মারাঠা সংরক্ষণের আইন এর আগে খারিজ করেছে আদালত। এবারে পাশ বিলের বয়ান প্রায় এক। আইন আদালতে আদৌ টিকবে কিনা তা নিয়ে সংশয় জানালেন এনসিপি প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রবীণ নেতা শারদ পাওয়ার।
মঙ্গলবারই মহারাষ্ট্র বিধানসভায় পাশ হয়েছে মারাঠা সংরক্ষণের জন্য বিল। ২০১৪’তে রাজ্যে সে সময়ে আসীন কংগ্রেস সরকার ১৬ শতাংশ মারাঠা সংরক্ষণের অর্ডিন্যান্স পাশ করেছিল। বম্বে হাইকোর্টে খারিজ হয়ে যায় সেই অধ্যাদেশ। সে সময়ে মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন পৃথ্বীরাজ চ্যবন।
২০১৮’তে দেবেন্দ্র ফড়নবিশের নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারও ১৬ শতাংশ সংরক্ষণের ঘোষণা করে। ২০২১ সালে সুপ্রিম কোর্ট সেই আইন বাতিল করে দেয়। দু’বারই সুপ্রিম কোর্টের জারি করা সর্বোচ্চ সীমাকে যুক্তি হসেবে দেখানো হয়। সুপ্রিম কোর্ট ৫০ শতাংশের বেশি সংরক্ষণ না করার নির্দেশ দিয়েছিল আগেই।
এদিন পাশ হয় ‘মহারাষ্ট্র রাজ্য সামাজিক এবং শিক্ষাগত বিচারে পিছিয়ে থাকা অংশের বিল’। কংগ্রেস সহ সব বিরোধী দল সমর্থন করেছে বিলে। শারদ পাওয়ারের অনুগামী অংশের এনসিপি বিধায়করাও সমর্থন করেছেন। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে যে সামনে নির্বাচন বলেই রাজ্যে বিজেপি জোট সরকার বিলটি পাশে তৎপর হয়েছে কিনা।
পাওয়ার এদিন যান কোলাপুরে। সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘এবারের বিলের বয়ান একেবারেই আগের বিলগুলির মতো। সেগুলি আদালতে টেকেনি। ফলে আদালতে কী হয় দেখা দরকার।’’
সমর্থন করলেও কংগ্রেস বিধায়ক এবং বিধানসভার বিরোধী দলনেতা বিজয় ওয়াদেত্তিয়ার বলেছেন, ‘‘ভোটের আগে চোখে ধুলো দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। আদালতে বাতিল হয়ে গেলে সরকার বলবে আমাদের দায়িত্ব নেই। তার আগে লোকসভা ভোট মিটে যাবে।’’
বিজেপি সহযোগী রাজ থ্যাকারেও সংশয়ী। তিনি বলেছেন, ‘‘সংরক্ষণ কী কোনও রাজ্য সরকার আদৌ দিতে পারে?’’
মহারাষ্ট্রে এখন রাজ্যস্তরে ৫২ শতাংশ সংরক্ষণ রয়েছে। ১৩ শতাংশ তপসিলি, ৭ শতাংশ আদিবাসী, ১৯ শতাংশ অন্য অনগ্রসর অংশ বা ওবিসি, ২ শতাংশ বিশেষ পিছিয়ে থাকা অংশ, ৩ শতাংশ বিমুক্ত জাতি এবং ৮ শতাংশ যাযাবার তিনটি অংশের।
মহারাষ্ট্রে এবারও মারাঠা সংরক্ষণ নিয়ে আন্দোলন চলছিল। বিভিন্ন সময়ে উত্তেজনাও ছড়িয়েছে। পর্যবেক্ষকদের একটি অংশের মত, সংরক্ষণের দাবিতে আন্দোলনের পিছনে কৃষির সঙ্কট রয়েছে। গুজরাটে পাতিদারদের মতই মারাঠারা কৃষি অর্থনীতিতে প্রভাবশালী থেকেছে। দক্ষিণের একাধিক রাজ্যেও কৃষি নির্ভর বিভিন্ন অংশ সংরক্ষণের দাবি জানিয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের ৫০ শতাংশ সীমা নিয়েও এখন প্রশ্ন উঠছে। বিহারে জাতভিত্তিক মসীক্ষায় দেখা গিয়েছে সামাজিকবিচারে বঞ্চিত অংশ ৮০ শতাংশ ছাড়িয়ে। জাতভিত্তিক সমীক্ষা নতুন করে করার দাবিও জোরালো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সে দাবি আড়াল করতে বলে চলেছেন যে শ্রমিক, কৃষক, মহিলা এবং যুবের বাইরে আর জাত নেই। তবে মহারাষ্ট্রে বিজেপি’র সরকারই সংরক্ষণের বিলটি পাশ করিয়েছে। সুবিধা অনুযায়ী অবস্থান বদলানোর অভিযোগ বাড়ছে বিজেপি’কে ঘিরে।
MARATHA RESRVATION PAWAR
মারাঠা সংরক্ষণ টিকবে তো আদালতে? সংশয়ী পাওয়ার
×
Comments :0