CAA NOTIFICATION VIJAYAN

সিএএ: জারি বিজ্ঞপ্তি, কেরালায় প্রয়োগ না করার ঘোষণা বিজয়নের

জাতীয়

পিনারাই বিজয়ন।

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ’র বিধি সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে কেন্দ্র। আইন পাশ হলেও প্রতিবাদের মুখে চার বছর বিধি পাশ করতে পারেনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। লোকসভা নির্বাচনের মুখে, সোমবার, সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে বিধি চালু করার সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ রাতে বলেছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আরেকটি প্রতিশ্রুতি পালন করলেন। ধর্মীয় কারণে নিপীড়িত হয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া মানুষকে নাগরিকত্ব দেওয়ার ব্যবস্থা হলো।’’
বিরোধীরা শাহের বক্তব্যের প্রতিবাদ করেছেন। এই আইন ধর্মনিরপেক্ষ ভারতে প্রথমবার নাগরিকত্বের ক্ষেত্রে ধর্মীয় পরিচয়ের উল্লেখ করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মতো বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী রাজ্যে মতুয়া ভোটকে নজরে রেখে এই প্রতিশ্রুতি দিয়ে গিয়েছে বিজেপি। তৃণমূল কংগ্রেস আবার এই পরিস্থিতিকে ব্যবহার করেছে মেরুকরণে। 
সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো সদস্য এবং পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম স্পষ্ট করে বলেছেন যে আসল লক্ষ্য হলো ভোটের আগে রাজনৈতিক মেরুকরণ। চার বছর আগে আইন পাশ করলেও বিধি হয়নি। তবে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি এবং তৃণমূলের মেরুকরণের কৌশল এবার কাজে দেবে না। 
পলিট ব্যুরোর অপর সদস্য এবং কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন জানিয়েছেন কেরালায় এই আইন প্রয়োগ করা হবে না। বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ‘‘সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনে মুসলিম সংখ্যালঘুদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক বিবেচনা করা হয়েছে। কেরালায় এই আইন প্রয়োগ করা হবে না। কেরালা একজোটে এই সাম্প্রদায়িক বিভাজনের আইনকে প্রতিহত করবে।’’
আইনে পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তানে ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার মানুষকে নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে ধর্মের উল্লেখ করে। হিন্দু, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ, খ্রীস্টান এবং পার্সিদের নাগরিকত্ব দেওয়া হলেও মুসলিমদের উল্লেখ নেই। 
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, নাগরিকত্বের আবেদনের জন্য পোর্টাল তৈরি। তবে ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার প্রমাণের জন্য কী করতে হবে অমিত শাহ স্পষ্ট করেননি। বিভিন্ন অংশই বলেছে যে শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার সদিচ্ছা থেকে এই আইন হয়নি। মুসলিমদের হেনস্তার রাস্তা করা হয়েছে, যেমন এনআরসি’র বেলা হয়েছিল। মন্ত্রকের আধিকারিকদের নাম না করে পিটিআি জানাচ্ছে, কোনও নথিপত্র দাখিল করতে হবে না।
সোমবার দুপুরের কিছু পর থেকেই কেন্দ্র সংবাদমাধ্যমে সিএএ চালুর প্রচার চালাতে থাকে। বিজ্ঞপ্তি জারির সিদ্ধান্ত জানানো হলেও মন্ত্রক বা কেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে কেউ বিবৃতি দেননি। রাতের দিকে অমিত শাহ বিবৃতি দিয়ে জানান যে বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে।  
নাগরিকত্ব নিয়েই জাতীয় নাগরিক পঞ্জী বা এনআরসি আসামে চালু করে বিজেপি। দেখা গিয়েছিল, বহুদিনের বাসিন্দাদের ডিটেনশন ক্যাম্পে নেওয়া হয়েছে। বিপন্ন হয়েছেন সব ধর্মের গরিব মানুষ। আসামে এদিনই প্রতিবাদে ডাক দিয়েছে বিভিন্ন সংগঠন। 
বিজয়ন বলেছেন, ‘‘বিভাজনের জন্য, সাম্প্রদায়িক ভাবাবেগে হাওয়া দেওয়ার জন্য এবং সংবিধানের মৌলিক বোঝাপড়াকে অগ্রাহ্য করার জন্য কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের এই পদক্ষেপ। সংবিধানের বেপরোয়া লঙ্ঘন করে কেবল অ-মুসলিমদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে যারা ২০১৪’র ৩১ ডিসেম্বরের আগে ভারতে এসেছেন। কেবল বেছে নিয়ে মুসলিমদের বাদ দেওয়া হয়েছে।’’
বিজয়ন বলেছেন, ‘‘এর আগে রাজ্য ঘোষণা করেছিল যে জাতীয় জনসংখ্যা পঞ্জী বা এনপিআর কেরালায় প্রয়োগ করা হবে না। সিএএ’র অসাংবিধানিক চরিত্র নির্দিষ্ট করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের হয়েছে। রাজ্যবাসী দীর্ঘ রাস্তায় মানববন্ধনও করেছেন।’’

Comments :0

Login to leave a comment