অপরাজিত বন্দ্যোপাধ্যায়
হরিথা কর্ম সেনা বদলে দিয়েছে কেরালাকে। রাজ্যের প্রায় সব ঘর এখন তাঁদের হাতের মধ্যে। সেখান থেকে নিয়ম করেই সংগ্রহ করা হচ্ছে পচনহীন বর্জ্য। রাস্তা থেকে ঘর, শহর ছাড়িয়ে গ্রাম এখন যেন প্লাস্টিক বর্জ্যের চাপ থেকে বেঁচেছে। বাদ পড়েনি কোভালাম কিংবা ভারকালা সমুদ্র সৈকত। কেরালা যেন আবর্জনাকে কাবু করে ফেলেছে। পৌর আইনকে সংশোধন করে খোলা জায়গায় বর্জ্য ফেলা থেকে তা পোড়ানোয় ভারী জরিমানা ধার্য করা হয়েছে। হরিথা কর্ম সেনাকে দেওয়া হয়েছে ‘যোদ্ধা’র সম্মান।
সরকারি হিসাবে কেরালার ১৯,৪৮৯ ওয়ার্ডের মধ্যে ১৯,০৯৩ ওয়ার্ড কিংবা ১০৩৪ স্থানীয় প্রশাসনের মধ্যে ১০২৭টি আজ হরিথা কর্ম সেনার আওতায়। বাদ পড়েনি ৯৩৯ গ্রাম পঞ্চায়েত, ৮৩ পৌরসভা কিংবা ৬টি পৌরনিগম। তাদের সংগৃহীত অজৈব বর্জ্য ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে ৩৪৮কোটি ৯ লক্ষ টাকার রাজস্ব তৈরি করেছে। হরিথা মিত্রম অ্যাপের তথ্য অনুসারে, শুধুমাত্র মার্চ মাসে হরিথা কর্ম সেনার মহিলারা ৮৭,৭৫,৭১৩টি পরিবার ও প্রতিষ্ঠান থেকে অজৈব বর্জ্য সংগ্রহ করেছে। ১৫টি স্থানীয় সংস্থা এই অ্যাপটি ব্যবহার করে না।
তবু চলতি মাসে ৮৮,২৭,২৭০ বাড়ি থেকে নিয়মিত পচনহীন বর্জ্যকে সংগ্রহ করে নতুন মাত্রা ছুঁয়ে ফেলেছেন ওই সবুজ সাথিরা। চূড়ান্ত লক্ষ্য ৮৯,৫৬,৭৮২। এখনই ৯৮.৫ শতাংশ ঘর-প্রতিষ্ঠান থেকে ওই সাফাই মহিলারা সংগ্রহ করে আনছেন বর্জ্য। দুই বছর আগেও ওই সংগ্রহ যেখানে ৪৭ শতাংশ ছিল, তা আজ ১০০ শতাংশ ছুঁইছুঁই। হরিথা কর্ম সেনার এই কৃতিত্ব শুধু দেশেই নয়, বিদেশেও বিদিত। কী সেই অসাধ্যকে সাধন করেছে ওই মহিলা বিগ্রেড তা দেখতে প্রায় প্রতি মাসে ত্রিবান্দ্রমে আসছেন দেশ-বিদেশের প্রতিনিধিরা।
সাধারণ মানুষের চেতনা, শক্তিশালী স্থানীয় প্রশাসন আর প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে কেরালা এখন শূন্য বর্জ্য উৎপাদনের পথে। লক্ষ্য ২০৩০ সাল। ব্রহ্মপুরার ঘটনা কেরালাকে নতুন করে ভাবতে শিখিয়েছিল। ২০২৩ সালের ২ মার্চ কোচি কর্পোরেশনের ১১০ একর ব্রহ্মপুরম বর্জ্য শোধনাগারে আগুন লাগার ফলে শহর ও শহরতলির বিস্তীর্ণ এলাকা প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে বিষাক্ত ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন করে রেখেছিলো। এই দুর্যোগ থেকে প্রাপ্ত শিক্ষা রাজ্য জুড়ে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পদ্ধতিতে উল্লেখযোগ্য উন্নতি আনতে সাহায্য করেছে।
কেন্দ্রীয়ভাবে বর্জ্যকে সংগ্রহ করার প্রয়াস ২০১১ সালের ওই ঘটনার পর থেকে বিকেন্দ্রীকৃত করা হয়। জোর দেওয়া হয় স্থানীয়ভাবে সে কাজ করার ওপর। প্রথমে স্থানীয়ভাবে বর্জ্যকে কমানোর চেষ্টা। তারপর পচনশীল বর্জ্যকে আলাদা করে তা নানা কাজে লাগানো। যে কাজটি সাধারণভাবে করা যায়, যেমন পচনশীল, অপচনশীল আর বিশেষ বর্জ্যকে আলাদা। তারপরে পচনশীলকে বাড়িতে বৈজ্ঞানিক উপায়ে কম্পোজ কিংবা বায়ো গ্যাস তৈরি। প্রতিটি কাজ করতে সাধারণ বাসিন্দাদের সহায়তা করেছে পঞ্চায়েত থেকে পৌরসভা কিংবা কর্পোরেশন। শহুরে এলাকায় যেখানে এই কাজ করাটা কঠিন, সেখানে রাস্তার ধারে টিনের ছাদ দিয়ে তৈরি হয়েছে থুম্বুরমুজি। এখানে পচনশীল জঞ্জালকে জমিয়ে ব্যাকটেরিয়া দিয়ে তৈরি হচ্ছে কম্পোজ সার। পরে তা বিক্রি করা হচ্ছে।
ভারতের অন্যান্য শহরের জঞ্জালকে সংগ্রহ করে অন্যত্র ফেলা আসা (ডাম্পিং) রীতি এখন কেরালায় অতীত। কেরালার ২৪টি বিশাল বিশাল ডাম্পিং সাইটকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে। রয়ে যাওয়া ৩৪টিকে চলতি আর্থিক বছরে তুলে দেওয়া হবে। কেরালায় গ্রাম ও শহরের পার্থক্য ক্রমশ কমছে। তাই বর্জ্য মোকাবিলায় থুম্বুরমুজি মডেলই কাজে আসছে। প্রথমে পচনশীল বা বায়ো, অপচনশীল বা নন বায়ো আর বিশেষ বর্জ্য বা স্পেশাল ওয়েস্ট হিসাবে ভাগ করে নেওয়া হচ্ছে।
সাধারণভাবে ঘর থেকে বর্জ্য সংগ্রহ করে তা প্রথমে নিয়ে আসা হচ্ছে মেটিরিয়াল সংগ্রহ কেন্দ্রে। সেখান থেকে ফের নিয়ে যাওয়া হয় রিসোর্স রিকভারি সেন্টারে। সেখানে চলছে পৃথকীকরণের জটিল কাজ। এখানেই পচনহীন বর্জ্য বিশেষত প্ল্যাস্টিক ও অন্যান্য উপাদানকে পুর্ব্যবহারযোগ্যতার নিরিখে বেছে নেওয়া হচ্ছে। বর্জ্য প্লাস্টিক নোংরা মুক্ত করে দুটি পদ্ধতিতে তা পরবর্তীতে তুলে দেওয়া হচ্ছে গ্রিন কেরালা কোম্পানিতে। প্রথমটি বেইলড প্লাস্টিক। ব্যাগে থাকা টুকরো প্লাস্টিককে মেশিনে চাপ দিয়ে ছোট করা হচ্ছে। ৪০ কিলোগ্রাম প্লাস্টিক এই পদ্ধতিতে হয় ১ কিলোগ্রাম।
আর যেগুলো চাপ দিয়ে বেইলড প্লাস্টিক করা সম্ভব নয়, তাও ছেঁটে ছেঁটে তৈরি করা হয় পুনর্ব্যবহারযোগ্য উপাদানে। এরপর সব চলে যায় গ্রিন কেরালা কোম্পানিতে পুনঃব্যবহারের জন্য। বাকি অব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক পাঠানো হয় সিমেন্ট কোম্পানিতে। পুনর্ব্যবহারযোগ্য অজৈব উপাদানে রাস্তাও তৈরি হয়। ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে ওই সরকারি কোম্পানি ৬১,৬৬৪.০৫ টন বর্জ্যকে ব্যবহার করেছে। নেডুমানগাড পঞ্চায়েত ও পৌরসভার মতো অন্যরাও একই রকমভাবে এই পদ্ধতিতে বর্জ্যকে ব্যবহার করছে।
ত্রিবান্দ্রম শহরের মধ্যেই তৈরি হয়েছে ‘বায়োকোল’। রাস্তার ধারে ক্ষুদ্র পরিসরে হাইড্রোথার্মাল রিয়াক্টর মেশিন বসিয়ে বানানো হচ্ছে ওই বিকল্প জ্বালানি। ফেলে দেওয়া প্ল্যাস্টিক বর্জ্য থেকে তৈরি হচ্ছে বায়ো কোল। ছেঁড়া চটি-জুতো, সুটকেস, ছেঁড়াফাটা কাপড় থেকে সহজে তৈরি করা হচ্ছে বায়ো কোল। যার বাজার দর ভালো। ১০০ কিলোগ্রাম পচনহীন বর্জ্য থেকে পাওয়া যায় ১৫ কিলোগ্রাম বায়ো কোল।
ত্রিবান্দ্রম শহরে ২০২৪ সালের জুলাই মাসে ৮৬ লক্ষ টাকা ব্যয়ে তৈরি হয়েছে এই বায়ো কোল প্ল্যান্ট। কেন্দ্রের স্মার্ট সিটি প্রকল্পের আওতায় কেরালার ইনো আসবিলডাঙ্গ সংস্থা তৈরি করেছে ওই যন্ত্র। স্রেফ ত্রিবান্ধব শহরে প্রতিদিন ১ টন ফেলে দেওয়া নোংরা বর্জ্য থেকে তৈরি হচ্ছে বায়ো কোল। শিল্পক্ষেত্রে তা বিকল্প জ্বালানি হিসাবে বিক্রি হচ্ছে ৫ টাকা কিলো দরে।
প্রকল্পে কর্মরতদের রোজ ওই টাকাতেই অনায়াসে দেওয়া যাচ্ছে। কোট্টায়ামেও একইভাবে তৈরি হয়েছে বড় মাপের বায়ো কোল ফ্যাক্টরি। কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের রিপোর্ট বলছে, কেরালায় প্লাস্টিক বর্জ্যের পরিমাণ ২০১৮-১৯ সালে ১৩৩,৩১৬ টন থেকে ২০২২-২৩ সালে ৭১,০০০ টনে হ্রাস পেয়েছে। আর এই ধরনের প্রকল্প সেই অপচনশীল বর্জ্যকে নামিয়ে আনতে খুব ভালো কাজ করছে।
শহরের বর্জ্যকে কত সুন্দরভাবে কাজে লাগানো যায় তা ত্রিবান্ধব কর্পোরেশনে আসলেই পরিষ্কারভাবে দেখা যায়। কর্পোরেশনের হেলথ স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারপার্সন গায়েত্রী বাবু জানিয়েছেন, কর্পোরেশন প্রতিদিন ৫০০ টন বর্জ্য সংগ্রহ করে। এর মধ্যে ৭৫ শতাংশ জৈব এবং ২৫ শতাংশ অজৈব। ২০১৩-১৪ সাল থেকে বিকেন্দ্রীকরণ পদ্ধতি গ্রহণ করার পর থেকে রাস্তার পাশে তৈরি হয়েছে থুম্বুরমুজি।
সেখানে তৈরি কম্পোজ সার বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়েছে। সারের পাশাপাশি তৈরি হচ্ছে বায়ো গ্যাস। তা পাইপের মাধ্যমে ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। প্রচলিত জ্বালানির বিকল্প হিসাবে কাজে আসছে পচনশীল বর্জ্যে তৈরি বায়ো গ্যাস। ত্রিবান্দ্রম কর্পোরেশন অপচনশীল বর্জ্যকে পৃথকীকরণ করে তা পুনঃব্যবহারের জন্য তুলে দেয় ক্লিন কেরালা কোম্পানিকে। পচনশীল বর্জ্যকে পৃথকীকরণ করতে পঞ্চায়েত কী পৌরসভা কিংবা পৌরনিগম, সব জায়গায় রয়েছে আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর ব্যবস্থা।
এবছর ৩০ মার্চ আন্তর্জাতিক শূন্য বর্জ্য দিবসে কেরালা ঘোষণা করে রাজ্যের ৯৮.৪৭% স্থানীয় সংস্থা বর্জ্যমুক্ত মর্যাদা অর্জন করেছে। ‘শূন্য বর্জ্য’ এক দশকেরও বেশি সময় ধরে কেরালার বামপন্থী সরকারগুলির একটি স্লোগান। ব্রহ্মপুরম পৌর বর্জ্য ডাম্প সাইটে অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে তৈরি জনরোষ সামলানো আর আইনি হস্তক্ষেপের পথে গিয়েই সরকারকে তৈরি করতে হয়েছে টেকসই নতুন বিকল্প। সেই শুরু, এখন চলছে সেই কাজ। রাস্তার ধার, থেকে সমুদ্র সৈকত, নদী এবং হ্রদে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ ধারাবাহিকভাবে চলছে।
রাজ্যের কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নীতি ২০১৮ বিকেন্দ্রীভূত বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উপর জোর দেওয়া হয়। ভেজা (জৈব ও পচনযোগ্য) এবং শুকনো (অজৈব ও পচনযোগ্য) বিভাগে বর্জ্য সংগ্রহ এবং পৃথকীকরণকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। কেরালায় পৌরসভার কঠিন বর্জ্যের (এমএসডব্লু) ৭০-৮০% জৈবপচনযোগ্য বর্জ্য, যা কম্পোস্ট বা বায়োগ্যাসে রূপান্তরিত করে, বিশেষ করে উৎসকেন্দ্রে। যে পরিবার এবং প্রতিষ্ঠানে বর্জ্য জমা হয়, সেখানেই নিষ্কাশন করা শুরু হয়। উৎসেই পৃথকীকরণ ও ব্যবহারের এই মডেল বেশ বিরল।
বর্জ্য উৎপাদনকারী হিসাবে নাগরিকদের জবাবদিহি করতে, কেরালা সরকার স্লোগান তুলেছিল— আমার বর্জ্য, আমার দায়িত্ব। খোলা জায়গায় বর্জ্য ফেলার ক্ষেত্রে জরিমানা বৃদ্ধির জন্য আইন সংশোধন করা হয়েছে এবং সরকারি পর্যবেক্ষণ দল গঠন করা হয়েছে। নাগরিকদের তাদের আশপাশের এলাকায় লঙ্ঘনের প্রতিবেদন করতে উৎসাহিত করা হচ্ছে। সিসিটিভি নজরদারির পাশাপাশি হোয়াটসঅ্যাপে অভিযোগের ব্যবস্থা করা হয়। নিয়ম না মেনে বর্জ্য ফেলার জন্য ২০২৪-২৫ আর্থিক বর্ষে ৫ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা আদায় হয়েছে।
এই পরিবর্তনের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন মন্ত্রী এম বি রাজেশের নেতৃত্বে কাজ করে চলা শুচিতা মিশন। কেরালার ১৪টি জেলায় ১৫০ ব্লক ও ৯৪১টি গ্রাম পঞ্চায়েত, ৯৩ শহুরে এলাকা এবং ৮৭টি পৌরসভায় একইভাবে কাজ করে চলেছে শুচিতা মিশন। এলাকাভিত্তিক সাধারণ মানুষ, সংস্থা, প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করে প্রতি ক্ষেত্রে নতুন নতুন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। কেরালা ১০০ শতাংশ বর্জ্যমুক্ত হওয়ার কাছাকাছি, ১০২১টি স্থানীয় সংস্থা মানদণ্ড পূরণ করেছে।
স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন মন্ত্রী এম বি রাজেশ দাবি করেছেন, কেরালার ১০৩৪টি স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১,০২১টি ‘বর্জ্যমুক্ত’ হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে। রাজেশ জানিয়েছেন, কেরালার ১৯,৪৮৯টি পঞ্চায়েত এবং পৌর ওয়ার্ডের মধ্যে ১৯,০৯৩টিকে বর্জ্যমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। একইভাবে, ১০৩৪টি স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১,০২১টি একই মাইলফলক অর্জন করেছে।
মন্ত্রীর মতে, এর অর্থ হলো ৯৭.৯৬ শতাংশ ওয়ার্ড এবং ৯৮.৪৭ শতাংশ স্থানীয় স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা ‘বর্জ্যমুক্ত’ শংসাপত্র অর্জন করেছে। ৩০ মার্চ আন্তর্জাতিক শূন্য বর্জ্য দিবসে এই মাইলফলক অর্জন করা হয়েছে। রাজেশ জানান, কোনও কিছু অসম্ভব নয়। আন্তর্জাতিক শূন্য বর্জ্য দিবস উপলক্ষে ৯৩৪টি গ্রাম পঞ্চায়েত, ৮২টি পৌরসভা এবং ৫টি কর্পোরেশনকে আনুষ্ঠানিকভাবে বর্জ্যমুক্ত হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।
যারা ১৩টি সরকার নির্ধারিত মানদণ্ডে কমপক্ষে ৮০ শতাংশ অগ্রগতি পূরণ করেছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞদের একটি প্যানেল প্রতিটি স্থানীয় সংস্থার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রচেষ্টা মূল্যায়ন করে তাদের সার্টিফিকেট প্রদান করে। ৯৯.২৬ শতাংশ গ্রাম পঞ্চায়েত এবং ৯৪.২৫ শতাংশ পৌরসভা সফলভাবে বর্জ্যমুক্ত মানদণ্ড পূরণ করেছে।
পরিচ্ছন্নতার জাতীয় সারণিতে মধ্য প্রদেশের ইন্দোর সব সময় এগিয়ে থাকে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সকলের জন্য ইন্দোর একটি মডেল সন্দেহ নেই। তবে ওই সাফল্য ইন্দোরের মতো শহরের মধ্যে সীমাবদ্ধ। কিন্তু কেরালা রাজ্য জুড়ে একটি ব্যাপক বর্জ্যমুক্ত উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে পেরেছে। ইন্দোরকে ছেড়ে দিলে তার আশপাশের এলাকা এমনকি মধ্য প্রদেশ রাজ্যেও একই সাফল্যের মাইলফলকে পৌঁছায়নি। কেরালা অর্জনকে অনন্য করে তুলেছে সম্পূর্ণ রাজ্যে সমানতালে তা সফল করা গেছে বলে।
কেরালা খুব শীঘ্রই ১০০ শতাংশ বর্জ্যমুক্ত মর্যাদা অর্জনের পথে এগিয়ে চলেছে। অবশিষ্ট অঞ্চলগুলিতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উন্নত করার জন্য কাজ করার সময় বর্জ্যমুক্ত এলাকায় অগ্রগতি বজায় রাখার জন্য একটি বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনা চালু করা হবে। বর্জ্য নিষ্কাশন, ব্যাপক ডিজিট্যাল ট্র্যাকিং ও পুনর্ব্যবহারযোগ্য পার্ক স্থাপনের উপর আরও বেশি জোর দেওয়া শুরু হয়েছে।
গ্রাম, শহরের মধ্যে ফারাক না থাকা কেরালাকে পরবর্তীতে সাজাতে নতুন কী কী প্রকল্প হাতে নিতে হবে তার জন্য দেড় বছর আগে গঠিত হয়েছিলো আর্বান পলিসি কমিশন। সেই কমিশন একটি ‘আর্বান পলিসি’ সরকারকে দিয়েছে। ভারতে এই প্রথম কোনও রাজ্যের জন্য আলাদাভাবে তৈরি হয়েছে এমন নীতি। বিধানসভায় এই নীতির পর্যালোচনা করার পর তা গৃহীত হবে। ওই পরিকল্পনাটি তৈরি হয়েছে শূন্য বর্জ্য লক্ষ্যকে মাথায় রেখে।
Comments :0