SHILTON PAUL

আসছেন ময়দানের 'বাজ পাখি', এক্সক্লিউসিভ সাক্ষাৎকারে শিল্টন পাল

খেলা

indian football calcutta football league Rainbow  sports shilton paul bengali news

আর মাত্র কয়েক ঘন্টার অপেক্ষা। শুরু হতে চলেছে কলকাতা ফুটবল লিগ। আর এইবার, রেনবো অ্যাথলেটিক ক্লাবের জার্সিতে মাঠে নামতে দেখা যাবে বঙ্গ গোলরক্ষক শিল্টন পাল'কে

তবে ময়দানে তিনি বাজপাখি নামেও পরিচিত। সেই শিল্টন পালের সঙ্গেই একেবারে নিখাদ ফুটবলীয় আড্ডা। এক্সক্লিউসিভ সাক্ষাৎকারে সঙ্গী গণশক্তি ডিজিটাল।  গণশক্তি ডিজিটালের হয়ে সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন শুভঙ্কর দাস। 

গণশক্তিঃ দীর্ঘদিন সবুজ মেরুনের হয়ে দুরন্ত ফুটবল খেলা শিল্টন পাল এবার রেনবো অ্যাথলেটিক ক্লাবে। কেন?

শিল্টন পালঃ শেষবছর কলকাতা লিগের মূলপর্বে কোয়ালিফাই করেছে রেইনবো অ্যাথলেটিক ক্লাব। মোহনবাগানে ১৪ বছর কাটানোর পর, আমি চার্চিল ব্রাদার্সের হয়ে ২ বছর খেলেছি। এবারও ওঁরা আমাকে অফার করেছিল। কিন্তু কিছুটা পারিবারিক কারণেই যাওয়া হয়নি। প্রাথমিকভাবে কলকাতা লিগ খেলার কোনও পরিকল্পনা ছিল না। কিন্তু পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত বদলাই। তার একটা কারণ হল আদিত্য গ্রুপ, অর্থাৎ আদিত্য গ্রুপ অফ স্পোর্টস। তাঁদের স্কুল এবং রেস্টুরেন্টও রয়েছে। এই গ্রুপের মালিক অনির্বাণ আদিত্য এবং অঙ্কিত আদিত্য, দুজনকেই অনেকদিন ধরে আমি চিনি। কোচ হিসেবে এই দলের দায়িত্বে রয়েছেন প্রাক্তন ফুটবলার দেবজিৎ ঘোষ। তাঁদের সবার সঙ্গে অনেকক্ষণ বৈঠকের পর, এই সিদ্ধান্তটা আমি নিয়েছি।

গণশক্তিঃ ইউথ ডেভেলপমেন্ট নিয়ে কি ভাবছে তাঁরা?  

শিল্টন পালঃ বাংলা ফুটবল নিয়ে হয়ত অনেকেই ভাবছেন। তবে ইউথ ডেভেলপমেন্ট নিয়ে সঠিকভাবে এগোতে কিন্তু কাউকেই দেখা যাচ্ছে না। কিন্তু এইসমস্ত বেসিক বিষয়গুলো নিয়ে আদিত্য গ্রুপ ভাবছে। তাঁরা অনূর্ধ্ব-১৬ এবং অনূর্ধ্ব-১৭ সহ যুব দলগুলি নিয়ে কাজ করছে। তাঁদের নিজেদের রেসিডেন্সিয়াল অ্যাকাডেমি রয়েছে। খেলো ইন্ডিয়ার বেশ কিছু ফুটবলার উঠে এসেছে এই অ্যাকাডেমি থেকে। শুধু ফুটবল নয়, সেইসঙ্গে পড়াশোনারও বন্দোবস্ত রয়েছে। এডুকেশন এবং ফুটবল, দুটি দিকেই ওঁরা ফোকাস করছে। এই প্রোজেক্টটি সারাবছর ধরে চলে। ক্রিকেট নিয়েও তাঁরা ভাবছেন। প্রাক্তন মহিলা ক্রিকেটার ঝুলন গোস্বামী এবং প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ও যুক্ত রয়েছেন আদিত্য গ্রুপ অফ স্পোর্টসের সঙ্গে।  

গণশক্তিঃ আপনি পুরো বিষয়টিকে কিভাবে দেখছেন?  

শিল্টন পালঃ  শুধুমাত্র কলকাতা লিগ নয়, আমি অন্যান্য প্রোজেক্টগুলোতেও মেন্টর হিসেবে কাজ করব। রেইনবো অ্যাথলেটিক ক্লাব একটা বড় প্ল্যাটফর্ম। যেখানে ইউথ ডেভেলপমেন্ট পদ্ধতির মধ্যে দিয়ে উঠে আসা ফুটবলাররা সুযোগ পাবে। আমার মনে হয়না এইরকম সুযোগ অন্য কোনও ক্লাব এখনও পর্যন্ত দিয়েছে বলে। এইরকম একটা উদ্যোগের পাশে অবশ্যই আমাদের মতো সিনিয়র প্লেয়ারদের থাকা উচিৎ।

গণশক্তিঃ কেমন লাগছে এতদিন পর ময়দানে ফিরে?

শিল্টন পালঃ   আমার আর নতুন করে কিছু প্রমাণ করার নেই। এমনকি চার্চিলে থাকাকালীনও আমি গোয়া লিগে খেলিনি, শুধু আই লিগে খেলেছি। এইবছর কলকাতা লিগটা একটু অন্যরকম। একসঙ্গে ২৬টি টিম খেলছে। প্রিমিয়ার-এ এবং প্রিমিয়ার-বি ডিভিশন এক হয়ে গেছে। মোহনবাগান এবং ইস্টবেঙ্গলও খেলছে। মোহনবাগানের সিনিয়র টিমেরও কিছু প্লেয়ার জয়েন করেছে রিজার্ভ দলের সঙ্গে। সব দলগুলো ভালো টিম করেছে। সবথেকে বড় ব্যাপার, বিদেশিহীন কলকাতা লিগ হতে চলেছে। প্রচুর ভারতীয় ফুটবলার উঠে আসবেন। যাঁরা খেলবে সবাই ভারতীয়। এইবছর আইএফএ কলকাতা লিগটাকে একটু অন্যরকমভাবে ফোকাস করেছে।

সবমিলিয়ে দেখতে গেলে, আমার মনে হয়েছে যে যদি আমি এই টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করতে পারি, তাহলে খুবই ভালো হয়। অবশ্যই আমরা ফুটবলাররা যখন মাঠে নামি, তখন বরাবর ১০০% দেওয়ারই চেষ্টা করি। সেইসঙ্গে,  লক্ষ্য থাকে জেতার এবং সেরা পারফরম্যান্স করার। আমিও সেই আশা নিয়েই মাঠে নামব। চেষ্টা করব আমার সেই পুরনো জায়গাটাকে ধরে রাখার।

গণশক্তিঃ দল নিয়ে কতটা আশাবাদী?

শিল্টন পালঃ দল নিয়ে অবশ্যই আশাবাদী। প্রতিটা দলই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য খেলে। আমি যতবার যেই দলেই খেলেছি, অবশ্যই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্যেই খেলেছি। তার জন্য প্রথম স্টেপ সুপার সিক্সে যাওয়া। আমাদের টিমের প্রথম টার্গেট থাকবে সুপার সিক্স। সুপার সিক্সে যখন যাবো, তারপর চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্যে এগোবো। এই দলে অনেক প্রতিভাবান  ফুটবলার রয়েছে। আমার মনে হয়, এখান থেকে অনেক প্লেয়ার আগামীদিনে উঠে আসবে।

বলা যেতে পারে, নতুন দলের জার্সি গায়ে কলকাতা লিগে নামতে একেবারে মুখিয়ে রয়েছেন এই বঙ্গ গোলরক্ষক। আদিত্য স্কুল অফ স্পোর্টস রেইনবো অ্যাথলেটিক ক্লাবের গোলকিপার, তথা ময়দানের বাজপাখি শিল্টন পালের জন্য রইল আমাদের তরফ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।

Comments :0

Login to leave a comment