Julian Assange

অ্যাসাঞ্জের মুক্তিকে স্বাগত জানিয়েও উদ্বেগ সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায়

আন্তর্জাতিক

ব্যাঙ্ককে নামার মুখে বিমানে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জে।

ব্রিটেনের জেল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জেকে। ব্রিটেনের জেল থেকে ছাড়া পেয়ে তাঁর প্রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপ সাইপানের দিকে রওনা হয়েছেন অ্যাসাঞ্জে। সম্ভবত, ভারতীয় সময়ে, মঙ্গলবার রাতেই সেখানে আদালতে হাজিরা দেবেন তিনি। তারপর রওনা হবেন নিজের দেশ অস্ট্রেলিয়ায়।  
উইকিলিকস ওয়েবসাইটে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গোপন বিভিন্ন নথি ফাঁস করে দিয়েছিলেন অ্যাসাঞ্জে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা নথি বেরিয়ে যাওয়ায় ইরান এবং আফগানিস্তানে সামরিক কারাগারে মানবাধিকার লঙ্ঘন, জঘন্য অত্যাচারের মতো অভিযোগের প্রমাণ মিলেছিল হাতেনাতে। তোলপাড় হয়েছিল সারা বিশ্ব। আর আমেরিকা সব শক্তি দিয়ে নেমেছিল অ্যাসাঞ্জেকে নিজেদের হাতে নিয়ে কড়া শাস্তির মুখে ফেলতে।    
অ্যাসাঞ্জের মুক্তির দাবি বিশ্বের বহু অংশ দীর্ঘদিন ধরেই সরব। ঠিক হয়েছে গোপন নথি ফাঁসের জন্য দোষ স্বীকার করে নেবেন তিনি। এই শর্তে রাজি হয়েছেন অ্যাসাঞ্জে। 
ব্রিটেনের বেলমার্শ জেল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে অ্যাসাঞ্জেকে। মার্কিন প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সাইপানের আদালতে হাজিরা দেবেন অ্যাসাঞ্জে। সেখানে তাঁর ৬২ মাসের সাজা ঘোষণা হওয়ার কথা। এই মেয়াদ তিনি জেলে কাটিয়ে দিয়েছেন এর মধ্যেই। 
উইকিলিকস জানিয়েছে অ্যাসাঞ্জে এরপর ফিরবেন অস্ট্রেলিয়ায়। 
অ্যসাঞ্জের মুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছে সিপিআই(এম)। সোশাল মিডিয়ায় পোস্টে সিপিআই(এম) বলেছে, নৃশংস যুদ্ধ অপরাধ ফাঁস করে দিয়েছিলেন অ্যাসাঞ্জে। তার জন্য অন্যায়ভাবে তাঁকে কারাবন্দি থাকতে হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার সহযোগীদের মানবতা বিরোধী অপরাধ দুনিয়ার সামনে তুলে ধরছেন অ্যাসাঞ্জে। 
ব্রাজিলের রাষ্ট্রপতি লুলা ডা সিলভা বলেছেন, ‘‘আজ এই বিশ্ব অন্তত কিছুটা বেশি ভালো, কিছুটা কম ন্যায়হীন। ১৯০১ দিন কারাবন্দি থাকার পর মুক্তি পাচ্ছেন জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জে। তাঁর মুক্তি গণতন্ত্র এবং সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার পক্ষে লড়াইয়ের জয়। 
ব্রিটেনের ‘গার্ডিয়ান’ পত্রিকার প্রাক্তন সম্পাদক অ্যালান রুসব্রিজার বলেছেন, ‘‘চরবৃত্তির অভিযোগ তারর বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছে। সেই দায় মেনেই দোষ স্বীকার করতে হচ্ছে তাঁকে। তার জন্য আমি অন্তত দুঃখিত। আমরা কেউ মনে করি না যে তিনি চরবৃত্তি চালিয়েছেন। তিনি দুনিয়ার সংবাদমাধ্যমের সামনতে সত্যকে হাজির করেছেন। বিপদের হলো, এই ঘটনা জাতীয় সুরক্ষার নামে অন্যায়কে ফাঁস করার যে কোনও প্রয়াস আটকে দিতে সাহায্য করবে। এই কৌশল অনেকটা কাজ করছে।’’
সাংবাদিকদের আন্তর্জাতিক মঞ্চ ‘কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিস্টস’-র সিইও জোডি গিনসবার্গ বলেছেন, ‘‘ অ্যাসাঞ্জের বিচারপ্রক্রিয়া সলবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর গভীর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। অ্যাসাঞ্জের মুক্তিকে স্বাগত জানাচ্ছি। কিন্তু আমেরিকা যেভাবে তাঁকে হাতে পাওয়ার জন্য মরিয়া অভিযান চালিয়েছে এবং কারাবন্দি করেছে বহু সাংবাদিকের কাজের ওপর তার প্রভাব পড়বে এবং পড়ছে। চরবৃত্তি রোধ আইনে সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার করা চলতে থাকলে তা বিপজ্জনক।’’

Comments :0

Login to leave a comment