শুভাশিস দেব সরকার: বালি
বামপন্থী কর্মীদের খতম করার কথা বলেছিল তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা। আর এখন ‘আমি চোর নই’ , ‘আমি চুরি করিনি’ প্ল্যাকার্ড বুকে ঝুলিয়ে ঘুরতে হচ্ছে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের। বামপন্থীদের খতম করা যায়নি, বিভাজন রুখে চলবে লড়াই।
হাওড়া জেলা ডিওয়াইএফআই’র সম্মেলনে রবিবার একথা বলেছেন যুব আন্দোলনের প্রাক্তন নেতা মহম্মদ সেলিম। এদিন বালি এসি ময়দানে ডিওয়াইএফআই হাওড়া জেলা ২২তম সম্মেলনের প্রকাশ্য সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সিপিআই(এম)’র রাজ্য সম্পাদক।
সেলিম বলেন, আমাদের রাজ্যে সর্বত্র দুর্নীতি চলছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য সহ সমস্ত বিষয়ের দুর্নীতি সামনে চলে এসেছে। এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীদের উপর হামলা চালাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। বিজেপির মদতে তৃণমূল কংগ্রেসের দুর্নীতি বেড়ে চলেছে।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মহম্মদ সেলিম, সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখার্জী, প্রাক্তন যুবনেতা শংকর মৈত্র, সংগঠনের জেলা সম্পাদক সরোজ দাস। সভাপতিত্ব করেন জেলা সভাপতি সুভাষ দে। সমাবেশের শুরুতে সংগীত পরিবেশন করে ভারতীয় গণনাট্য সংঘের শিবপুর শাখা। সোমবার থেকে বেলুড় শ্রমিক মঙ্গল কেন্দ্রে সংগঠনের ২২ তম সম্মেলন শুরু হবে। মঙ্গলবার পর্যন্ত চলবে সম্মেলন।
মহম্মদ সেলিম বলেন, যুবদের কাজের অধিকারের দাবিতে জন্মলগ্ন থেকেই আন্দোলন করে যাচ্ছে ডিওয়াইএফআই। দেশে বৃহৎ পুঁজিপতিদের মুনাফা বাড়ছে অথচ দেশের শ্রমজীবী মানুষের শ্রমের দাম কমছে। নির্বাচন এলেই বিজেপি মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে দেশের যুবকদের মন জয় করতে চায়। দেশের যুবকদের বিপথে পরিচালিত করতে চায় বিজেপি।
সেলিম বলেন, বিজেপি দেশের গণতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ কাঠামোকে শেষ করতে চাইছে। দেশের সংবিধান, গণতন্ত্র, সার্বভৌমত্ব আজ আক্রান্ত। সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে দেশজুড়ে আন্দোলন করছে বামপন্থীরা।
সেলিম বলেন, বিজেপি সরকারের সময়ে সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের স্বাধীন বিদেশনীতির। বিজেপি ধর্মের ভিত্তিতে, ভাষার ভিত্তিতে মানুষের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করতে চাইছে। মানুষের মধ্যে ঐক্য যাতে প্রতিষ্ঠিত হতে না পারে, দেশের মানুষ যাতে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিবাদ প্রতিরোধে শামিল হতে না পারে, সেই জন্য মানুষের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করতে চায় বিজেপি।
সেলিম বলেন, বিভাজনের রাজনীতি রাজ্যে প্রয়োগ করছে তৃণমূল কংগ্রেসও। এ রাজ্যেও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের উপর আক্রমণ নামিয়ে আনা হয়েছে। বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেস পরিকল্পনা করেই মুর্শিদাবাদে দাঙ্গা হামলা চালিয়েছে। বামপন্থীরা এই ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবি জানালেও হামলার তদন্ত করেনি তৃণমূল কংগ্রেস। সত্য যাতে মানুষের সামনে না আসে সে কারণেই তদন্ত করতে চায়নি তৃণমূল কংগ্রেস সরকার।
মীনাক্ষী মুখার্জী বলেন, প্রতিটি যুবক যুবতীর কাজের দাবিতে আন্দোলন করছে ডিওয়াইএফআই। তিনি বলেন, সমাজের খেটে খাওয়া মানুষ সহ বিভিন্ন অংশের মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদে সামিল হচ্ছে বামপন্থী ছাত্র যুবরা। রাজ্যে বিভিন্ন ধরনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করছে বামপন্থীরা।
তিনি বলেন, বেকার যুবকেরা ভিন্ন রাজ্যে কাজের জন্য চলে যাচ্ছে। রাজ্যে নতুন করে কর্মসংস্থান তৈরি করতে ব্যর্থ তৃণমূল কংগ্রেস। অস্থায়ী কাজের সংখ্যা বাড়ছে। কাজের নিরাপত্তা কমছে রাজ্যে। যুবকদের কাজের অধিকার ছিনিয়ে আনতে লড়াই চলছে।
Comments :0