Samik Lahiri

জনতাকে সঙ্গে নিয়ে মৌলবাদ, সাম্রাজ্যবাদের মোকাবিলা করতে হবে: শমীক লাহিড়ী

রাজ্য

মঙ্গলবার বর্ধমানে কমরেড নিরুপম সেন স্মারক আলোচনায় বলছেন শমীক লাহিড়ী।

শঙ্কর ঘোষাল: বর্ধমান

মৌলবাদকে কখনো সাম্রাজ্যবাদের বিপদ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেখা উচিত নয়। তাহলে আমাদেরও লিবিয়া, সিরিয়ার মতো অবস্থা হবে। কমরেড নিরুপম সেনের মতো নেতৃবৃন্দের দেখানো পথেই আমাদের সাম্রাজ্যবাদ ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে এক সাথে লড়াই করে যেতে হবে। 
মঙ্গলবার কমরেড নিরুপম সেন স্মারক বক্তৃতায় একথা বলেছেন সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও ‘গণশক্তি’-র সম্পাদক শমীক লাহিড়ী। 
এদিন বর্ধমানের পার্কাস রোডে কমরেড নিরুপম সেন কক্ষে ‘ভারতীয় উপমহাদেশে মৌলবাদের বিপদ ও বামপন্থীদের কর্তব্য’ শীর্ষক আলোচনাসভায় বক্তব্য রাখেন তিনি। কমরেড নিরুপম সেনের লড়াই ও জীবনের বিষয়ে আলোকপাত করেন সিপিআই(এম) পূর্ব বর্ধমান জেলা সম্পাদক সৈয়দ হোসেন। 
লাহিড়ী বলেন, ‘‘সাম্রাজ্যবাদ ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে এই লড়াই আমরা একা লড়তে পারব না। ব্যাপক অংশের মানুষকে যুক্ত করতে হবে। এদের বিরুদ্ধে লড়াই কঠিন। আবার সব অংশের মানুষের উপর এরা আক্রমণ করে। তাই সব মানুষকে নিয়েই এই অশুভশক্তিকে পরাজিত করতে হবে।’’ কমরেড নিরুপম সেন ১৯৬৮ সালে পার্টি সদস্যপদ অর্জন করেন। তার ত্রিশ বছরের মধ্যে তিনি পার্টির পলিট ব্যুরো সদস্য হন। প্রয়াত হন ২০১৮ সালে। 
শমীক লাহিড়ী বলেছেন, দেশে সংখ্যাগুরু মৌলবাদী শক্তি যা করছে এটা ধর্ম নয় শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রকল্প। হিন্দু ধর্ম ও হিন্দুত্ববাদের মধ্যে মিল নেই। তেমনই মুসলিম মৌলবাদ যা করছে তার সাথে ইসলাম ধর্মের মিল খুঁজে পাবেন না। মৌলবাদের কাজ একটাই, আতঙ্ক তৈরি করা। লুটের প্রক্রিয়া তৈরির জন্য ধর্মের নামে ভাষার নামে, জাতির নামে মানুষকে বিভক্ত করা। অস্ত্র দিয়ে মানুষকে খুন করা। সিআইএ এবং আমেরিকার নেতৃত্বাধীন যুদ্ধজোট ‘ন্যাটো’-র এখন মূল লক্ষ্য ভারতীয় উপমহাদেশের দখল নেওয়া। লুটেরা পুঁজি ও সাম্রাজ্যবাদ চায় কোনও দেশ বা সেদেশের মানুষ যাতে ঘুরে দাঁড়াতে না পারে। ওরা চায় দাসত্ব তৈরি করতে। রুটি-রুজির  লড়াই থেকে মানুষকে বিচ্ছিন্ন করতে। দেশে দেশে মৌলবাদকে ব্যবহার করছে লগ্নীপুজি ও সাম্রাজ্যবাদ। তাই সাম্রাজ্যবাদের সাথে সাথে মৌলবাদের বিরুদ্ধে এক সাথে লড়তে হবে আমাদের। 
তিনি বলেছেন, ফ্যাসিস্ট শক্তি চায় তাকে যেন কোন ভাবেই কেউ চ্যালেঞ্জ করতে না পারে। তাই বিশ্ববিদ্যালয়গুলি ওদের বড় শত্রু। মৌলবাদীদের বিরুদ্ধে বড় চ্যালেঞ্জ, জ্ঞানের আলোয় শিক্ষিত হওয়া, জ্ঞানের চর্চা, নতুনের চর্চা, যুক্তির ভিত্তিতে জীবনবোধ তৈরি করা যাবে না। কুসংস্কার, ধর্মান্ধতা বিরোধিতা করলেই তাদের নির্মূল করতে চায় মৌলবাদ। তিনি বলেছেন, গুজরাটে দাঙ্গার পর আমরা ভেবেছি যে মানুষ এত নৃশংস হতে পারে?  মৌলবাদ মানুষে মানুষে বিদ্বেষ তৈরি করে। বাংলাদেশের মৌলবাদীরা বলছে কলকাতা দখল করব। আবার কলকাতায় শুভেন্দু অধিকারীরা বলছে চট্টগ্রাম দখল করবো। আদানি ১৩টির বেশি বন্দরের দখল নিয়েছে। চট্টগ্রাম একটি গুরুত্বপূর্ণ বন্দর। এখানে সারা বছর গড়ে ২৫ মিটার জলের গভীরতা থাকে ফলে বড় জাহাজ ভিড়তে সুবিধা। এছাড়া একমাত্র শ্রীলঙ্কাতে এই সুবিধা আছে। লোলুপ দৃষ্টি পড়েছে চট্টগ্রাম বন্দরের উপর। আসলে ওরা আদানিদের মতো আসল শক্তিকে মেঘের আড়ালে পাঠিয়ে রাখে। তাই মৌলবাদীর এক সুর। মানুষকে সাথে নিয়ে  মৌলবাদকে জনগন থেকে বিচ্ছিন্ন করতে হবে। 
এদিন সভায় এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পার্টির রাজ্য কমিটির সদস্য অমল হালদার, অচিন্ত্য মল্লিক সহ  নেতৃবৃন্দ।

Comments :0

Login to leave a comment