জানা অজানা
দৈত্যকার মৌমাছি
তপন কুমার বৈরাগ্য
নতুনপাতা
পৃথিবীতে সবচেয়ে বড় প্রজাতির মৌমাছির নাম এপিস ডরসাটা
মৌমাছি।বিরাট আকারের জন্য একে দৈত্যকার মৌমাছি বলে।
রানি এপিস ডরসাটা মৌমাছি, শ্রমিক ও পুরুষ মৌমাছির
চেয়ে আকারে বেশ বড় হয়।তবে রানি নাম হলে কি হবে,
এদের গায়ের রঙ কালো হয়।শ্রমিক এপিস ডরসাটা মৌমাছিদের
চেয়ে পুরুষ মৌমাছিদের দেখতে খুব সুন্দর। একটা দলে কিন্তু
দশহাজার মৌমাছি থাকে। এদের দেখা যায় ইন্দোনেশিয়া,
মায়ানমার,মালয়েশিয়া এবং ভারতের পাহাড়ী অঞ্চলে ।
এরা মাটি থেকে ২০থেকে ৪০মিটার উঁচুতে বাসা বাঁধে।
এরা উন্মুক্ত স্থানে,শক্ত গাছের উঁচু ডালে,পাহাড়ের গুহায়
চাক বাঁধে।এক একটা চাক কিন্তু এক মিটার বা তারো বেশি লম্বা হয়।শুনলে অবাক হতে হয় এক একটা চাক থেকে চল্লিশ পঞ্চাশ
কেজি মধু পাওয়া যায়। মধুর চাকটা দেখতে হয় চিরুনির মতো।
রানি মৌমাছির ওজন প্রায় পঁচিশ গ্রাম পর্যন্ত হতে পারে।
পুরুষ এবং শ্রমিক মৌমাছির ওজন তুলনামূলকভাবে কম হয়।
এক একটা মৌচাক থেকে চল্লিশ- পঞ্চাশ কেজি মধু পাওয়া গেলেও এই মধুও স্বাদে গন্ধে অতুলনীয়। এপিস ডরসাটা মৌমাছি
খুবই আক্রমনাত্ম।শত্রু দেখলে এরা তেড়ে যায়। মাত্র দু-তিনটে
শ্রমিক মৌমাছির আক্রমনে একজন মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হতে
পারে।তাই মধুসংগ্রহকারীদের যথেষ্ট সাবধানতার সঙ্গে এদের
মধু সংগ্রহ করতে হয়। এরা কোনো রকমে বিশ্রাম না নিয়ে
একটানা দুশো কিমি পর্যন্ত উড়ে গিয়ে নতুন স্থানে গিয়ে চাক
বাঁধে।রানি মৌমাছি নতুন চাকে গিয়ে ডিম পাড়ে। ডিম ফুটে
পূর্ণাঙ্গ মৌমাছি হতে এমমাস মতন সময় লাগে। কোনো রকমে
আঘাতপ্রাপ্ত না হলে এরা প্রায় আট-দশ বছর বাঁচে।
এরা সামাজিক প্রাণী হলেও এরা গৃহপালিত নয়।
সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় রানি,শ্রমিক,পুরুষ এই তিনধরনের
মৌমাছিদের দেখতে আলাদা আলাদা।যা অন্য কোনো মৌমাছিদের
মধ্যে দেখা যায় না।
Comments :0