Recruitment Scam

জামিন পেলেন কল্যাণময়, তবে এখনই জেল মুক্তি নয়

রাজ্য

শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে ইডির মামলায় জামিন পেলেন পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়। মঙ্গলবার তাঁর জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি শুভ্রা ঘোষ। ইডির মামলায় জামিন পেলেও সিবিআইয়ের মামলায় এখনও জামিন পাননি তিনি।
২০১২ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত পর্ষদ সভাপতি পদে ছিলেন কল্যাণময়। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে সরাসরি যুক্ত থাকার অভিযোগে ২০২২ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর  গ্রেপ্তার হয় পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়। ওইদিন প্রায় ৬ ঘণ্টা জেরার পর সিবিআই কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়কে গ্রেপ্তার করে। এসএসসি নিয়োগ কেলেঙ্কারিতে সিবিআই তদন্তে প্রথম থেকে সন্দেহের তালিকায় ছিলেন পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি। সিবিআই তরফে দাবি করা হয়, অযোগ্য প্রার্থীদের চাকরি দেওয়ার জন্য সুপারিশপত্র কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় বানিয়ে দিতেন। তাঁর সুপারিশপত্রের ভিত্তিতেই হয়েছে যাবতীয় অবৈধ নিয়োগ। পর্ষদের সভাপতি পদে বয়সের ঊর্ধ্বসীমা পেরিয়ে গেলেও শাসক দলের ঘনিষ্ঠতার জেরে দীর্ঘদিন সভাপতির পদ আঁকড়ে ছিলেন কল্যাণময়। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের মতো রাজ্যের সব স্বশাসিত সংস্থার শীর্ষ পদে থাকার বয়সের সীমা ৭০বছর। যদিও কল্যাণময় মধ্যশিক্ষা পর্ষদের নির্বাচিত সভাপতি ছিলেন না। রাজ্যে সরকার পরিবর্তনের পর মধ্যশিক্ষা পর্ষদের নির্বাচিত কমিটি ভেঙে দিয়ে প্রথমে প্রশাসক বসানো হয়। সেই সময় পর্ষদ পরিচালনার জন্য রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে একটি অ্যাড-হক কমিটি তৈরি করা হয়। সেই অ্যাড-হক কমিটির মনোনীত সভাপতি ছিলেন তিনি। শাসকের প্রয়োজনেই বারেবারে মেয়াদ বেড়েছে ওই অ্যাড-হক কমিটির। 
২০২৩ সালের ২৯ নভেম্বর নিয়োগ দুর্নীতির একটি মামলায় শর্তসাপেক্ষে জামিন পেলেও একই ধরনের আরেকটি মামলায় ওইদিন ফের সিবিআই হোপাজতে যান মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গাঙ্গুলি। ১৪ মাস পরে হাইকোর্ট থেকে নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে জামিন পান মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময়। একগুচ্ছ কঠোর শর্তসাপেক্ষে জামিনের আবেদন ওইদিন মঞ্জুর করেছে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এবং বিচারপতি গৌরাঙ্গ কান্তের ডিভিসন বেঞ্চ। ওই দিন রাতে সিবিআই’র তরফে জানানো হয়, নবম-দশমে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কল্যাণময়কে নিজেদের হেপাজতে নেওয়ার জন্য আলিপুরে বিশেষ আদালতে আবেদন জানানো হয়। রাত নটার পরে সিবিআই’র আবেদনের ভিত্তিতে এই মামলায় রায় দেন বিচারক। গ্রুপ-সি মামলায় জামিন পেলেও রাতে আলিপুর আদালতের নির্দেশে নবম-দশম দুর্নীতি কাণ্ডে ফের সিবিআই’র হাতে তাঁর গ্রেপ্তারি দেখানো হয়।
এদিন কল্যাণময়ের আইনজীবী আদালতে জামিনের আর্জি জানান। তার বিরোধিতা করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। কল্যাণময়ের আইনজীবী আদালতে বলেন, তিনি আর কোনও সরকারি পদে নেই এবং অবসরপ্রাপ্ত। আদালত পর্যবেক্ষণ করে জানায়, কল্যাণময় একজন সমাজে পরিচিত ব্যক্তি এবং তিনি তদন্তে সহযোগিতাও করছেন। সেই কারণেই ইডি-র মামলায় তাঁকে জামিন দেওয়া হয়েছে। এদিন কল্যাণময়ের জামিন মঞ্জুর হলো ঠিকই, তবে জেলমুক্তি এখনই সম্ভব নয়।

Comments :0

Login to leave a comment