মঙ্গলবার সন্ধ্যাবেলা কলকাতার শ্যামবাজারে সুভাষচন্দ্র বসুর মূর্তিতে মালা দিয়ে কলকাতা অভিযান শুরু করেছেন নরেন্দ্র মোদী। শ্যামবাজার থেকে বেরিয়ে, মোদীর রোড শো হয় উত্তর কলকাতায় স্বামী বিবেকানন্দের বাড়ি অবধি। বুধবার সকালে কলকাতা সফর সেরে উড়ে যাবেন প্রধানমন্ত্রী।
এর মধ্যেই সংবাদমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে মোদীর ধ্যান প্রকল্প। ৩০ মে এবং ১ জুনের মাঝে তামিলনাডুর কন্যাকুমারীতে ধ্যানে বসবেন তিনি। ৩০ জুন শেষ হবে এবারের প্রচার।
রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, ১ জুন সপ্তম তথা শেষ দফার নির্বাচন। পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা, উত্তর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগণার মোট ৯টি আসনে সেদিন ভোট হবে। কলকাতা শহর সহ পার্শ্ববর্তী এই অঞ্চলে রামকৃষ্ণ মিশন এবং মিশনের ভক্তদের প্রভাব রয়েছে। সেই প্রভাবকে ভোটের বাক্সে তুলতেই কন্যাকুমারীতে ধ্যানে বসবেন মোদী। তাছাড়া বারবার স্বামী বিবেকানন্দকে রাজনীতির ছকে ব্যবহার করতে চেয়েছেন মোদী।
ভারত সফরে বেরিয়ে কন্যাকুমারীতে ধ্যান করেছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ। উত্তর কলকাতা কেন্দ্রে বিবেকানন্দের বাসভবনে প্রচারের দিনই তাই নিজের ধ্যান প্রকল্প নিয়ে খবর ছড়ালেন মোদী।
ওয়াকিবহাল মহল মনে করাচ্ছে, মনুবাদী ভাবধারায় অনুপ্রাণিত জাত-পাতের সমীকরণকে ঘৃণা করতেন বিবেকানন্দ। তিনি অস্পৃশ্যতাকে ‘জাতের কারাগার’ বলেই মনে করতেন। জাত-ধর্ম-বর্ণের বিভাজনের ঊর্ধ্বে উঠে গোটা ভারতের উন্নতির স্বপ্ন দেখতেন। ধর্ম প্রচারক হলেও বিবেকানন্দের বক্তব্যে বহুত্বের স্বীকৃতি রয়েছে। সে কারণে তিনি বন্দিত। ঠিক উলটো চিন্তা আর সংকীর্ণতার প্রচার করেও মোদী হাতিয়ার করছেন সেই বিবেকানন্দকেই।
এই অংশের মতে, বিবেকানন্দের মতের সঙ্গে সিকিভাগ সংযোগ নেই বিজেপি এবং আরএসএস’র হিন্দুত্ববাদের। কেবলমাত্র নির্বাচনী ফায়দা তুলতে স্বামী বিবেকানন্দের মত ব্যক্তিত্বকে ব্যবহার করতেও দুইবার ভাবছে না আরএসএস-বিজেপি।
মোদীর ধ্যানযাত্রাকে কটাক্ষ করেছেন ছাড়েননি কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ। তিনি সোশ্যাল মিডিয়া এক্সে লিখেছেন, ‘‘শুনলাম ৩০ মে এবং ১ জুনের মাঝে কন্যাকুমারীর বিবেকানন্দ স্মারকে ধ্যান করতে যাবেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী। তাঁকে মনে করিয়ে দেওয়া, ২০২২ সালের ৭ সেপ্টেম্বর, কন্যাকুমারী থেকে আমরা ভারত জোড়ো যাত্রা শুরু করেছিলাম। এখন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী সেখান থেকেই নিজের অবসর জীবন শুরু করতে চলেছেন।’’
এর আগে মোদীর এমন ধ্যানের খবর ও ছবি মিডিয়ায় ছড়িয়েছিল। তবে সেবার হিমালয়ের গুহায় বসেছিলেন।
Comments :0