SFI

মহিলাদের সঙ্গে অসভ্য আচরণ করে এখন তাদেই সমন পাঠাচ্ছে পুলিশ : এসএফআই

রাজ্য

মহিলা পুলিশ ছাড়াই ধর্মঘটের দিন মহিলা এসএফআই কর্মীদের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে পুলিশ। সাংবাদিক সম্মেলন থেকে ভিডিও দেখিয়ে দাবি করলো এসএফআই নেতৃত্ব। এদিন এসএফআই, ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য দপ্তর দীনেশ মজুমদার ভবনে সাংবাদিক সম্মেলনে এসএফআই রাজ্য সম্পাদক দেবাঞ্জন দে বলেন, ‘‘গতকালের ধর্মঘট গোটা দেশ ব্যাপী হয়েছে, খেটে খাওয়া মানুষ অংশ নিয়েছে। তার মধ্যে দাঁড়িয়ে আমাদের রাজ্যে বিজেপির বিরুদ্ধে ডাকা ধর্মঘট ভাঙার জন্য ব্যস্ত তৃণমূলের পুলিশ। যেই প্রশাসন ক্যাম্পাসের ভিতর দোষীদের শাস্তি দিতে পারে না। তাদের গুন্ডামিকে মদত দেয়। তৃণমূলের গুন্ডাদের কাছে নিজেদের পরিবারের লোকদের ইজ্জত বন্ধক রেখেছে তারা কাল সক্রিয় ছিল। মহিলা পুলিশ নেই, পুরুষ পুলিশ আক্রমণ করছে ছাত্রীদের ওপর। দক্ষিণ দিনাজপুরের পুলিশ বয়স্ক মানুষকে চর মারছে। তৃণমূলের হয়ে নেমেছিল ধর্মঘট ভাঙতে।’’
এসএফআই নেতৃত্ব দাবি করেন দক্ষিণ দিনাজপুরের ঘটনা ঢাকার জন্য কলেজ স্ট্রিটের ঘটনাকে সমানে আনা হচ্ছে। দেবাঞ্জন বলেন, ‘‘গতকাল পুলিশের ভূমিকা ছিল তৃণমূলের গুন্ডাদের মত। কলেজ স্ট্রিটের যখন পথ অবরোধ চলছে। তখন পুলিশ আক্রমণ করে। মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। একটা চিত্র নাট্য তৈরি করা হচ্ছে। তৃণমূলের একাংশ চিত্র নাট্য তৈরি করছে। বর্ণনা মুখার্জি সহ সেখানে থাকা বাকি ছাত্রীদের সাথে অসভ্য আচরণ করা হয়েছে। মহিলাদের পুলিশ লাথি মেরেছে মাটিতে ফেলে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নোতার পোস্ট করা ভিডিওকে ব্যাবহার করা হচ্ছে।’’
এসএফআইয়ের পক্ষ থেকে একটি ভিডিও দেখানো হয় যেখানে দেখা যাচ্ছে পুলিশের আচরণের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছেন আন্দোলনকারি ছাত্রীরা। এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক বলেন, ‘‘যার নামে অভিযোগ তার সাথেই অসভ্য আচরণ। পুরুষ পুলিশ কর্মীরা কি একজন মহিলাকে গ্রেপ্তার করতে পারে? ১৫-২০ মিনিট ধরে এই কাজ হয়েছে প্রকাশ্য রাস্তায়। যেই পুলিশ ছাত্র খুন করে তারা কি তৃণমূলের নির্দেশে আরও কোন অপরাধ সংগঠিত করতে গিয়েছিল গতকাল?’’
উল্লেখ্য গতকালের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এসএফআই রাজ্য সম্পাদক দেবাঞ্জন দে, কলকাতা জেলার সভাপতি বর্ণনা মুখার্জি সহ ১০ জনের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। ২৪ ঘন্টার মধ্যে তাদের হাজিরা দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে প্রশ্ন করা হলে দেবাঞ্জন বলেন, ‘‘যারা পেটালো তারাই আবার দেখা করতে বলছে। থানায় কি মহিলা পুলিশ আছে? থাকলে তাদের কেন আনা হলো না? এর জবাব দিতে হবে। আইন ভাবে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’’
এদিন এসএফআই নেতৃত্বের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের পরেও যেই যেই কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় গুলোয় ছাত্র সংসদের ঘর বন্ধ করা হয়নি সেখানে সেই সেই প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়াদের সাথে নিয়ে সেই ঘর গুলোয় তালা ঝোলাবে এসএফআই। ছাত্র নেতৃত্বের পক্ষ থেকে দাবি করা হয় অবিলম্বে ছাত্র সংসদ নির্বাচন সংগঠিত করার। 
বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্নপত্রে ক্ষুদিরাম বসু সহ স্বশস্ত্র বিপ্লবীদের সন্ত্রাসবাদী হিসাবে এই নিয়ে প্রশ্ন করা হলে এসএফআই রাজ্য সম্পাদক বলেন, ‘‘এই ঘটনা একাধিকবার হয়েছে। তৃণমূল সরকারের সময় পাঠ্য বইতে ক্ষুদিরামকে সন্ত্রাসবাদী বলা হয়েছে। বিজেপির ব্যাবহৃত ছবি ব্যাবহার করে স্বশস্ত্র সংগ্রামের ধারাকে ছোট করা হয়েছে। বিপ্লবীদের সন্ত্রাসবাদী বলা হয়েছে। যেই সরকার ক্ষুদিরাম, সূর্য সেন দের সরিয়ে দিয়ে সিঙ্গুর আন্দোলনকে পাঠ্যক্রমে ঢোকায় সেই রাজ্যে এটাই তো স্বাভাবিক। আমাদের কর্মীরা এখন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের ঘর ঘিরে বসে আছে। এর উত্তর চাই।’’

Comments :0

Login to leave a comment