পয়লা বৈশাখ বাংলা দিবস পালিত হবে। রাজ্য সঙ্গীত হবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘বাংলার মাটি, বাংলার জল’। বৃহস্পতিবার বিধানসভায় এই প্রস্তাব রাখা হয় রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে। বিধানসভায় সেই প্রস্তাব পাশও হয়েছে। গানটি বিধানসভায় গাওয়াও হয়েছে।
এক ঘন্টা চলে আলোচনা। বিরোধীদের জন্য বরাদ্দ ছিল ৩০ মিনিটি। মোট চারজন বিরোধী বিধায়ক বক্তব্য রাখেন এই প্রস্তাবের ওপর। বিজেপির তিনজন। যাদের মধ্যে ছিলেন শুভেন্দু অধিকারি। আইএসএফের নওশাদ সিদ্দিকি। আর এই বক্তব্য রাখার সময় নওসাদ যতটা নিশানা করলো সরকারকে, শুভেন্দু ততটাই স্মৃতি চারনা করলেন।
নওসাদ তার বক্তব্য রাখার সময় বলেন, ‘’১৬ অক্টোবর বঙ্গ ভঙ্গের দিনটিকে বাংলা দিবস হিসাবে পালন করার জন্য।’’ এখানেই থেমে না থেকে নওশাদ বলেন, ‘‘বাংলা দিবস করার সময় কি এটা? রাজ্যের ৮ হাজারের বেশি স্কুল বন্ধ হতে চলেছে। স্কুলের ছেলে মেয়েরা পুষ্টি ঠিক ভাবে পাচ্ছে না। বাংলা দিবস করলে কি এই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে?’’
মুখ্যমন্ত্রী তার বক্তব্য রাখার সময় নওশাদের প্রশ্নের কোন সঠিক উত্তর দিতে পারলেন না। উল্টে তিনি বিধানসভায় দাঁড়িয়ে বলেন, ‘‘কে বলেছে স্কুল বন্ধ? মিথ্যা কথা বলা হচ্ছে।’’ স্কুল বন্ধ হয়নি ঠিক। হাই কোর্টের একটি মামলায় রাজ্যের পক্ষ থেকে যেই তালিকা আদালতের কাছে জমা দেয় তাতে ৮,৪০৭টি স্কুলে নাম রয়েছে যেখানে ছাত্রের সংখ্যা কম। আর সেই গুলোকে বন্ধ করে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। মিড-ডে-মিল সংক্রান্ত বিষয়টি পুরোপুরি এড়িয়ে যান মুখ্যমন্ত্রী।
মমতা ব্যানার্জির মন্ত্রিসভার প্রাক্তন পরিবহন মন্ত্রী বর্তমান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারি নিজের বক্তব্য রাখার সমব বলেন, ‘’২০ জুন পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালন করা হোক। তার কারণ ওই দিন ১৯৪৭ সালে বাংলাকে ভারতের অঙ্গরাজ্য হিসাবে যুক্ত করা হয়।’’ ব্যাস এই টুকুই। রাজ্যের আনা বিল নিয়ে শুভেন্দুর বক্তব্য এই। অবশ্য তিনি কার্যত হুমকির মেজাজে বলেন, ‘‘রাজ্যপালকে বারন করবো এই বিলে সই করতে।’’
শুভেন্দু এদিন প্রায় দশ মিনিট বক্তব্য রাখেন তার মধ্যে অধিকাংশ সময় তিনি স্মৃতিচারনা করেন তৃণমূলে থাকাকালিন কোন নেতা তার সাথে ঘুরতো, কে তার বাড়ির নিচে বসে থাকতো এই সব। বিরোধী দলনেতার মুখে কখনও শোনা গেলো না রাজ্যের মানুষের সমস্যার কথা।
এদিন শুভেন্দু অধিকারি বলেন, ‘‘এতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ওপর আলোচনা, তার জন্য মাত্র এক ঘন্টা বরাদ্দ!’’ অধ্যক্ষ বিমান বন্ধ্যোপাধ্যায় তার উত্তরে বলেন, ‘‘আপনারা তো বৈঠকে আসেন না, বললে সময় বাড়িয়ে দিতাম।’’ বিরোধী দলনেতা বলেন, ‘‘অশোক লাহিড়ীকে বাদ দিয়ে নিজের পছন্দের লোককে পিএসসি চেয়ারম্যান করেছেন কেন যাবো?’’ অধ্যক্ষ বলেন, ‘‘আপনার দলের লোকই তো চেয়ারম্যান।’’
পিএসসি চেয়ারম্যান মুকুল রায়। যিনি বিজেপির টিকিটে কৃষ্ণনগর উত্তর কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েই তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। কিন্তু দলত্যাগ বিরোধী আইন এই ক্ষেত্রে কার্যকর হয়নি। বিধানসভার খাতায় মুকুল এখনও বিজেপি বিধায়ক।
Comments :0