মাত্র ১২ মাসে ৯৬ হাজার ৯১৭!
নিয়ম ভেঙে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে গিয়ে আটক হয়েছেন ঠিক এতজন ভারতীয়। আমেরিকার শুল্ক ও সীমান্ত সুরক্ষা তথ্য জানাচ্ছে গত কয়েক বছরে অবৈধ অভিবাসনের চেষ্টায় ধৃত ভারতীয়ের সংখ্যা বেড়েছে ৫ গুন।
২০১৯-২০ অর্থবর্ষে কাগজপত্র ছাড়াই আমেরিকার সীমান্ত পার হতে গিয়ে আটক হন ১৮ হাজার ৮৮৩ ভারতীয়। ২০২০-২১ অর্থবর্ষে এই সংখ্যা ৩০ হাজার ৬৬২। ২০২১-২২ অর্থবর্ষে আটক ভারতীয়ের সংখ্যা ছিল ৬৩ হাজার ৯২৭।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনীর তথ্য জানাচ্ছে, ২০২২’র অক্টোবর থেকে ২০২৩’র সেপ্টেম্বরে সীমান্তে আটক ভারতীয়ের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৯৬ হাজার ৯১৭। যার মধ্যে ৩০ হাজার ১০ জনকে আটক করা হয়েছে আমেরিকা-কানাডা সীমান্তে। মেক্সিকো-আমেরিকা সীমান্তেও আটক হয়েছে ৪১ হাজার ৭৭০ জন ভারতীয়।
ধৃতদের মধ্যে কেউ কেউ আমেরিকায় নথিভুক্ত ভারতীয় নাগরিকের পরিবারের সদস্য পরিচয় দিয়ে ঢুকে পড়তে চেয়েছিলেন। কখনই নাবালক ধরা পড়েছে, যাদের কোনও পরিবারের সদস্য বলে দেখানো হয়েছিল। আবার কোনও কোনও ক্ষেত্রে একক ব্যক্তিই আটক হয়েছেন সীমান্ত পেরিয়ে ঢুকতে গিয়ে। আটকদের মধ্যে এমন ব্যক্তিই সবচেয়ে বেশি।
আয় এবং জীবিকার খোঁজেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মতো দেশে অবৈধ অভিবাসন হয় বিভিন্ন সময়ে। সীমান্তে কড়াকড়ির জেরে বিভিন্ন দেশের নাগরিকরাই ধরা পড়েন। কিন্তু অবৈধ পথে সীমান্ত পেরতে মরিয়া ভারতীয়ে সংখ্যা ২০১৯ থেকে ২০২৩’র মধ্যে প্রায় ৫ গুন হলো কেন, তা নিয়ে আলোচনা রয়েছে যথেষ্টই।
মার্কিন সংসদে বিশেষ করে রক্ষণশীলরা অভিবাসনকে ব্যবহার করে আবার নাগরিকদের মধ্যে শঙ্কা ছড়াতে তৎপর। কারণ মজুরি ও কাজের হাল ভাল নয় মার্কিন মুলুকেও। অবৈধ অভিবাসন মূলত কম দক্ষতার কাজে মজুরি কমিয়ে দেয়, চলছে প্রচার। মার্কিন সেনেটে এই আলোচনাও হয়েছে যে এমন বহু ভারতীয় চারবার বিমান বদলে আমেরিকার সীমান্তে পৌঁছেছেন। ভারত থেকে ফ্রান্সে গিয়েছেন। আবার ফ্রান্স থেকে ধরেছেন মেক্সিকোর উড়ান। মেক্সিকো থেকে বাসে চড়িয়ে সীমান্তের কাছে নিয়ে আসা হয়েছে আনেককে। ফাঁক বুঝে পার করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে।
অবৈধ অভিবাসীর সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ায় প্রশ্নের মুখে রয়েছে ভারতে বিজেপ সরকারের একের পর এক প্রচার। গার্হস্থ্য কাজকেও কর্মনিযুক্তি ঘোষণা করে সরকারি সমীক্ষায় মহিলাদের বড় অংশকে কর্মরত দেখানো হয়েছে। অথচ ভারতে স্নাতকদের প্রায় ৪০ শতাংশ কর্মহীন। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিএমআইই’র তথ্য জানাচ্ছে ভারতে কর্মহীনতা আরও খারাপ হয়েছে, বেকারির হার ১০ শতাংশ ছাড়িয়ে গিয়েছে।
বড় অংশের মত, জীবনমানের যোগ্য মজুরিতে কাজের খোঁজ কম বলেই ঝুঁকি নিয়ে অভিবাসন বাড়ছে।
Comments :0