Zakia Jafri

জাকিয়া জাফরির জীবনাবসান

জাতীয়

 গুজরাট গণহত্যায় লড়াইয়ের মুখ জাকিয়া জাফরির জীবনাবসান হয়েছে শনিবার। নরেন্দ্র মোদীকে আদালতে টেনে নিয়ে যাাওয়া গুলবার্গ সোসাইটি গণহত্যায় বেঁচে যাওয়া জাকিয়া এদিন সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ আমেদাবাদে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। 
২০০২ গোধরা পরবর্তী গণহত্যা পর্বে আমেদাবাদের নিম্নমধ্যবিত্ত মুসলিম মহল্লায় উগ্রহিন্দুত্ববাদীদের হামলায় প্রাণ গিয়েছিল ৬৮জনের। তাঁদের মধ্যেই ছিলেন জাকিয়া জাফরির স্বামী এহসান জাফরি। কংগ্রেসের প্রাক্তন সাংসদ বার বার সাহায্য চেয়েও পাননি। এমনকি সরসসরি তিনি সেদিন খোদ মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীরও সাহায্য চেয়েছিলেন। মেলেনি কিছুই। ঘাতক বাহিনী নৃশংসভাবে কুপিয়ে মেরেছিল এহসান সহ প্রায় গোটা মহল্লাকে। তারপর দীর্ঘ আইনি লড়াই চালিয়ে গেছেন এই লড়াকু মহিলা। হয়ে উঠেছেন গুজরাট গণহত্যার পীড়িতদের লড়াইয়ের প্রেরণা। সেই আইনি লড়াইয়ে জাকিয়া জাফরির সদাসঙ্গী ছিলেন সমাজকর্মী তিস্তা শীতলবাদ।
এদিন জাকিয়া জাফরির মৃত্যুর খবর প্রথমে সামনে আনেন ওই তিস্তা শীতলবাদাই। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি জানান, ‘মানবাধিকার আন্দোলনের সহানুভূতিশীল নেত্রী জাকিয়া জাফরি আধ ঘণ্টা আগেই প্রয়াত হয়েছেন। এই দেশ, তাঁর পরিবার, বন্ধু , গোটা বিশ্বই তাঁর অভাব অনুভব করবে।’ ছেলে তনবীর, মেয়ে নিসরিন, দুরিয়াপ্পা সহ সমস্ত নাতি-নাতনি সহ সকলের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে তিস্তা লিখেছেন,‘শক্তি আর শান্তিতে ঘুমাও, জাকিয়া আপা।’ মার্কিন-নিবাসী মেয়ে নিসরিন এখন মায়ের সঙ্গে আমেদবাদেই ছিলেন। পরে সুরাটনিবাসী ছেলে তনবীরমায়ের মৃত্যুর কথা জানিয়েছেন। পরিবার সূত্রে খবর, সম্ভবত এহসান জাফরির পাশেই সমাধিস্ত করা হবে জাকিয়া জাফরিকে।
২০২৩ সাল পর্যন্ত জাকিয়া জাফরি প্রতি বর্ষপূর্তি আসতেন গুলবার্গ সোসাইটিতে তাঁর সেই ঘরে। সেই ২০০৬ সাল থেকে গুজরাট সরকারের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক আইনি লড়াই চালালতে চালাতে জাকিয়া হয়ে উঠেছেন গণহত্যা মামলায় ন্যায়বিচারের লড়াইয়ের মুখ।  জাকিয়ার মামলার জেরে ২০০৮ সালে সুপ্রিম কোর্ট গুলবার্গ সোসাইটি সহ ৯টি গণহত্যার নতুন করে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল। পরে জাকিয়া জাফরি মোদী সহ ৬৩ জনেকে বিশেষ তদন্তকারী দলের ক্লিনচিট দেওয়াকে চ্যালেঞ্জ জানিায়ে ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, গুজরাট হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। ২০২২ সুপ্রিম কোর্ট অবশ্য সেই আরজি খারিজ করে দেয়। সেই রায়েই বিচরপতি মদল লোকুরের মন্তব্যের জেরে গুজরাট পুলিশ মুম্বাই থেকে তুলে নিয়ে তিস্তা শীতলবাদকে গ্রেপ্তার করে। ৭০ দিন জেলে থাকার পর ছাড়া হয় তাঁকে।

Comments :0

Login to leave a comment