নির্বাচনবিধি লাগু হওয়ার পরেও কোচবিহার এবং জলপাইগুড়ি জেলায় বিধিভঙ্গের অভিযোগ উঠলো।
একদিকে, সিতাই বিধানসভা এবং অন্যদিকে আলিপুরদুয়ার জেলার মাদারিহাট বিধানসভা কেন্দ্রের উপ-নির্বাচন হতে চলেছে। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে নির্বাচন আদর্শ আচরণবিধির তোয়াক্কা না করেই কোচবিহার ১নং ব্লকের বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত কর্মীদের আবাস যোজনার প্রশিক্ষণ দিচ্ছে কোচবিহার ১নং ব্লক প্রশাসন।
রবিবার কোচবিহার ধলুয়াবাড়িতে অবস্থিত ব্লক দপ্তরের সভাকক্ষে প্রশিক্ষণ হয়। নির্বাচন আদর্শ আচরণবিধি চালু হওয়ার পর এ ধরনের প্রশিক্ষণ করানো যেতে পারে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
শুধু তাই-ই নয়, ২২অক্টোবর থেকে সংশ্লিষ্ট এই ব্লকের বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় আবাস যোজনার সার্ভের কাজ শুরু হবে বলে ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে ব্লক প্রশাসন। শুধু তাই নয়, এই সার্ভে সংক্রান্ত গাইডলাইনে বলা আছে অস্থায়ী কোনও কর্মীকে এই সার্ভের কাজে নিযুক্ত করা যাবে না। দুই সদস্যের এই সার্ভে টিমে একজন স্থায়ী সরকারি কর্মচারীর সাথে আশ্চর্যজনক ভাবে যুক্ত করা হচ্ছে বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েতে কর্মরত অস্থায়ী কর্মীদের। যা সম্পূর্ণভাবে অবৈধ বলে উঠছে প্রশ্ন। একদিকে নির্বাচন কমিশনকে তোয়াক্কা না করার পাশাপাশি কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের গাইডলাইনকেও অবজ্ঞা করছেন প্রশাসনিক কর্তারা বলে উঠছে অভিযোগ।
এই উপনির্বাচনের আগে কোচবিহার ১নং ব্লকের পাশাপাশি জেলার বিভিন্ন গ্রামীণ এলাকায় এই আবাস যোজনার সার্ভের কাজ শুরু হলে, রাজ্যের শাসক দল রীতিমতো সার্ভে টিমগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করবে, এটা বলাই বাহুল্য। আর এর প্রভাব পড়তে বাধ্য সিতাই বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে, বলে মনে করছেন জেলার রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ। প্রশাসনিক এই কর্মকাণ্ডে আবারও স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে যে কোচবিহার জেলার সিতাই বিধানসভা কেন্দ্রের এই নির্বাচন কার্যত প্রহসনে পরিণত হতে যাচ্ছে।
এদিকে, একই ছবি দেখা গেছে মাদারিহাট বিধানসভা কেন্দ্রেও। ধূপগুড়ি মহকুমা বর্তমান বানারহাট মহুকুমার দুটি গ্রাম পঞ্চায়েত মাদারিহাট বিধানসভার অন্তর্ভুক্ত নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী জেলার কোনও বিধানসভায় নির্বাচন ঘোষণা হলে সমগ্র জেলায় নির্বাচনী বিধি নিষেধ লাগু হওয়ার কথা। মাদারিহাট বিধানসভার মোট বুথের ২০ শতাংশের ওপরে বুথ রয়েছে জলপাইগুড়ি জেলার ওই দুটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। কিন্তু দেখা যাচ্ছে জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন হাউস ফর অল প্রকল্পের বাংলা আবাস যোজনার ঘরের নতুন উপভোক্তাদের নামের তালিকা প্রস্তুত সহ বিভিন্ন কাজ করে চলেছে যেগুলি নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে পারে। আগামীকাল, সোমবার থেকে এই কাজ বাড়ি বাড়ি গিয়ে শুরু হওয়ার কথা। এই সার্ভের অন্যান্য অফিসিয়াল কাজ গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতি স্তরে করে চলেছে। জেলা প্রশাসন এখনো পর্যন্ত এই কাজ বন্ধ করার কোনও নির্দেশ জারি করা করেনি। এই কাজ অবিলম্বে বন্ধ করার দাবি জানিয়ে সিপিআই(এম)’র পক্ষ থেকে অভিযোগ জানানো হবে।
সিপিআই(এম) জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক সলিল আচার্য বলেন, ‘‘আলিপুরদুয়ার জেলার মাদারিহাট উপনির্বাচন হচ্ছে। মাদারিহাট বিধানসভার মধ্যে জলপাইগুড়ি জেলার বানারহাট মহকুমার দুটি গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে। তাই নির্বাচনের আদর্শ আচরণবিধি, নিয়ম অনুযায়ী, আলিপুরদুয়ারের পাশাপাশি জলপাইগুড়ি জেলাতেও লাগু হওয়ার কথা। কিন্তু জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন সেই নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে চলছে। ওই দুই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় আবাস যোজনার নতুন নাম নথিভুক্তকরণের কাজ বন্ধ রাখলেও, জলপাইগুড়িতে গোটা জেলায় নির্বাচনের বিধি মেনে হাউজ হোল্ড সার্ভের কাজ বন্ধ করেনি প্রশাসন।’’
আচার্য বলেন, ‘‘আমরা বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের নজরে আনব এবং সংলগ্ন জেলা থেকে যাতে সংশ্লিষ্ট বিধানসভার ভোটারদের প্রভাবিত করার মতো কোনও রাজনৈতিক প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড এই সময়কালে না ঘটানো হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে বলব।’’
MCC VIOLATION BY ELECTION
দুই জেলায় নির্বাচনী বিধিভঙ্গের অভিযোগ
×
Comments :0