পুলিশের যুক্তি সাত ঘন্টা ধরে তারা চাকরিহারাদের বুঝিয়েছেন অবস্থান তুলে নেওয়ার জন্য। কিন্তু চাকরিহারারা তাদের কথা শোনেনি। সুপ্রতিম সরকারের কথায়, ‘‘গণতান্ত্রিক আন্দোলন করার অধিকার সবার আছে। কিন্তু সাত ঘন্টা ধরে সরকারি কর্মীদের বিনা অপরাধে আটকে রাখা কোন গণতান্ত্রিক আন্দোলন হতে পারে না। আন্দোলনের নাম করে কেউ কাউকে আটকে রাখতে পারে না।’’
পুলিশের কথায় বিকাশ ভবনের কর্মীদের বাইরে আনার জন্য তারা বল প্রয়োজ করতে বাধ্য হয়েছেন। তাদের কথায় আন্দোলনকারিদের অনুরোধ করা হলেও তারা কর্মীদের বাইরে আসতে দেয়নি। অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পুলিশের অভিযোগ আন্দোলনকারিরা বিকাশ ভবনের কর্মী এবং পুলিশের ওপর হামলা করে।
উল্লেখ্য জাভেদ শামিম এবং সুপ্রতিম সরকার দুজনে বলছে হালকা বল প্রয়োগ করা হয়েছে। কিন্তু বাস্তব চিত্র বলছে অন্য কথা। পুলিশের আঘাতে অনেকের মাথা ফেটে গিয়েছে। অনেকে পায়ে, হাতে এমনকি চোখে চোট পেয়েছেন। বিভিন্ন ফুটেজে দেখা গিয়েছে পুলিশের লাঠির আঘাতে মাটিতে পড়ে থেকে কাতড়াচ্ছে আন্দোলনকারিরা। এই সবের পরও পুলিশের যুক্তি তারা হালকা বল প্রয়োগ করেছে।
এদিন সুপ্রতিম সরকার জানিয়েছেন ১৯ জন পুলিশ কর্মী আহত হয়েছেন গতকালের ঘটনায়। গতকাল সকালে যখন চাকরিহারা বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন তখন পুলিশে সামনেই তাদের ওপর চড়াও হন তৃণমূলে নেতা সব্যসাচী দত্ত এবং তার অনুগামীরা। সেই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘‘অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উনি কাজের জন্য বিকাশ ভবনে এসেছিলেন। তাকে প্রথম বেআইনি ভাবে আটকান আন্দোলনকারিরা। ওনাকে হেনস্তা করা হয়।’’ বিভিন্ন ফুটেজে ছবিতে দেখা যখন দেখা যাচ্ছে সব্যসাচীর অনুগামীরা মারছেন আন্দোলনকারিদের, সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের ওপর চড়াও হচ্ছে তখণ পুলিশ বলছে অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখবে। আবার এই পুলিশ বলছে তাদের কাছে বিভিন্ন ফুটেজ আছে সেই ফুটেজ দেখে সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করার অপরাধে আন্দোলনকারিদের বিরুদ্ধে স্বতপ্রনোদিত মামলা করা হয়েছে। কার্যত তৃণমূল নেতা এবং তার বাহিনীকে আড়াল করছে পুলিশ।
জাভেদ শামিম বলেন, ‘‘পুলিশের পক্ষ থেকে স্বতপ্রনোদিত মামলা দায়ের করা হয়েছে। যারা কাল আটকে ছিলেন তারা সবাই সরকারি কর্মী। তাদের বাড়ি ফিরে যাওয়া তাদের অধিকার। অনেক মহিলা কর্মী আটকে ছিলেন। যাদের চাকরি গিয়েছে তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল পুলিশ। চাকরিহারাদের কষ্ট আমরা বুঝি। কিন্তু মনে রাখতে হবে সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করা অপরাধ।’’ সুপ্রতিম সরকারের মতো তিনিও বলেন, ‘‘পুলিশের উদ্দেশ্য ছিল আটকে থাকা কর্মীদের নিরাপদে বাইরে নিয়ে আসা।’’
Comments :0