Dr. Shantanu Sen

মামলা হাইকোর্টে, শান্তনু সেনের রেজিস্ট্রেশন বাতিলে অন্তর্দ্বন্দ্ব দেখছেন চিকিৎসক নেতা

রাজ্য

তুচ্ছ কারণে অতি সক্রিয়তা দেখাচ্ছে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল। যার পিছনে রয়েছে তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্ব। রয়েছে আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসক-ছাত্রীকে হত্যার ঘটনাও। 
তৃণমূলের নেতা চিকিৎসক শান্তনু সেনের রেজিস্ট্রেশন বাতিল প্রসঙ্গে এই অভিমত জানিয়েছেন চিকিৎসক আন্দোলনের নেতা ডাঃ উৎপল ব্যানার্জি।  
ভুয়ো ডিগ্রি ব্যবহার করেন তৃণমূলের রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ ডাঃ শান্তনু সেন। সেই অভিযোগে তাঁর রেজিস্ট্রেশন বাতিল করেছে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল। সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টে মামলাও দায়ের করেছেন তৃণমূলের এই নেতা। আগামী সোমবার শান্তনু সেনের দায়ের করা মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে। এই ঘটনাকে তীব্র নিন্দা করেছে অ্যাসোসিয়েশন অব হেলথ সার্ভিস ডক্টর্স বা এএইচএসডি। 
রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের অভিযোগ, নিয়মবহির্ভূত ভাবে বিদেশী ডিগ্রি ব্যবহার করতেন শান্তনু। 
এএইচএসডি পশ্চিমবঙ্গের সাধারণ সম্পাদক ডাঃ উৎপল ব্যানার্জি বলেন, "শান্তনু সেনের যে কারণে লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে তা যুক্তিপূর্ণ নয়। মেডিক্যাল কাউন্সিল যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটা আমরা মনে করছি অতি তুচ্ছ কারণে তারা একটা অতি সক্রিয় আচরণ করছে।" 
শান্তনু সেন বলেছেন যে তাঁর রেজিস্ট্রেশন কেউ যদি চক্রান্ত করে কেড়ে নিতে চাইলে তিনি চুপ করে বসে থাকবেন না। তিনি আইনি পথ বেছে নেবেন জানিয়েছিলেন সিদ্ধান্তের পরপরই।  
পুরো ঘটনায় তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্ব দেখছেন ডাঃ উৎপল ব্যানার্জি। তিনি বলেছেন, "শান্তনু সেনের যেহেতু একটি রাজনৈতিক দল করেন এবং যারা মেডিক্যাল কাউন্সিলের দায়িত্বে রয়েছেন তাঁরাও সেই রাজনৈতিক দলের সঙ্গেই যুক্ত। এটা তাদের অন্তর্দ্বন্দ্বের প্রকাশও হতে পারে। কিন্তু আমরা আশঙ্কা করছি যে তুচ্ছ কারণে শান্তনু সেনের রেজিস্ট্রেশন বাতিলের মত অতি সক্রিয়তা এই মেডিকেল কাউন্সিল দেখাচ্ছে।’’
চিকিৎসক আন্দোলনের নেতা ডাঃ ব্যানার্জি বলেছেন, ‘‘আমাদের মনে হচ্ছে অভয়া কাণ্ডের পর যে চিকিৎসকরা সরকারের দুর্নীতি দুষ্কৃতী চক্রের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন, যাঁরা পথে নেমেছেন, তাঁদের অনেককেই এরকম তুচ্ছ কারণে হেনস্তা করা হতে পারে, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।"
ডাঃ ব্যানার্জি আরও বলেছেন, "২০১৮ সালে শান্তনু সেন ও নির্মল মাঝির নেতৃত্বে মেডিক্যাল কাউন্সিলের যে নির্বাচন সংঘটিত হয়েছিল সেই ভোটে তারা লুট করে জেতার চেষ্টা করেছিলেন। সেই ভোট লুটের প্রমাণ আমরা হাইকোর্টে জমা করি। মহামান্য হাইকোর্ট সেই ভোটে স্থগিতাদেশ দেয়। পরবর্তীকালে ২০২২-এ যাঁরা মেডিক্যাল কাউন্সিলে নির্বাচিত হন তাঁরা ২০১৮ থেকে ১০ গুণ বেশি দুর্নীতি করে কাউন্সিলের দখল নিয়েছেন।’’
উল্লেখ্য, গত বছরের আগস্টে আর জি কর হাসপাতালের মধ্যে কর্তব্যরত অবস্থায় খুন করা হয় চিকিৎসক ছাত্রীকে। তার বিরুদ্ধে সব অংশের চিকিৎসকদের পাশাপাশি রাস্তায় নামেন রাজ্যের মানুষ। দেখা যায় তৃণমূলের শান্তনু সেন সে সময়ে দলেরই চিকিৎসক নেতাদের একাংশের বিপক্ষে মুখ খুলছেন। তৃণমূলের ভেতরে ক্ষমতার লড়াই যার কারণ বলে মনে করেছেন সংশ্লিষ্ট মহলের বড় অংশ।   
এদিন ডাঃ ব্যানার্জি বলেছেন, ‘‘এখন যারা মেডিক্যাল কাউন্সিলের সদস্য, তাঁদের অনেকের বিরুদ্ধেই অভয়া হত্যাকাণ্ডে যুক্ত থাকার  অভিযোগ রয়েছে। মেডিক্যাল কাউন্সিল পুরোটাই আসলে দুর্নীতিগ্রস্তদের আখড়া।’’

Comments :0

Login to leave a comment