পাঠানকোট এবং মুম্বাইয়ে সন্ত্রাসবাদী হামলার তদন্তে সহযোগিতা করেনি পাকিস্তান। নিরপেক্ষ তদন্তের প্রস্তাব দেওয়া হলেও বাস্তবে তদন্তে বাধা তৈরি করাই উদ্দেশ্য ছিল।
পহেলগামের ঘটনায় পাকিস্তানের নিরপেক্ষ তদন্তের প্রস্তাব খারিজের যুক্তিতে একথা বলল ভারত। গত ২২ এপ্রিল পহেলগামে সন্ত্রসবাদী হামলার পর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ নিরপেক্ষ তদন্তের প্রস্তাব দিলেও ভারত তা খারিজ করে।
বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে সাংবাদিক সম্মেলনে ভারতের বিদেশসচিব বিক্রম মিসরি বলেছেন, ২০১৬’র পাঠানকোট হামলার পর ভারত পাকিস্তানের তদন্ত দলকে এলাকায় ঢুকতে দেয়। বিভিন্ন তথ্য এবং প্রমাণ দেওয়া হয়। কিন্তু তদন্ত এগতে দেওয়া হয়নি।
এদিন রাতে জম্মুতে ব্ল্যাকআউট ঘোষণা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গিয়েছে জম্মু শহরে। বিমানবন্দরের কাছেও পাকিস্তানের ড্রোন চিহ্নিত করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। এরপরই জম্মুর আলো নিভিয়ে দেওয়া হয়। সেনা জানিয়েছে পাকিস্তানের একাধিক ড্রোনকে নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে।
মিসরি বলেছেন, ২০০৮-এ মুম্বাই হামলার পরও বহু তথ্য দেওয়া হয়। জীবিত অবস্থায় লস্কর-ই-তৈবার এক সন্ত্রাসবাদী ধরাও হয়। তারপরও সন্ত্রাসবাদের ঘাঁটি ভাঙতে ব্যবস্থা নেয়নি পাকিস্তান।
গত মঙ্গলবার রাতে ভারতীয় সেনার আক্রমণে ৩১ জন নিরস্ত্র নাগরিকের প্রাণহানি হয়েছে বলে বিবৃতি দিয়েছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ।
বৃহস্পতিবার এই প্রসঙ্গে মিসরি বলেন, সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন ছবিতে দেখা গিয়েছে ভারতের আক্রমণের পর কফিনে জাতীয় পতাকায় মুড়ে নিহতদের শেষকৃত্য হচ্ছে। সেনাদের কাঁধে করে কফিন বইতে দেখা যাচ্ছে। নিরস্ত্র নাগরিকদের মৃত্যুতে কী রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষকৃত্য হয়?
মিসরি বলেন, সন্ত্রাসবাদীদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেওয়া পাকিস্তানের নীতি হতে পারে। কিন্তু নিহতদের সবাই নিরস্ত্র নাগরিক নয়।
পাকিস্তান ভারতের যুদ্ধবিমান গুলি করে নামানোর দাবি জানিয়েছে। সেই দাবিকে মেনে না নিলেও এদিন কোনও মন্তব্য করা হয়নি সাংবাদিক সম্মেলনে।
ভারত এবং পাকিস্তানের সংঘাতে মধ্যস্থতার বার্তা দিয়েছে আমেরিকা। ফক্স নিউজ জানিয়েছে ওয়াশিংটনে ভারতের রাষ্ট্রদূত মোহন কোয়তরা মার্কিন বিদেশমন্ত্রকের কাছে এই প্রস্তাবে সমর্থন না করার বার্তা দিয়েছেন। তিনি কূটনৈতিক স্তরে আবেদন জানিয়েছেন যাতে আমেরিকা পাকিস্তানকে সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটি ভেঙে ফেলার জন্য ব্যবস্থা নিতে চাপ দেয়।
আমেরিকার সংবাদমাধ্যমে ভারতের রাষ্ট্রদূত বলেছেন, জঘন্য হত্যাকাণ্ডের অপরাধীদের বিচারের জন্য অপারেশন চালানো হয়েছে।
নয়াদিল্লিতে মিসরি পাকিস্তানের ‘নিরপেক্ষ তদন্তের’ প্রস্তাব খারিজ করার পক্ষে যুক্তি দিয়েছেন।
সিন্ধু জলচুক্তি প্রসঙ্গে বলেছেন, এই চুক্তি চয় দশ আগে সই হয়েছে। প্রযুক্তির পরিবর্তনের কারণেই চুক্তিতে সংশোধনের প্রয়োজন। ভারত তা নিয়ে দু’বছর ধরে চিঠি দিয়েছে। কিন্তু কোনও উদ্যোগ নেওয়া হলেই পাকিস্তান তা আটকে দিয়েছে।
Terrorism Investigation
জম্মুতে ব্ল্যাকআউট, পাঠানকোট-মুম্বাইয়ের তদন্তে সহায়তা করেনি পাকিস্তান, বললেন বিদেশসচিব

×
Comments :0