EDITORIAL FOR 22nd MARCH

ছে‍‌লেখেলা

সম্পাদকীয় বিভাগ

editorial teacher recruitment scam bengali news

প্রায় এক বছর আগে মমতা ব্যানার্জির সরকারের অ‍‌ভিনেতা শিক্ষামন্ত্রী বিজ্ঞের মত মন্তব্য করেছিলেন কেন্দ্রীয় শিক্ষানীতি নাকি তৈরি হয়েছে আমেরিকার মিসিগান ও অ্যারিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুকরণে। এই নীতি তৃণমূল সরকার মানবে না। তারপর মন্ত্রী মহোদয়ের মুখ থেকে শিক্ষানীতি সংক্রান্ত কোনো বাণী নিঃসৃত হয়নি। তবে এইটুকুই শুধু জানা গেছে শিক্ষানীতি চর্চা করে জ্ঞানগর্ভ মতামত দেবার জন্য দশজন পণ্ডিত অধ্যাপককে নিয়ে কমিটি হয়েছে।

তাদের কেউ কেউ নাকি বিদেশেও শিক্ষকতা করেন। অবশ্য তারা মিসিগান বা অ্যারিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ান কিনা জানা যায়নি। কমিটির অন্যতম সদস্য পুরান চর্চায় ব্রতী নৃসিংহবাবু অনেক কষ্টে স্মরণ করতে পেরেছেন মাস তিনেক আগে তারা একটি রিপোর্ট সরকারের কাছে জমা দিয়েছেন। তারপর সেই রিপোর্ট সম্পর্কে তিনি কোনো খোঁজ রাখেননি। সরকার গ্রহণ করল না বাতিল করল সেটাও তিনি জানেন না। 

তাদের রিপোর্ট একটা দেবার কথা দিয়েছেন। তারপর সেটা নিয়ে আলোচনা পর্যালোচনা হলো না ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়া হল কারো মাথাব্যথা নেই। তাজ্জব ব্যাপার! শিক্ষানীতির মত একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যার উপর দেশের ভবিষ্যত সেটা এমন হেলাফেলার বিষয় হয়ে পরিত্যক্ত হলো। যে বিশেষজ্ঞরা ‘বিশেষভাবে চর্চা’ করে রিপোর্ট তৈরি করলেন পরিণতি নিয়ে উদাসীন। অথচ ২০২০ সালে আরএসএস-র পরিকল্পনা অনুযায়ী যখন মোদী সরকার নতুন শিক্ষানীতির খসড়া প্রকাশ করে বর্তমান শিক্ষাসূচি ও শিক্ষা ব্যবস্থার খোলনলচে বদলে ফেলার সুপারিশ করে তখন তার বিরুদ্ধে অন্যদের সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে ছিলেন এরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও। 

এখন মোদী সরকারের কাছ থেকে যখন রাজ্যে রাজ্যে তাদের নতুন শিক্ষানীতি অনুসরনের চিঠি পৌঁছেছে তখন মমতার সরকার অম্লান বদনে তাকে শিরোধার্য করে রাজ্যের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে এবছর থেকেই কেন্দ্রীয় শিক্ষানীতি অনুসরণ করার নির্দেশ দিয়েছে।

তাহলে যে শিক্ষামন্ত্রী বলেছিলেন কেন্দ্রীয় শিক্ষানীতি মানা হবে না। রাজ্যের নিজস্ব শিক্ষানীতি তৈরি হবে। সেটাকি তিনি মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বলেছিলেন, নাকি নিজে নিজেই বলেছিলেন। আজ তাঁর দপ্তর কেন্দ্রীয় নীতি অনুসরণের যে নির্দেশ বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে পাঠিয়েছে সেটার নির্দেশ কে দিয়েছে? শিক্ষামন্ত্রীর মুখে রা কাড়ার উপায় নেই। তিনি তো পুতুল মাত্র, যেমন নাড়ায় তেমন নড়েন। 

মাঝখানে যে কমিটি গড়া হলো, তারা যে রিপোর্ট দিলো তাতে কি‍‌ লেখা আছে মুখ্যমন্ত্রী বা শিক্ষামন্ত্রী আদৌ পড়ে দেখেছেন কি? সেই রিপোর্টে কি কেন্দ্রীয় নীতি অনুসরণের সুপারিশ করা হয়েছে? নাকি বিরোধিতা করে ভিন্ন নীতির সুপারিশ আছে? তা জনগণকে জানানো হলো না। সরকার শিক্ষার বিষয়েও ‍‌স্বৈরাচারি কায়দায় মাতব্বরের ভূমিকা পালন করছে। মানুষের মতামত জানার প্রয়োজন বোধ করছে না। এখানেও কি সেই ইডি-সিবিআই-র্ ভয়ে মোদী সরকারের নির্দেশ নীরবে ও গোপনে অক্ষরে অক্ষরে মেনে নিচ্ছে।

Comments :0

Login to leave a comment