‘‘সিবিআই এবং ইডি তাদের অপদার্থতা প্রমাণ করেছে। বিজেপি’র দয়ায় রাজ্যে তৃণমূল সরকার টিকে আছে। আমাদের পার্টির নেতা গৌতম দেব যখন দুর্নীতি সামনে এনেছিলেন তাঁকে সমালোচনার মুখে ফেলা হয়েছিল। আজ বেরিয়ে পড়ছে যে লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস সংস্থা দুর্নীতিতে জড়িত। এই সংস্থারই সিইও তৃণমূল সাংসদ এবং মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো অভিষেক ব্যানার্জি।’’
বৃহস্পতিবার সিজিও কমপ্লেক্সের সামনে এ কথা বলেছেন সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী। তিনি বলেছেন, ‘‘এই সংস্থার দুর্নীতিকে সামনে আনায় যারা সেদিন তেড়ে উঠেছিল আজ তারাই দলে দলে জেলে যাচ্ছে। পিসি ভাইপো সহ পরিবারকে তদন্তের মুখোমুখি দাঁড় করাতে হবে। মানুষের লুঠের টাকা ফেরত দিতে হবে।’’
এদিনই রাজ্যে একশো দিনের কাজ এবং আবাসের কেন্দ্রীয় বরাদ্দের দাবিতে রাজভবনের সামনে গিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস আবার বন্যা পরিস্থিতি দেখবেন বলে চলে গিয়েছেন উত্তরবঙ্গে। এই দুই প্রকল্পেই তৃণমূলের দুর্নীতির দায়ে গরিব খেটে খাওয়া জনতার বরাদ্দ আটকে রেখেছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার।
সেই প্রসঙ্গেই চক্রবর্তী বলেন, ‘‘চল্লিশজন নিয়ে কৃষি ভবন যাক আর রাজভবন। আসল গল্প আলিবাবা এবং চল্লিশ চোরের। যত বড় তৃণমূলের নেতা তত বড় চোর। আমাদের লড়াই মানুষের জন্য। যোগ্যরা চাকরি পাননি, রাস্তায় বসে আছেন। আর পিসি ভাইপো সব লুঠ করেছে। শুধু লুঠ নয়, বিরোধী আওয়াজ দমিয়ে দেওয়ার চেষ্টা। কোনও ভোট শান্তিপূর্ণ হয় না। মুখ্যমন্ত্রী বলছে অন্য দল জিতলেও তৃণমূলেই আসতে হবে।’’
চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বিজেপি এবং তৃণমূল দুই শক্তির বিরুদ্ধেই লড়াই করতে হবে। আদালত কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার কাছে দুর্নীতির জবাব চেয়েছে। তারপরেও কোনও তদন্ত হয়নি। আদালত বললেও হেপাজতে নিয়ে তদন্ত হয় না। আর সিপিআই(এম) নেতা সুশান্ত ঘোষকে বিভিন্ন ভাবে হেনস্থা করা হয়েছে তদন্তের নাম করে।’’
তিনি বলেছেন, ‘‘গোটা দেশ জুড়ে অসমতা বাড়ছে। শিক্ষা স্বাস্থ্যে খরচ বেড়েছে। কেন্দ্র তেলা মাথায় তেল দিচ্ছে। ২০২০ ভাইপো বউ ধরা পড়ল সোনা নিয়ে, তৎকালীন অর্থমন্তরী অধুনা প্রয়াত অরুণ জেটলি ফোন করে ছাড়ালো। কাস্টমসের আধিকারিককে বদলি করা হয়েছিল। দিল্লি আর রাজ্যের বোঝাপড়ায় এই লুট মানুষ মেনে নেবেন না।’’
সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পলাশ দাস বলেন, ‘‘তদন্ত যত দীর্ঘ হবে, তত মানুষ সমস্ত কিছু ভুলে যাবেন। কুণাল ঘোষ তখন পুলিশ ভ্যানে দাঁড়িয়ে বলত, সারদার সবথেকে বড় বেনিফিশিয়ারি মমতা ব্যানার্জি।’’ তিনি বলেন, ‘‘লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস সংস্থা কোন পণ্য তৈরি করে কেউ জানে না। তাদের এত অর্থ তা’হলে কোথা থেকে এল? এখন বলা হচ্ছে এটি কনসাল্টেন্সি ফার্ম বা পরামর্শদাতা সংস্থা। কিসের কনসালটেন্সি? চুরি করার? বেকার যুবকদের বেকারত্বের সুযোগ নিয়ে লোক ঠকানোর?’’
দাস বলেন, ‘‘বিজেপি জানে, রাজ্যে ২০-২২ শতাংশ ভোট নিয়ে ৩-৪ টে আসনও এ রাজ্য থেকে পাবেনা। তাই বিজেপি কিছু আসন পাওয়ার জন্য অভিষেক ব্যানার্জির মত দুর্নীতিগ্রস্তদের গ্যাস দিয়ে ফুলিয়ে নেতা বানানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে। সেই বোঝাপড়া থেকেই হিসেব কষে দুর্নীতিগ্রস্তদের বাঁচার সুযোগ করে দিচ্ছে কেন্দ্রীয় সংস্থা ইডি এবং সিবিআই। আদালত সেটা বুঝে গিয়েছে। তাই তদন্তকারী অফিসারকে মামলা থেকে শুধুই নয়, গোটা বাংলা থেকে আউট করে দিয়েছে আদালত।’’
Comments :0