সাংবাদিকরা প্রতিবেদন তৈরি করেছেন, কোনও অপরাধ সংঘটিত করতে যাননি মণিপুরে। সোমবার এডিটরস গিল্ডের সদস্যদের বিরুদ্ধে দায়ের এফআইআর সংক্রান্ত মামলায় এই মন্তব্য করেছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। এডিটরস গিল্ডের প্রতিবেদনে রাজ্যের বিজেপি সরকারকে সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেইদের মদত দেওয়ার অভিযোগ তোলা হয়। এরপর তাঁদের বিরুদ্ধে দায়ের হয় এফআইআর।
মণিপুরে মেইতেই-কুকি হিংসা প্রসঙ্গে এডিটরস গিল্ড অফ ইন্ডিয়া (ইজিআই)’র চার সদস্য ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং রিপোর্ট’ প্রকাশ করে। তাঁদের বিরুদ্ধে দায়ের ওই এফআইআর-কে চ্যালেঞ্জ করে পিটিশন দাখিল করেন সুপ্রিম কোর্টে। প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জে বি পারদিওয়অলা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চে শুনানি চলছে।
আদালত আরও বলেছে যে এফআইআর বাতিল করা হচ্ছে না। তবে মামলা দিল্লি হাইকোর্টে স্থানান্তর করা উচিত না মণিপুর হাইকোর্টে শুনানি চালানো উচিত তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করছে।
শুনানির সময় প্রধান বিচারপতি মণিপুর পুলিশের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘‘সবচেয়ে বড় কথা হলো বিষয়টি একটি সংবাদ প্রতিবেদন। এই সাংবাদিকরা সেই প্রতিবেদন তৈরি করেছেন। এখানে তাঁরা তাঁদের মতামত জানিয়েছেন। এমন নয় যে তাঁরা কোনও অপরাধ করেছেন। তারা একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন কেবল। বিষয়টিকে এভাবে দেখা উচিত।’’
উল্লেখ্য যে গত সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্ট এফআইআরগুলির ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রে আবেদনকারী সাংবাদিকদের অন্তর্বর্তী সুরক্ষার আবেদন মঞ্জুর করেছিল। বরিষ্ঠ আইনজীবী কপিল সিবাল সাংবাদিকদের পক্ষে সওয়ালে বলেন যে এডিটর্স গিল্ড নিজে থেকে মণিপুরে গিয়ে রিপোর্ট তৈরি করেনি। সেনাবাহিনী এটি করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছিল। প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন করেন যে কেন সেনা এডিটরস গিল্ডকে রিপোর্ট দেওয়ার অনুরোধ জানাবে। সিবাল বলেন, সেনা জানিয়েছিল যে তারা মণিপুরের পরিস্থিতি বাস্তবে ঠিক কী তার বস্তুনিষ্ঠ মূল্যায়ন চেয়েছিল।
৪ সেপ্টেম্বর মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং বলেছিলেন যে এডিটরস গিল্ড অফ ইন্ডিয়ার সভাপতি এবং তিন সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগের ভিত্তিতে একটি পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এই সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ‘বিদ্বেষ উসকে দেওয়ার’ অভিযোগ করেন। মানহানির আরেকটি অভিযোগে গিল্ডের এই চার সদস্য সাংবাদিকের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় এফআইআর-ও নথিভুক্ত করা হয়েছিল।
এডিটরস গিল্ড, ২ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে, রাজ্যে ইন্টারনেট নিষেধাজ্ঞাকে মিডিয়অ রিপোর্টেজের জন্য ক্ষতিকর বলে নিন্দা করে, কিছু মিডিয়া আউটলেটের একতরফা রিপোর্টিংয়ের সমালোচনা করে এবং দাবি করে যে এমন ইঙ্গিত রয়েছে যে রাজ্য নেতৃত্ব ‘‘ সংঘাতের সময় পক্ষপাতদুষ্ট’’ ছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘‘এরা রাষ্ট্রবিরোধী, দেশবিরোধী এবং প্রতিষ্ঠা বিরোধী (মানুষ) যারা বিষ ঢালতে এসেছিল। আগে জানলে আমি তাদের ঢুকতে দিতাম না’’।
Comments :0