Mitali Express

কবে চালু হবে মিতালী এক্সপ্রেস উঠছে প্রশ্ন

রাজ্য

জয়ন্ত সাহা- চ্যাংরাবান্ধা
অশান্ত বাংলাদেশ ক্রমশ স্বাভাবিক ছন্দে ফিরলেও ইমিগ্রেশন চেকপোষ্ট দিয়ে যাতায়াত স্বাভাবিক ছন্দে ফেরে নি। স্থল বানিজ্যে গতি এলেও ‘‘মিতালী এক্সপ্রেসের’’ ভবিষৎ অনিশ্চিত হয়েই রয়েছে। সপ্তাহে তিন দিন ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে যাতায়াত করত মিতালী এক্সপ্রেস। ঢাকা ক্যান্টমেন্ট থেকে রাতে রওনা দিয়ে পরের দিন সীমান্ত পার করে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে এসে পৌঁছত। আবার ওই দিনই দুপুরে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে রওনা দিয়ে রাতেই ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে পৌঁছে যেত ট্রেনটি। এতে দুই দেশের যাত্রীরাই উপকৃত হতেন। ১৭জুলাই শেষবারের মত মিতালি এক্সপ্রেস বাংলাদেশে গিয়েছিল তবে বাংলাদেশে অশান্তির জেরে আর এই ট্রেন চলে নি। এনজেপি থেকে হলদিবাড়ি ওদিকে বাংলাদেশের চিলাহাটির মানুষের একটাই জিজ্ঞাসা ফের কবে মিতালি এক্সপ্রেসের চাকা গড়াবে?
রেল সূত্রে বলা হয়েছে গত ১৭জুলাই শেষবারের মত মিতালি এক্সপ্রেস বাংলাদেশে গিয়েছিল। তারপরেই বাংলাদেশে অশান্তির জেরে আর এই ট্রেন চলে নি। পরে গত ৫ আগষ্ট ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষ দুই দেশের মধ্যে ট্রেন পরিষেবা স্থগিত করে দেয় আনুষ্ঠানিক ভাবে। মিতালি এক্সপ্রেসের পাশাপাশি বন্ধ হয়ে যায় মৈত্রী ও বন্ধন এক্সপ্রেসের যাতায়াতও।
জানা, গেছে গত ১৭ জুলাই মিতালি এক্সপ্রেস বাংলাদেশে গেলেও সেটিকে এখনও ফিরিয়ে আনা হয় নি। শুধু মাত্র রেলের চালক, গার্ড সহ ওই ট্রেনের সব কর্মীকে তড়িঘড়ি বিমানে ফিরিয়ে আনা হয়েছিল। এনজেপি থেকে জানানো হয়েছে ৪ টি বাতানুকুল এগজিকিউটিভ কামরা, ৪ টি বাতানুকুল চেয়ারকার ছাড়াও ব্রেকভ্যান ও পাওয়ার কার সহ ১০ কামরার মিতালি এক্সপ্রেস নিউ জলপাইগুড়ি থেকে হলদিবাড়ি হয়ে সীমান্তের বাংলাদেশের চিলাহাটি স্টেশনের জিরো পয়েন্টে যায়। সেখান থেকে বাংলাদেশের ইঞ্জিন দিয়ে ট্রেনটিকে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে যাওয়া হয়। গত একমাস ধরে ১০ কামরার মিতালি এক্সপ্রেস ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের কারশেডে রয়েছে। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের কর্তারা বলেছেন ১০ কামরার মিতালি এক্সপ্রেস বাংলাদেশে সুরক্ষিত রয়েছে। তবে ফের কবে এইপথে রেলের চাকা গড়াবে তার ইঙ্গিত মেলে নি।
এদিকে চ্যাংরাবান্ধা সীমান্ত থেকে খবর মিলেছে সড়ক বানিজ্য প্রায় আগের মত অবস্থায় ফিরে এসেছে। প্রতিদিন এই পথে বাংলাদেশে বোল্ডার ও কাঁচালংকা যাচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে আসছে কাপড় বোঝাই লরি। আগের মতই প্রতিদিন প্রায় ৩০০ লরি পন্য নিয়ে যাতায়াত করছে।
চ্যাংরাবান্ধা এক্সপোর্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি মনোজ কানু জানিয়েছেন,‘‘মাঝে বানিজ্য বন্ধ হওয়ায় প্রতিদিন গড়ে ৩ কোটি টাকার ব্যবসার ক্ষতি হয়েছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে অনেকটাই। তবে ইমিগ্রেশন চেকপোষ্ট দিয়ে যাতায়াতের পরিমান কমেছে অস্বাভাবিক ভাবে। চ্যাংরাবান্ধার ইমিগ্রেশন চেকপোষ্ট দিয়ে গড়ে ৫০০-৬০০ জন যাতায়াত করতেন। সংখ্যা ৫০-৬০ এ নেমে এসেছে। মূলত যারা আসছেন তাদের সিংহভাগ চিকিৎসার জন্য আসছেন অথবা ফিরে যাচ্ছেন।
চ্যাংরাবান্ধায় স্থলবানিজ্য স্বাভাবিক হওয়ায় লরি চালক থেকে ট্রাক মালিক, ব্যবসায়ী থেকে শ্রমিকদের মধ্যে স্বস্তি ফিরলেও পাশপোর্ট নিয়ে যাতায়াত করা পর্যটকের সংখ্যা এক লাফে অনেকটা কমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন বৈদেশিক মুদ্রা লেন দেনের সাথে জড়িত ব্যবসায়ী থেকে ট্যাক্সি, ক্যাব চালক ও সাধারণ ব্যবসায়ীরা। ভাটার টান লেগেছে এদের প্রত্যেকের ব্যবসায়। 
হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভ্রমণ ভিসায় ভারতের যাত্রী পারাপার শুরু হয়েছে। এর আগে ৯ দিন ধরে ভ্রমণ ভিসায় এই বন্দর দিয়ে যাতায়াত বন্ধ ছিল। এদিন দুপুরে হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট থানার ওসি শেখ আশরাফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, ক'দিন আগে এই বন্দর দিয়ে তিন থেকে চারশ জন যাতায়াত করতেন এখন তা পঞ্চাশ- ষাটে নেমে এসেছে। এই বিষয়েই আমরা সতর্ক রয়েছি। ধীরে ধীরে সব সচল হয়ে যাবে। সবদিক খতিয়েই ভ্রমণ ভিসায় যাতায়াত শুরু হয়েছে।

Comments :0

Login to leave a comment