Mental Heath Session School

বড়রা কি সবসময় ঠিক করেন, কথা শোনেন ছোটদের?

জেলা

Mental Heath Session School

বয়স তার বারো। বাবা-মা বেড়াতে গেলে আপত্তি নেই। কিন্তু বাবা-মায়ের সঙ্গে যাবে না। বন্ধুদের সঙ্গে বেড়াতে যাবে, মোবাইলে ছবি তুলবে।

ফোন ঘাঁটলে বকা দিচ্ছেন বাড়ির বড়রা। ছোটরা কথা বলতে গেলে দেখতে পাচ্ছে বড়রাই ব্যস্ত ফোনে। 

বই নিয়ে বসে আছে। স্কুলের পড়া পারছে না। বই নিয়ে বসে আছে, পড়ছে কী! বুঝে উঠতে পারছেন না অভিভাবকরা। 

মনের স্বাস্থ্য নিয়ে এমন বহু কথা উঠে এল স্কুলের কর্মশালায়। দমদম গার্লস হাইস্কুলের ছাত্রীদের পাশাপাশি অভিভাবকদেরও ডেকে নিয়েছিলেন শিক্ষিকারা। স্কুল জানাচ্ছে মনোবিজ্ঞানের পেশাদার পরামর্শদাতা মৃণাল চক্রবর্তী এবারও হাজির থেকেছেন কর্মশালায়। এর আগেও এই স্কুলে এসেছেন তিনি। আর্থিক প্রতিদান ছাড়াই করিয়েছেন কর্মশালা। 

কেন এই উদ্যোগ নিচ্ছে স্কুল? 

শিক্ষিকা দোলা রায় ভট্টাচার্য জানাচ্ছেন, ‘‘লকডাউনের পর থেকে বোঝা যাচ্ছিল মানসিক স্বাস্থ্যে প্রভাব পড়ছে ছাত্রীদের। অনেকের বাড়িতে বড়রা কাজ হারিয়েছিলেন। বাড়ির মধ্যেই থাকতে হয়েছিল দীর্ঘদিন। তখন মোবাইলে ব্যবহারও বাড়ে ছাত্রীদের। অনভিপ্রেত সমস্যাও দেখাও যাচ্ছিল। মনের পরিচর্যা দরকার, বুঝতে পারছিলাম সকলেই।’’ 

ওই সময় থেকেই মানসিক পরিচর্যার কর্মশালা শুরু। ভট্টাচার্য বলছেন, ‘‘পেট খারাপ বা জ্বর হলে বোঝা যায়। মানসিক সমস্যা হলে কিন্তু চট করে বোঝা যায় না। তার ওপর মনের সমস্যা না বলার অভ্যাস রয়েছে সমাজেরই। এখানে অনেকে প্রথম প্রজন্মের পড়ুয়া। অভিভাবকদের সাড়া কেমন পাব আশঙ্কা ছিল তা নিয়ে। তবে সাড়া উৎসাহজনক।’’

সোমবার স্কুলের এই অনুষ্ঠানে ৫২৩ ছাত্রীর মধ্যে ছিল ৫০০। অভিভাবকদেরও অনেকেই এসেছিলেন। তাঁদের আলাদা ‘সেশন’-এ অনেক সমস্যা তুলেও ধরেছেন। 

পারিবারিক সমস্যার নানা প্রভাব পড়ছে ছাত্রছাত্রীদের ওপর। ছেলেমেয়েরা চট করে মেজাজ হারাচ্ছে বলে মনে করছেন অভিভাবকরা। দেখা যাচ্ছে, তাঁরাই কিন্তু কথায় কথায় রেগে যাচ্ছেন। ছোটদের সময় দিতে পারছেনও না অনেকসময়। বেশিরভাগ পরিবারে বাবা-মা দু’জনেই কাজে যান। ছোটরা অপেক্ষা করেও বড়দের পাচ্ছে না, দূরে সরে যাচ্ছে।

শিক্ষিকা বলছেন, ‘‘দেখা যাচ্ছে সকালে পড়ার ঝোঁক কম। রাতের বেলা পড়তে চাইছে, মোবাইলে পড়তে চাইছে।’’ 

মতবিনিময়ের পর অভিভাবক এবং ছাত্রীদের কিছু ‘ট্রেনিং’ দিয়েছেন পরামর্শদাতা মৃণাল চক্রবর্তী। 

দোলা রায় ভট্টাচার্য বলছেন, ‘‘মোবাইলকে অস্বীকার করতে পারব না। হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে আমরাও বিভিন্ন বিষয় জানাচ্ছি। আর কেবল মোবাইল ব্যবহারই সমস্যার কারণ নয়। আমরা বড়রা মনে করছি যা করছি সন্তানের ভালোর জন্যই করছি। বাস্তবে তার ভাল নাও হতে পারে।’’

দমদম পৌরসভার কমিউনিটি হলে হয়েছে অনুষ্ঠান। পৌর কর্তৃপক্ষ কম ভাড়া নিয়েছে, জানিয়েছে স্কুল।        

Comments :0

Login to leave a comment