WEST BENGAL PANCHAYAT ELECTION

সুরক্ষা নিয়ে উদ্বিগ্ন জেলাশাসকরাই

রাজ্য জেলা

CPIM west bengal panchayat election TMC BJP বাঁকুড়ার রানীবাঁধে খাঁ খাঁ করছে মনোনয়ন পত্র জমা নেওয়ার হল। নেই কোনও আধিকারিক।

মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর্বে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে উদ্বেগ উঠে এল খোদ রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে জেলাশাসকদের বৈঠকে। তড়িঘড়ি নির্বাচনের দিন ঘোষণা করে শুক্রবারই রাজ্যের সব জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারের সঙ্গে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা অনলাইনে বৈঠক করেন। 

সূত্রের খবর, বেশ কয়েক জন জেলাশাসক ব্লক অফিসে আগামী ছয় দিন মনোনয়নপত্র তোলা ও জমা দেওয়ার জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা যাতে নিশ্চিত করা যায়, সেই প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। 


এদিন কার্যত কোনও প্রস্তুতি ছাড়াই রাজ্যের প্রতিটি ব্লকে মনোনয়নপত্র তোলার কাজ শুরু করতে বাধ্য হয় জেলা প্রশাসন। তার মধ্যে পুলিশের পরিবর্তে সিভিক ভলান্টিয়ারদের ব্লক অফিসে নিরাপত্তার জন্য পাঠানো হতে থাকে। উত্তরবঙ্গের এক জেলাশাসক নির্বাচন কমিশনারের কাছে মনোনয়নপত্র তোলার সময়ে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থার দাবি জানান সরাসরি। দক্ষিণবঙ্গের এক জেলাস্তরের আধিকারিক জানান, ‘‘শুরুর দিন বলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের তরফে মনোনয়নপত্র তোলার জন্য ভিড় হয়তো ছিল না, কিন্তু শনিবার থেকে এই ভিড় বাড়বে। তার জন্য নিরাপত্তার আয়োজন সম্পূর্ণ রাখাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’’ 


সূত্রের খবর, বৈঠকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে জেলাশাসকদের নিশ্চিন্ত থাকতে বলেছেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার। প্রশাসনিক কোনও প্রস্তুতি ছাড়াই মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া নিয়ে বৈঠকে বেশ কিছু জেলাশাসক অসুবিধার কথা জানান। 

জেলাশাসকদের আশঙ্কাকে উড়িয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘‘আপনারা কোনও অপরাধবোধে ভুগবেন না। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য যে সময় দেওয়া হয়েছে, তা আইন মেনেই করা হয়েছে। সুষ্ঠুভাবে রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট করার জন্য কমিশন প্রস্তুত।’’


তবে এদিন রাজ্যের কোথাও রাজ্য নির্বাচন কমিশনের নির্ধারিত সূচী মেনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার কাজ শুরু করা যায়নি। তার অন্যতম কারণ, মনোনয়নপত্র তোলার আগে প্রার্থীদের আমানত জমা দিয়ে ডিসিআর (ডুপ্লিকেট কার্বন রিসিপ্ট) সংগ্রহ করতে হয়।

মনোনয়নপত্র তোলার সময়ে অধিকাংশ ব্লক অফিসেই ডিসিআর ছিল না। সরকারি ট্রেজারি থেকে ডিসিআর সংগ্রহ করতে হয়। পঞ্চায়েত ভোটের জন্য ব্যবহৃত ডিসিআর আলাদাভাবে নথিভুক্ত করার নিয়ম। ডিসিআর না থাকার ফলে পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়নের পর্বের প্রাথমিক কাজটাই এদিন শুরু করা যায়নি। 

বেশ কিছু জায়গা থেকে প্রশাসনের কাছে ভোটার তালিকা না থাকার খবরও এসেছে। আবার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর পিআরও বা পঞ্চায়েত রিটার্নিং অফিসারের সিলমোহরও তৈরি ছিল না। ফলে মনোনয়নপত্র জমা পড়ার পর তার কপি প্রার্থীর হাতে তুলে দেওয়ার কোনও সুযোগ ছিল না। 


শুক্রবার থেকেই রাজ্যে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন সংগ্রহ ও জমা দেওয়ার পর্ব শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। ন্যূনতম প্রস্তুতি না থাকায় বৃহস্পতিবার রাতে পঞ্চায়েত কর্মচারীদের হোয়াটসঅ্যাপে জানিয়ে শুক্রবার সকাল ৮টার মধ্যে ব্লক অফিসে ডেকে নেওয়া হয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল, মনোনয়নপত্র তোলা ও জমা দেওয়ার সময় শুরুর আগে কর্মচারীদের তালিম দেওয়ার কাজ শেষ করা। 

এদিন উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন জেলার সব ব্লকে কর্মচারীদের জড়ো করে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে অনলাইনে প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করে। বেলা ১১টা গড়িয়ে যাওয়ার পরও চলতে থাকে প্রশিক্ষণ। রাজ্যের বহু জেলাতেই এই ঘটনা ঘটে।


ফলে রাজ্যের কোথাও এদিন ১১টা থেকে নির্বাচন কমিশনের বিজ্ঞপ্তি মেনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার কাজ শুরু করা যায়নি। বেলা ২টো গড়িয়ে যায় কাজ শুরু করতে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, পঞ্চায়েত ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ার পর গ্রাম পঞ্চায়েতের দপ্তরে নোটিশ আকারে তা প্রকাশ করতে হয়। মনোনয়নপত্র জমা থেকে প্রত্যাহার পর্যন্ত দিনক্ষণ জানিয়ে পিআরও-কে বাধ্যতামূলকভাবে ‘ফরম ১’ গ্রাম পঞ্চায়েতের নোটিশ বোর্ডে টাঙাতে হয়। কিন্তু ২৪ ঘন্টা পার হয়ে গেলেও সেই কাজই হয়নি। 

Comments :0

Login to leave a comment