রাজ্যের মোট কলেজের আসন সংখ্যা ৯.৫ লক্ষ। তার মধ্যে ভর্তি হয়েছে মাত্র ৩.৫ লক্ষ। বৃহস্পতিবার এমনই দাবি করা হলো এসএফআইয়ের পক্ষ থেকে। এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক দেবাঞ্জন দে বলেন, ‘‘এসএফআই এই সামাজিক সঙ্কটকে চিহ্নিত করে এসেছে, বলেছে সরকার সরকারি শিক্ষা ব্যবস্থা এবং লেখা পড়ার গুরুত্বকে শেষ করে দিচ্ছে তৃণমূল সরকার। তার প্রমাণ এই বছরের কলেজের ভর্তি প্রক্রিয়া। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার একমাস পর ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কলেজে কলেজে আসন খালি। মাত্র ৩.৫ লক্ষ ছেলে মেয়ে ফর্ম ফিলাপ করেছে।’’
গত বছরও রাজ্যের একাধিক কলেজে আসন খালি থেকেছে। সেই প্রসঙ্গ টেনে এসএফআই রাজ্য সম্পাদক বলেন, ‘‘গত বছর প্রায় চার লক্ষ আসন খালি ছিল। সরকারি উচ্চশিক্ষা কেন্দ্রকে প্রায় তুলে দেওয়া হচ্ছে। বেসরকারি কলেজে গুলোকে সুবিধা করে দেওয়া হচ্ছে। বাধ্য করা হচ্ছে সেখানে ভর্তি হওয়ার জন্য। যার টাকা আছে তারা সেখানে যাচ্ছে। কিন্তু যাদের পক্ষে এই বিপুল টাকা খরচ করা সম্ভব হচ্ছে না তারা পরিযায়ী হচ্ছেন। অনেকে লেখা পড়া ছেড়ে দিচ্ছে। ড্রপ আউট বাড়ছে প্রতি বছর। রাজ্য সরকার এই নিয়ে কোন ভূমিকা পালন করছে না। বামপন্থী ছাত্র সংগঠন গুলো এই নিয়ে কথা বলতে গেলে কোন কথা বলা হয়নি।’’
গত বছর থেকে কলেজে ভর্তি প্রক্রিয়া জন্য কেন্দ্রীয় পোর্টাল চালু করেছে রাজ্য সরকার। এই পোর্টালের মাধ্যমে হচ্ছে ভর্তি প্রক্রিয়া। চলতি বছরও একই পদ্ধতি মানা হয়েছে। এই বছর দেখা গিয়েছে উচ্চ-মাধ্যমিকের ফল প্রকাশের প্রায় একমাস পর চালু করা হয় পোর্টাল। সেখানে প্রথম দফায় যারা পছন্দ মতো কলেজে ভর্তির সুযোগ পায়নি তাদের অপেক্ষা করতে হয়েছে দীর্ঘ সময়। আর এই অপেক্ষায় না থেকে অনেকে বাধ্য হয়েছেন বেসরকারি কলেজে বা কোন প্রতিষ্ঠানে বেশি টাকা দিয়ে ভর্তি হওয়ার জন্য।
এক অভিভাবকের কথায়, তার মেয়ে প্রথমে পছন্দ মতো বিষয় নিয়ে চারটি কলেজে আবেদন জানায়। কিন্তু একটি কলেজেও তার নাম ওঠেনি। স্বাভাবিক ভাবে অপেক্ষা না করে মেয়েকে তিনি বেশি টাকা দিয়ে বেসরকারি সংস্থায় ভর্তি করাতে বাধ্য হয়েছেন।
দেবাঞ্জন বলেন, ‘‘আরএসএসের এনইপির মডেল এই রাজ্য প্রয়োগ করতে চাইছে তৃণমূল। আমাদের রাজ্যের কলেজ গুলোয় লেখা পড়ার কোন পরিবেশ নেই। সরকারের মদতে কলেজ গুলোয় গুন্ডাদে দাপাদাপি চলছে। বাবা মায়েরা ভয় পাচ্ছে ছেলে মেয়েদের পাঠাতে। এই সরকারের আমলে দেখা গিয়েছে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্ন বিভাগ তুলে দিতে বাধ্য হয়েছে পড়ুয়া না থাকায়। শিক্ষক নিয়োগও করা হচ্ছে না।’’
জয়েন্টের ফলাফল প্রকাশ নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘জয়েন্টের ফলাফল এখনও প্রকাশ হলো না, সেখানেও একই প্রভাব ফেলবে। সরকারি তথ্য বলছে ছয় লক্ষ আসন খালি রয়েছে কলেজ গুলোয়। সরকারকে এই মুহুর্তে ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়া উচিত ড্রপ আউট আটকানোর জন্য। সরকারি মনোভাব যদি ইতিবাচক না হয় তবে রাজ্যের গোটা প্রজন্ম শেষ হয়ে যাবে।’’
SFI College Admission
রাজ্যের কলেজ গুলোয় বিপুল সংখ্যায় আসন ফাঁকা, ড্রপ আউট বাড়বে, আশঙ্কা এসএফআইয়ের

×
Comments :0