Fake Seeds And Crop Insurance: Farmers Are Fuming

জাল বীজে ফসলহানি, ফসল বিমায় মেলে না ক্ষতিপূরণ

জাতীয়

Fake Seeds And Crop Insurance Farmers Are Fuming ত্রিশূরে সারা ভারত কৃষক সভার সর্বভারতীয় সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন তেলেঙ্গানার প্রতিনিধি।

প্রসূন ভট্টাচার্য

সরকারি খামার থেকে মিলছে না বীজ। বীজ কিনতে হচ্ছে খোলা বাজার থেকে। বীজের গুণমান বুঝতে পারছেন না কৃষকরা। বাজারে বিক্রি হচ্ছে ভুয়ো বীজ। মার খাচ্ছে ফলন। ঠিক সেই সময়েই হাত তুলে নিচ্ছে বেসরকারি বিমা সংস্থা। প্রায় সব ক্ষেত্রেই প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমা যোজনার ফয়দা মিলছে না কৃষকদের। 

সারা ভারত কৃষক সভার সম্মেলনে প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, গোটা দেশেই চলছে এই সমস্যা। ফসলবিমা নিশ্চিত করতে বৃহস্পতিবারই বিশেষ প্রস্তাব পাশ করেছে সম্মেলন। 

ত্রিশূরে সম্মেলনে যোগ দিতে আসা রাজস্থান থেকে জম্মু ও কাশ্মীরের সংগঠকরা এই সমস্যা নিয়ে সরব হয়েছে। তেলেঙ্গানার কৃষক নেতৃবৃন্দ জানাচ্ছেন, বেসরকারি বহু সংস্থা ভুঁইফোড় ব্যবসায়ী বাজারে বীজ বিক্রি করছে। কৃষকদের কাছে খবর থাকছে না কোনটা আসল বা নকল। সরকারি নজরদারি নেই। চাষ করার পর দেখা যাচ্ছে ফসল উঠছে না। অথচ উপকরণের খরচ বাবদ টাকা তখন বেরিয়ে গিয়েছে। 

রাজস্থানের কৃষকনেতারা সে রাজ্যের হনুমানগড়ের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন। গম চাষ মার খেয়েছিল কৃষকদের। এক্ষেত্রে জাল বীজের বিষয় ছিল না। কিন্তু বেসরকারি বিমা সংস্থা টাকা দিতে নারাজ। সংস্থার তরফে জানানো হয় যে উপগ্রহ থেকে তোলা ছবির ভিত্তিতে ফসলের হিসেব তাদের কাছে রয়েছে। সেই হিসেবের নিরিখে বানানো হয়েছে ক্ষতিপূরণ বাবদ অর্থ দেওয়ার মাপকাঠি। 

কৃষকনেতারা বলছেন, ফসল বিমার নামে আসলে সরকারি কোষাগার থেকে দেশি-বিদেশি বিমা সংস্থাগুলিকে টাকা পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কোম্পানি ঠিক করে দিচ্ছে ঠিক কী শর্তে মিলবে ক্ষতিপূরণ। বাস্তবে ফসলহানির ঘটনায় তেমন কোনও শর্ত পূরণ করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ফলে টাকা চলে যাচ্ছে সংস্থাগুলির হাতে। কিষান ক্রেডিট কার্ডে ঋণ নিলেই বাধ্যতামূলক ভাবে একটি অংশ কেটে নেওয়া হচ্ছে বিমার প্রিমিয়াম বাবদ। 

জম্মু ও কাশ্মীরের কৃষকনেতারাও জানাচ্ছেন ফসল বিমায় ক্ষতিপূরণ না পাওয়ার যন্ত্রণা। তেলেঙ্গানার প্রতিনিধি সম্মেলনে বলেছেন, কৃষি উৎপাদন পুরোপুরি বেসরকারি ক্ষেত্রের উপর নির্ভরশীল করে দিতে চাইছে কেন্দ্র এবং বিভিন্ন রাজ্যের সরকার। রাজ্যে সরকারি কৃষি খামার পরিকাঠামো ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। সরকারি ব্যবস্থাপনায় বীজ দেওয়া হচ্ছে না। তার সুযোগ নিচ্ছে ভুইফোঁড় জালিয়াতরা। এমনকি বাজারে বীজের নামে যা বিক্রি হচ্ছে তার ওপর নজরদারি করার দায়ও আর নিচ্ছে না সরকার। 

 রাজস্থান, জম্মু ও কাশ্মীরের কৃষক আন্দোলনের সংগঠকরা বলছেন, বিমার পরিকাঠামো থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত বিমা সংস্থাগুলিকে বাদ দেওয়া হয়েছে। বেসরকারি বিমা সংস্থাগুলির একমাত্র কাজ মুনাফা করা। কৃষি বা কৃষককে রক্ষা করার সামাজিক দায় এদের নেই। দেশের সরকার এই কোম্পানিদের পাহারা দিচ্ছে। মার খাচ্ছে কৃষকরা। 

সম্মেলনে গৃহীত প্রস্তাবে বলা হয়েছে, কৃষকের কাজে লাগে এমন বিমা প্রকল্প তৈরি করতে হবে। কৃষক আন্দোলনে বিমা বা বীজের মতো বিষয়গুলি বাড়তি গুরুত্ব পাবে। 

(ছবি: দিলীপ সেন) 

Comments :0

Login to leave a comment