নেতাজীর সঙ্গে সঙ্ঘের মতাদর্শের বিস্তর ফারাক, তারা কখনোই এক হতে পারে না, ফের এমনটাই বললেন নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর কন্যা অনিতা বসু পাফ।
রাষ্ট্রীয় স্বেচ্ছাসেবক সঙ্ঘ (আরএসএস)’র নেতাজীর ১২৬তম জন্মবার্ষিকীতে নানা কর্মসূচির আয়োজন করেছে। কলকাতায় এসেছেন সঙ্ঘের প্রধান মোহন ভাগবত।
অনিতা বসু বলেছেন, কেবলমাত্র রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির জন্যই তাঁর বাবাকে ব্যবহার করছে আরএসএস। আজকে নেতাজী বেঁচে থাকলে আদৌ আরএসএস তাঁকে সম্মান করত কিনা সেই বিষয় যথেষ্ট সন্দিহান তিনি। তিনি বলেন, ‘নেতাজী বেঁচে থাকলে আরএসএস-বিজেপি’র সঙ্গে এক পা-ও হাঁটতেন না। নেতাজী কোনোদিনই ধর্মীয় বিভাজনের পক্ষে ছিলেন না। সব ধর্মের মানুষকে একই চোখে দেখতেন তিনি।
তিনি বলেন, নেতাজী মনে করতেন যে সব ধর্ম, জাতি, বর্ণের মানুষ একসঙ্গে থাকতে পারে। আরএসএস উগ্র হিন্দুত্ববাদী, তাঁরা ধর্মের নামে রাজনীতি করতে অভ্যস্ত। আমার বাবা কখনোই এই ধরনের মতাদর্শকে জায়গা দিতেন না।’
তিনি আরও বলেন, ‘নেতাজীর আদর্শ আসলে কোনো দক্ষিণপন্থী রাজনৈতিক দলের সঙ্গেই যায় না। রাজনৈতিক ভাবধারায় তিনি ছিলেন একজন বামপন্থী মানুষ। লিঙ্গবৈষম্যের বিপক্ষে ছিলেন নেতাজী। তাঁর আজাদ হিন্দ ফৌজ সব ধর্ম, জাতি, শ্রেণি মিলিয়ে সমাজের সব ধরণের মানুষকে একসঙ্গে নিয়েই তৈরি হয়েছিল। ভারতের প্রথম মহিলা বাহিনী তিনি তৈরি করেছিলেন যা ‘ঝাঁসিরানি ব্রিগেড’ বলে পরিচিত।
সোমবার ১২৬ তম জন্মবার্ষিকী সমাপন অনুষ্ঠান হয় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট হলে। জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন কমিটি আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সর্বভারতীয় সভাপতি ডাঃ সৌমিত্র ব্যানার্জি। ছিলেন সর্বভারতীয় সম্পাদক প্রতিভা ভারতী মুখার্জি। সুভাষচন্দ্র বসুর জীবন, সংগ্রাম নিয়ে বক্তব্য রাখেন সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি জে চেলমেশ্বর, প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা শ্যাম বেনেগালও। জার্মানি থেকে অনলাইনে আলোচনায় যোগ দেন অনিতা বসু।
Comments :0