জানা অজানা
বুদ্ধদেবের চিকিৎসক
তপন কুমার বৈরাগ্য
নতুনপাতা
বুদ্ধদেব ,বিম্বিসার এবং বৌদ্ধ ভিক্ষুকদের চিকিৎসক
ছিলেন জীবক।সেই সময় তিনি পৃথিবী বিখ্যাত চিকিৎসক
ছিলেন । তাঁর সম্পূর্ণ নাম জীবক কুমার ভট্ট।
খ্রিস্টপূর্ব ৫৪০ সনে মগধের রাজধানী রাজগৃহ নগরীতে
তিনি জন্মগ্রহণ করেন। সেই সময় মগধ ছিলো শিক্ষা
দীক্ষায় একটা শ্রেষ্ঠ স্থান। এই রাজগৃহের বর্তমান নাম
রাজগির।জীবক অজাতশত্রু,বিম্বিসারের সমসাময়িক
ছিলেন। জীবকের একটা বিরাট আমবাগান ছিলো।
এই আমবাগানের একটা ছোট্ট কুটিরে তিনি বাস
করতেন। তিনি ভগবান বুদ্ধকে এই আমবাগানটা দান
করেছিলেন।ভগবান বুদ্ধ এই বনের কিন্তু নাম দেন
জীবক আম্রবন।এই বনে ভগবান বৌদ্ধ এবং তাঁর
ভিক্ষুকেরা বেশ কিছুদিন বাস করেছিলেন।
এখানে বৌদ্ধ ভিক্ষুকেরা এবং ভগবান বুদ্ধ অসুস্থ হলে
তিনি তাঁর আয়ুর্বেদ চিকিৎসার মাধ্যমে তাঁদের ভালো
করে তুলতেন।একবার বুদ্ধদেব খুব অসুস্থ হয়ে পড়েন।
জীবক তাঁর চিকিৎসার দ্বারা তাঁকে দ্রুত সুস্থ করে তোলেন।
বুদ্ধদেবের তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা শতগুন বেড়ে যায়।পরে জীবক
তাঁর কাছে বৌদ্ধ ধর্মে দীক্ষা নেন।
জীবকের জন্মের পর তাঁর মা তাঁকে একটা আস্তাকুঁড়েতে
ফেলে দিয়ে যান। মায়ের নাম ছিল শলাবতী।সেদিন সেই
পথ দিয়ে যাচ্ছিলেন বিম্বিসারের পুত্র অভয়কুমার।
তিনি সেই রাস্তা দিয়ে যেতে যেতে সদ্যজাতকে আস্তাকুঁড়েতে
দেখলেন।ভাবলেন শিশুটা হয়তো মৃত। তাই তিনি
শিশুটার প্রতি কোনো ভ্রুক্ষেপ না করে এগিয়ে যেতে
লাগলেন।হঠাৎ পিছন থেকে শুনতে পেলেন শিশুটার
কান্নার ধ্বনি।তিনি আবার ফিরে এলেন।শিশুটা তখনো
কাঁদছে।তিনি প্রথমে ভেবেছিলেন শিশুটা মৃত।পরে
দেখলেন জীবিত।তাই তাঁর নাম রাখলেন জীবক।
তিনি জীবককে কোলে পিঠে করে মানুষ করেন।
তাঁকে শিক্ষিত করেও তিনি গড়ে তোলেন।
তখনকার শ্রেষ্ঠ বিদ্যা প্রতিস্থান ছিলো তক্ষশীলা।
এই তক্ষশীলা থেকে তিনি আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে ডাক্তারী
পাশ করেন।তিনিই চিকিৎসা শাস্ত্রকে এক নতুন
পর্যায়ে উন্নীত করেন।বৃদ্ধ রাজা বিম্বিসার জীবকের
চিকিৎসায় দীর্ঘ জীবন লাভ করেন।
Comments :0