বিজেপি শাসনের পাঁচ বছরে আইনের শাসন ভেঙে দেওয়া হয়েছে ত্রিপুরায়। গণতন্ত্র, গণতান্ত্রিক অধিকার হনন হয়েছে প্রতিদিন। কায়েম হয়েছে গুণ্ডারাজ। এই ভোটে প্রধান প্রশ্ন ত্রিপুরায় আইনের শাসন ফেরানো। সংবিধান অনুযায়ী ত্রিপুরা চলবে কিনা। তার জন্য হারাতেই হবে বিজেপি’কে।
রবিবার ত্রিপুরার খয়েরপুরের জনসভায় এই মর্মে আহ্বান জানিয়েছেন সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো সদস্য প্রকাশ কারাত। তাঁর আহ্বান, ‘‘নির্বাচনের মুখে বিজেপি ভোটদানে বাধা তৈরি করার চেষ্টা করতে পারে। সতর্ক থেকে এই চক্রান্ত রুখতে হবে।’’ সিপিআই(এম) নেতা পবিত্র করের সমর্থনে হয়েছে এই সমাবেশ।
ত্রিপুরায় পড়ে রয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বিজেপি নেতা অমিত শাহ। নিয়মিত আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁদের প্রচার খণ্ডন করেছেন কারাত। তিনি বলেছেন, ‘‘ডবল ইঞ্জিনের নাম ডবল শোষণ চলছে। রাজ্যে মানুষের ওপর হামলা, সাম্প্রদায়িক মেরুকরণ কেন্দ্রের হিন্দুত্বের নীতির জন্য। সেই সঙ্গে চলছে আর্থিক হামলা, জীবন-জীবিকার ওপর।’’
কারাত বলেছেন, ‘‘আইনের শাসন, গণতন্ত্র ফেরাতে চায় বলেই কংগ্রেসের সঙ্গে প্রথমবার আসন বোঝাপড়া করেছে বামফ্রন্ট। দুই শক্তিই মনে করছে ফেরাতে হবে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার। যেই দুই শক্তিকে রাজ্যের মানুষ একে অপরের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে দেখেছেন ত্রিপুরাবাসী। সমঝোতা রাজ্যের জন্য।’’
সমঝোতার ভিত্তি ব্যাখ্যা কারাতের সংযোজন, ‘‘বামফ্রন্ট সরকার ত্রিপুরায় নতুন পেনশন প্রকল্প চালু করতে দেয়নি। পশ্চিমবঙ্গ বা কেরালাতেও করেনি বামফ্রন্ট সরকার। ২০১৮’তে জিতে নতুন পেনশন প্রকল্প চালু করে। আজ সারা দেশে এই প্রকল্পের প্রতিবাদ হয়েছে। কংগ্রেস এবং বামফ্রন্ট জয়ী হলে পুরানো পেনশন প্রকল্প ফেরানো হবে।’’
মঞ্চে ছিলেন জাতীয় কংগ্রেসের দুই নেতা মুকুল ওয়াসনিক এবং অজয় কুমারও।
পাঁচ বছর আগে বিজেপি’র গুচ্ছ গুচ্ছ প্রতিশ্রুতির বৃত্তান্ত মনে করিয়েছেন কারাত। সেই সঙ্গে বলেছেন, ‘‘একশো দিনের কাজে দেশে নজির গড়েছিল বামফ্রন্ট সরকার। বছরে ৯২ দিন কাজ হয়েছে গড়ে। এখন বিজেপি তা অর্ধেকের কম দিনে নামিয়ে এনেছে। মহিলাদের অধিকারে নজির ছিল ত্রিপুরা। সেই ত্রিপুরা এখন নারী নির্যাতনে দেশের দৃষ্টান্ত। ২০২০ থেকে গত ডিসেম্বর পর্যন্ত নথিভুক্তই হয়েছে ৪৬০টি ধর্ষণের ঘটনা ছোট্ট এ রাজ্যে।’’
কারাত জনসভায় মনে করিয়েছেন যে সারা দেশের বহু মানুষ সাগ্রহে তাকিয়ে আছে ত্রিপুরাবাসীর দিকে। তিনি বলেছেন, ‘‘সারা দেশে বাম গণতান্ত্রিক শক্তি লড়াই করছে। স্বৈরাচার, হিন্দুত্ব সাম্প্রদায়িক রাজনীতি, মানুষের জীবিকার ওপর জোরালো আক্রমণের বিরুদ্ধে চলছে লড়াই। ত্রিপুরায় বিজেপি’র পরাজয় সারা দেশের সংগ্রামকে উজ্জীবিত করতে পারবে।’’
সতর্কতা বজায় রাখতে তিনি বলেন, ‘‘ত্রিপুরার মানুষের ভোটদানের অধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। বাইকবাহিনী, টাকা বিলানোর তথ্য আমাদের কাছে আসছে। ভোটের তিন দিন আগে চক্রান্ত জোরালো হবে। সতর্ক থেকে এই চক্রান্ত রুখতে হবে।’’
Comments :0