শিক্ষকদের বিএলও’র কাজ করার কথাই নয়। তার ওপর ডেটা এন্ট্রির কাজ চাপানো হচ্ছে। এটা নির্বাচন কমিশনের অপদার্থতা। বিএলও-দের বিক্ষোভ এবং দাবিকে সমর্থন করে একথা বলেছেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম।
রবিবার মেদিনীপুরে সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নে সেলিম শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে বলেন, আমরা চাই দ্রুত নিয়োগ করে যোগ্যদের শিক্ষকতা করতে পারেন তা নিশ্চিত করা। তাহলে শিক্ষা বেঁচে যায়। না হলে স্কুলগুলো উঠে যাচ্ছে।
এদিন মেদিনীপুরে প্রয়াত সিপিআই(এম) নেতা দীপক সরকারের স্মরণসভায় বক্তব্য রাখেন সেলিম। বক্তব্য রেখেছেন সিপিআই(এম)’র প্রবীণ নেতা বিমান বসু এবং সূর্য মিশ্রও।
রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বিএলও-রা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। সে প্রসঙ্গে এক প্রশ্নে সেলিম বলেন, সিইও থেকে ইএআরও, তারও ওপর থেকে নির্বাচন কমিশন নানারকম নির্দেশ দিচ্ছে। বুঝতে হবে যাঁরা বিএলও হয়েছেন তারা এই কাজ করেন না। সরকারের লোক নেই। কেন্দ্র-রাজ্যে বহু পদ ফাঁকা। শিক্ষকদের দিয়ে একাজ করানো হচ্ছে। স্কুল শিক্ষা লাটে উঠে যাচ্ছে। এদেরকে দিয়ে এখন ডেটা এন্ট্রি অপারেটরের কাজ করানো হচ্ছে। এটা তো আরো অপদার্থতা। কারণ তাঁদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ফর্ম বিলি ফর্ম ভরা বোঝানো, এবং ফর্ম জমা নেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখন মোবাইলে ডেটা এন্ট্রি করতে বলা হচ্ছে।
তিনি বলেন, বিএলও'রা নিজেরা একটা চাপে আছেন। তৃণমূলী গুন্ডাদের ভয় দেখানো আছে। তার ওপর প্রতিদিন একটি করে নতুন নির্দেশ আসছে। যার অর্থ, নির্বাচন কমিশন প্রস্তুতি না নিয়ে মাঠে নেমেছে।
তিনি বলেন, বিএলও-দের কিছুতেই একে মেনে নেওয়া উচিত নয়। তাঁদের নিরাপত্তা বিধানের ব্যবস্থা করতে হবে, তাদের সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। এটা নির্বাচন কমিশনের দায়।
তিনি মনে করিয়ে দেন, শ্রমিক, কর্মচারী, শিক্ষকদের যৌথ মঞ্চ ‘১২ই জুলাই কমিটি’ নির্বাচন কমিশনে গিয়ে এসআইআর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গোটা বিহারে শুরু করা হয় যার আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করা। গণতন্ত্রের সংকোচন করা। বামপন্থীরা গণতন্ত্রের সম্প্রসারণ করেছে। আর দক্ষিণপন্থীরা গণতন্ত্রের সংকোচন করতে চায়।
শিক্ষক নিয়োগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন,
স্কুল সার্ভিস কমিশন যাদের নিয়ে বা সরকারের মুখ্যমন্ত্রী থেকে শিক্ষামন্ত্রী, তৃণমূলের সরকার শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির দাগ মুছতে পারবে না। শিক্ষা নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা চাই দ্রুত সুস্থ নিয়োগ করে যারা যোগ্য আছেন তাঁরা যাতে শিক্ষকতা করতে পারেন সেই ব্যবস্থা করা। তাহলে শিক্ষা বেঁচে যায়। না হলে স্কুলগুলো উঠে যাচ্ছে।
জেলের বাইরে থেকে, ভিতর থেকে, পাশাপাশি আবার যারা জেলে যাবে তারা সবাই একটা নেটওয়ার্ক'র মতো যোগাযোগ চলছে। বারবার বলছি মমতা, অভিষেকের নেতৃত্বে তৃণমূল কংগ্রেস দুর্নীতিতন্ত্র তৈরি করেছে। সেখানে সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মীদের যোগ করে দিয়েছে। তার ফলে শিক্ষার কাঠামোর সাথে যুক্ত যারা তাদের একটা নেটওয়ার্ক তৈরি হয়েছে। আগে যেমন চিটফান্ডের দালাল ছিল, এজেন্ট ছিল, তেমন চাকরি বিক্রির নেটওয়ার্ক তৈরি করেছে।
সেলিম বলেন, কেন্দ্রের ইডি, সিবিআই অপদার্থ। আদালত বলার পরেও তারা সঠিকভাবে তদন্ত না করে একবার জেলে নিচ্ছে আবার বার করছে। ছয় মাস এক বছর পর আবার দুর্নীতির কথা মনে পড়ছে হঠাৎ। মমতা এই দুর্নীতি শিখেছে আরএসএস'র কাছ থেকে। বিজেপি’র সরকার মধ্য প্রদেশে ব্যাপক প্রতারণা করেছিল। মমতা আরএসএস 'র সঙ্গে ছিলেন। সেখান থেকেই ট্রেনিং নিয়ে এসেছেন। কিভাবে কাঁচামাল ব্যবহার করতে হয়, কিভাবে খনিজ, বালি, কয়লা পাচার করতে হয়, তার সঙ্গে পাচার চক্রকে কিভাবে ব্যবহার করতে হয় এবং চাকরি বিক্রি করতে হয়- এই সবই আরএসএস'র পাঠশালায় তিনি শিখেছেন।
BLO Md Salim
দায়ী কমিশনের অপদার্থতা, বিএলও-দের দাবির সমর্থনে বললেন সেলিম
রবিবার মেদিনীপুরে দীপক সরকারের স্মরণসভায় বলছেন মহম্মদ সেলিম। রয়েছেন বিমান বসু, সূর্য মিশ্র সহ নেতৃবৃন্দ।
×
Comments :0