে পারবেন না।
উল্লেখ্য এই এসএসসি দুর্নীতি মামলা দীর্ঘদিন ধরে চলেছে আদালতে। হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্ট বার বার এসএসসি এবং শিক্ষা দপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছিল যোগ্য এবং অযোগ্যদের তালিকা তাদের কাছে জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু সরকার বা এসএসসি কোন তালিকা জমা দেয়নি। শীর্ষ আদালতের রায় যখন প্রায় ২৬ হাজার জনের চাকরি চলে গেলো তখন এসএসসি এবং শিক্ষামন্ত্রী বলছে তালিকা প্রকাশ করা সম্ভব। তাহলে এখানেই প্রশ্ন আগে কেন তারা তালিকা প্রকাশ করলো না? আর যদি এখনও তারা তালিকা প্রকাশ করে তাহলে তাও সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী ফের পরীক্ষা দিয়ে যোগ্যতা প্রমান করে চাকরি পেতে হবে চাকরিহারাদের। এখানেই প্রশ্ন থাকছে এর দায় কি সরকার নেবে?

Comments :0

Login to leave a comment