ভ্রমণ — মুক্তধারা
কেদারকন্ঠ ট্রেক:এক মেঘবরফের আশিয়ানার গল্প
অভীক চ্যাটার্জী
সেবার সময় খুব অল্প। আমরা এমন এক জায়গা খুঁজছিলাম, যেখানে অল্প সময়ের মধ্যে বেশ ভালো কিছু মুহূর্তের সাক্ষী হতে পারি আমরা। সেই ভাবে খুঁজতে খুঁজতেই পেয়ে গেলাম কেদারকণ্ঠের খোঁজ। আমি এ গল্প সেই সময়ের বলছি, যখনও কেদারকণ্ঠ নতুন ট্রেকারদের আদর্শ যাত্রাপথ হয়ে ওঠেনি।
শুনেছিলাম, পূর্ণিমার রাতে কেদারকণ্ঠের রূপ নাকি অনির্বচনীয়। সেই লোভেই আমরা, অর্থাৎ আমি এবং প্রতীক ঠিক করলাম আমরা পূর্ণিমার রাতেই কেদারকণ্ঠের মাথায় উঠবো। যেমন ভাবা, তেমন কাজ।এক শুক্রবারে তল্পিতল্পা বেঁধে অফিসে ছুটির দরখাস্ত দিয়ে আমি আর প্রতীক নেমে পড়লাম কেদারকন্ঠ অভিযানে।
কেদারকন্ঠ, উচ্চতায় ১২৫০০ ফুট, গাড়োয়াল হিমালয়ের এক নাতিউচ্চ মনোলোভা শৃঙ্গ, যা বছরের পর বছর ধরে পর্যটকদের চিত্তাকর্শন করে এসেছে। পুরাণ বলে, মহাদেব এই শৃঙ্গে প্রথম ধ্যানমগ্ন হতে আসেন এবং মেষপালকদের আওয়াজে বিরক্ত হয়ে চলে যান কেদারনাথে। আঞ্চলিক লোককথা বলে, পঞ্চপাণ্ডব কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে বিজয়ের পর, পাণ্ডবরা যুদ্ধের সময় তাদের আত্মীয়দের হত্যা করার পাপের প্রায়শ্চিত্তের জন্য ভগবান শিবের আশীর্বাদ প্রার্থনা করেন।কিন্তু, ভগবান শিব, তাদের কর্মকাণ্ডের প্রতি তখনও বিরক্ত, তাই তিনি ষাঁড়ে রূপান্তরিত হয়ে হিমালয়ে পালিয়ে যান। পাণ্ডবরা তাকে তাড়া করে, এবং পরবর্তী লড়াইয়ে, ভগবান শিবের দেহ পাঁচটি অংশে বিভক্ত হয়ে যায়, প্রতিটি অংশ আলাদা আলাদা স্থানে পড়ে। গলাটি কেদারকন্ঠের উপর পড়ে।
চলবে
Comments :0