কার্গিল যুদ্ধের তিনদিন পর ‘রিভিউ কমিটি’ গঠন করেছিল তৎকালিন অটল বিহারি বাজপেয়ী সরকার। অপারেশন সিঁদুরের পর তেমন কোন কমিটি বর্তমান মোদী সরকার করবে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন তুললো কংগ্রেস।
মঙ্গলবার কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে ভারত পাকিস্তান সংঘাত এবং পাক শধিকৃত কাশ্মীর নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে যেই বিবৃতি দেওয়া হয়েছে তার পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে সরকারকে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকতে হবে তার পাশাপাশি সংসদের একটি বিশেষ অধিবেশন ডাকার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে লোকসভার প্রধান বিরোধী দলের পক্ষ থেকে।
এদিন এক্সহ্যান্ডেলে কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ জয়রাম রমেশ লেখেন, ‘‘কার্গিল যুদ্ধের তিন দিনের মাথায় বাজপেয়ী সরকার জুলাই ২৯, ১৯৯৯ সালে কার্গিল রিভিউ কমিটি গঠন করে। ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০০০ সালে তার রিপোর্ট পেশ হয় সংসদে। মোদী সরকারও কি এই একই কাজ করবেন?’’
উল্লেখ্য বাজপেয়ী কমিটির প্রধান ছিলেন বর্তমান বিদেশ মন্ত্রী এস জয়শঙ্করের বাবা কে সব্রহ্মমনিয়াম।
মার্কিন রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প দাবি করেন যে তার হস্তক্ষেপে ভারত এবং পাকিস্তান দুই দেশের মধ্যে পরমানু যুদ্ধ বন্ধ হয়েছে। তার দাবি দুই দেশ পরমানু অস্ত্র ব্যবহারের পথে হাঁটতে চলছিল। তিনি দাবি করেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে দুই দেশের কাছে বলা হয় যে তারা যদি যুদ্ধ বিরতির পথে হাঁটে তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দুই দেশের সাথে বানিজ্য বাড়াবে।
এদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যখন দাবি করছে তার হস্তক্ষেপে দুই দেশের মধ্যে সংঘাতের পরিস্থিতি ঠিক হয়েছে, তখন ভারত সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে দুই দেশের ডিজিএমওদের আলোচনার ভিত্তিতে যুদ্ধ বিরতি সিদ্ধান্তে আসা সম্ভব হয়েছে। তবে গতকাল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জাতির উদ্দেশ্যে যেই ভাষণ দিয়েছেন তাতে তিনি একবারের জন্যও উল্লেখ করেননি যে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার ভিত্তিতে যুদ্ধ বিরতিতে আসা সম্ভব হয়েছে।
প্রায় বাইশ মিনিটের ভাষণে তিনি যদিও দ্বিপাক্ষিক বোঝাপড়ায় আমেরিকার হস্তক্ষেপ সম্পর্কে একটি কথাও বলেননি। পহেলগামে সন্ত্রাসবাদী হামলার পরিপ্রেক্ষিতে সংসদের বিশেষ অধিবেশনের দাবি প্রসঙ্গেও একটি শব্দও উচ্চারণ করেননি। যদিও এই পর্বে সব দলের অবস্থান এবং দেশবাসীর ঐক্যের প্রশংসা করেছেন তিনি।
মোদী বলেছেন, আজকের সময় যুদ্ধের নয়। আবার আজকের সময় সন্ত্রাসবাদেরও নয়। সন্ত্রাসবাদকে বিন্দুমাত্র বরদাস্ত না করার নীতিতেই বিশ্বের সমৃদ্ধি নিশ্চিত হতে পারে।
মোদী বলেছেন, সন্ত্রাস এবং আলোচনা, সন্ত্রাস এবং বাণিজ্য একসঙ্গে চলবে না। ‘পানি অর খুন’ একসঙ্গে বয়ে যেতে পারে না। মোদী আন্তর্জাতিক স্তরে বার্তা দিয়ে বলেন, দু’পক্ষে কথা হলে সন্ত্রাস নিয়েই হবে, পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর নিয়েই হবে। তিনি বলেছেন, ‘নিউক্লিয়ার ব্ল্যাকমেল’ কৌশল কাজ করবে না।
গত শনিবার বিকেল ৫টা থেকে সংঘর্ষবিরতি চালু হয় দুই দেশের সামরিক বাহিনীর ডিজিএমও স্তরে বার্তালাপের পর। কিন্তু রবিবার আমেরিকার রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প সংঘর্ষ বিরতির কৃতিত্ব জাহির করত নেমে পড়েন। সেদেশের উপরাষ্ট্রপতি এবং বিদেশ সচিবরাও জানান যে দু’দেশের শীর্ষস্তরে সংঘর্ষ বিরতির জন্য কথা চালিয়েছেন তাঁরাই। ট্রাম্প বলেছেন, সংঘর্ষ বিরতি না মানলে ব্যবসা বন্ধের হুশিয়ারি দেয় আমেরিকা। বামপন্থীদের সঙ্গে দেশের বিভিন্ন অংশ তৃতীয় পক্ষের এই সক্রিয়তায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সেই উদ্বেগ দূর করার চেষ্টাই করেননি জরুরি ভাষণে।
MODI
বাজপেয়ীর মতো মোদীও তৈরি করবেন ‘রিভিউ কমিটি’ প্রশ্ন কংগ্রেসের

×
Comments :0