শনিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরে নির্বাচনী সন্ত্রাসে ঘরছাড়া বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে দেখা করতে আসেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেখানে সাংবাদিক বৈঠক করেন তিনি। সাংবাদিকরা তাঁকে প্রশ্ন করেন, বারুইপুরে এলেও ভাঙড়ে যা্চ্ছেন না কেন তিনি?
এর উত্তরে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘‘নওসাদ তো নিজের দলের কর্মীদের ভুল বুঝিয়েছেন। ওঁরা প্রচার করেছে বিজেপি সাম্প্রদায়িক। আমি ভাঙড়ে যেতেই পারি, কিন্তু তার আগে তো আমার জন্য ভাঙড়ের দরজা খুলে দিতে হবে। ‘নো ভোট টু মমতা’ স্লোগান তুলতে হবে।’’
এর উত্তরে আইএসএফ’র তরফে এক ভিডিও বার্তা প্রকাশ করা হয়। সেখানে নওশাদ বলেন, “আমি তো প্রথম দিন থেকে মমতা ব্যানার্জির রাজনীতির সমালোচনা করে আসছি। ২০২১ বিধানসভা নির্বাচন কিংবা চলতি বছরের পঞ্চায়েত নির্বাচন- প্রতিক্ষেত্রে আমরা তৃণমূলকে ভোট না দেওয়ার প্রচার করেছি। আবার কি রাস্তা করে দেব ওনার আসার? তাঁর আসার রাস্তা করে দেওয়ার আমি কে? তিনি দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।”
একইসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘‘আইএসএফ প্রথম থেকে বলে এসেছে মমতা ব্যানার্জি কিংবা তৃণমূলকে ভোট দেওয়া বাংলার রাজনৈতিক স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী নয়। তৃণমূলকে মানুষ যত প্রত্যাখ্যান করবে, তৃণমূল যত কম ভোট পাবে, ততই বাংলায় গণতন্ত্র শক্তিশালী হবে। বাংলার মানুষ আইএসএফ’র এই ভূমিকার সঙ্গে পরিচিত। তাই ‘নো ভোট টু মমতা’ বলার প্রয়োজন আমাদের নেই। ওতে কোন কাজও হবে না।’’
রাজ্যের বিরোধী দলনেতাকে নিজের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন করে দিয়ে নওশাদ আরও বলেছেন, তিনি বর্তমানে যে পদে রয়েছেন, সেই পদের দায়িত্ব সারা রাজ্যের মানুষের জন্য কথা বলা। তিনি শুধু বিজেপি’র হয়ে কথা বলবেন, এমনটা হতে পারে না। তাঁর উচিত সিপিআই(এম), আইএসএফ, কংগ্রেস, বিজেপি বিচার না করে, সারা রাজ্যের মানুষ, যাঁরা এই সরকারের অত্যাচারে অতিষ্ঠ, তাঁদের হয়ে কথা বলা।
নওশাদের আরও সংযোজন, ‘‘আমরা আমাদের কর্মীদের ভুল বোঝাই না। তাঁরা রাজনীতি বোঝেন এবং স্বেচ্ছায় আইএসএফকে সমর্থন করেন।’’
ওয়াকিবহাল মহলের মতে, প্রশাসনিক এবং রাজনৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার করে ভাঙড়ে আইএসএফকে বেঁধে ফেলতে চাইছে তৃণমূল। এই অবস্থায় বিজেপি চেষ্টা করছিল, তাঁদের ‘অসহায়তা’র সুযোগে তাঁদেরকে বিজেপি’র দিকে টেনে নেওয়ার। রাজ্যের বিরোধী রাজনীতির পরিসরে টিকে থাকতে গেলে বিজেপি’র শরণ নিতে হবে, কারণ তৃণমূলের বিরোধিতা করার ক্ষমতা রয়েছে একমাত্র বিজেপি’র- এই তত্ত্বও খাড়া করার চেষ্টা করেছিলেন শুভেন্দু।
আইএসএফ প্রথম থেকে তৃণমূলের পাশাপাশি বিজেপির সাম্প্রদায়িক চরিত্র নিয়েও সমান সরব। বামফ্রন্ট, কংগ্রেস এবং আইএসএফ জোট দুই শক্তির বিরুদ্ধেই লাগাতার প্রচার চালিয়েছে। সেই প্রচারের ফলে গ্রাম বাংলার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বিজেপি প্রভাব বৃদ্ধি করতে পারেনি।
Comments :0